এপ্রন শব্দটা ফ্রেঞ্চ শব্দ ন্যাপ থেকে ন্যাপ্রন তা থেকে পরিবর্তিত হয়ে এপ্রন। শব্দটা ব্যবহৃত হতো ন্যাপ অর্থাৎ ঢেকে রাখা। তখন ড্রেসের উপরে পরা হতো ন্যাপ যা এখন এপ্রন নামে পরিচিত। আজকাল মূলত চিকিৎসা পেশায় জড়িতগন, ল্যাবরেটরিতে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ, কিম্বা শিক্ষকবৃন্দ এপ্রন ব্যবহার করে থাকেন। এর মধ্যে চিকিৎসকগন সাদা এপ্রন বেশি ব্যবহার করেন।
এটা যেমন তাদের পেশার পরিচায়ক হয়ে গিয়েছে, আমরা সাধারণ জনগণ সাদা এপ্রন পরা কাউকে দেখলেই প্রথমে তাকে চিকিৎসক বলেই ধরে নেই। এপ্রন পরার পেছনে বেশ কিছু কারনও আছে। সবচেয়ে প্রথমেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রশ্ন। তার সাথে চিকিৎসকগনের বেশ কিছু জিনিষ সাথে রাখা খুব জরুরী যেমন স্টেথোস্কোপ, বিপি মেশিন, প্যাড। আর এগুলো রাখতে দরকার বড় পকেটের যা এপ্রনে খুব সহজেই রাখা যায়। এপ্রন পরা তাদের দেখলেই আমরা, রুগীরা ভরসা পাই। এই এপ্রন খুব সহজে পরিচিত করে দেয় কে চিকিৎসক আর কে নয়?
ইদানিং আমাদের দেশে সরকারী মেডিকেল কলেজের পাশাপাশি শহরের যেখানে সেখানে অনেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ গড়ে উঠেছে। এর সাথে আছে যেখানে সেখানে গড়ে উঠা ক্লিনিক আর হাসপাতাল। এইসব কলেজে পড়ছেন হাজার হাজার ছাত্র পড়ালেখা করে। আর ক্লিনিক, হাসপাতাল এ চাকুরী করেন অনেক ডাক্তার।
আজকাল এটা অনেকটা ফ্যাশন এ রূপান্তরিত হয়েছে মনে হয়। রাস্তা ঘাটে, মার্কেটে এমনকি বাসে, রিক্সায় দেখা যায় ছেলে মেয়েরা এপ্রন পরে চলাচল করে।
হয়তো তারা চিকিৎসক হিসেবে তাদের পরিচিত করতে একটু বেশীই সজাগ থাকে। অভিভাবকগন যেমন সন্তানদের ডাক্তারি পড়াতে খুব বেশি অগ্রহী থাকেন ঠিক তেমনি ডাক্তারি পড়া ছাত্ররা কিম্বা নব্য পাশ করাদের মধ্যেও এপ্রন পরে নিজেদের ডাক্তার হিসেবে সবার সামনে তুলে ধরতে চান।
আমাদের বাসায় তিনজন এই পেশায় নিয়োজিত, আমার বাবা, ভাই এবং ভাবী। তাদের কখনো দেখিনি, হাসপাতাল আর মেডিকেল কলেজের বাহিরে এপ্রন পরে চলাফেরা করতে। বাসা থেকে বেড় হবার সময় সাথে এপ্রন নিয়েই যেতেন কিন্তু রাস্তায় কিম্বা বাসে-গাড়িতে, অথবা মার্কেটে পরতে দেখিনি। এতে তাদের পরিচয় পেতে বা দিতেও কখনো সমস্যায় পরতে হয়নি বলেই আমার ধারনা।
এপ্রন যদি রাস্তা ঘাটে আর বাসে পরে চলাচল করে তবে পরিচ্ছন্নতা আর জীবাণুমুক্ত কতটা রাখা সম্ভব? চিকিৎসকগন এই এপ্রন পরেই রুগীর খুব সন্নিকটে যায়। যা কতটা সমীচীন? রুগীর সেবা করতে গিয়ে তারা না আবার রোগেরবজীবানু ছারিয়ে দেয়? এপ্রন পরার চেয়েও এপ্রনের স্বাস্থসম্মত ব্যবহার নিশ্চিন্ত করা অনেক বেশী জরুরী।
তাই ডাক্তারি পড়তে থাকা ছাত্ররা কিম্বা পাশ করা ডাক্তারগন নিজেদের কর্মস্থল কিম্বা ক্লাসরুমেই এপ্রন ব্যবহার করে নিজেদের জীবাণুমুক্ত এবং স্বাস্থ্যকর চলাফেরা নিশ্চিত করুন।
আমরা এমনিতেই আপনাদের শ্রদ্ধা করি এবং করবো। আপনাদের সেবা আর কাজই আপনাদের মূল্যায়ন করাতে বাধ্য করবে। আপনাদের পোশাক নয়।
আপনারা ভাল থাকুন আমাদের ভাল রাখুন।।।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:২৩