আমি জানি শরণার্থী দেশের অর্থনীতি, সামাজিকতা এবং দেশের নিরাপত্তার জন্য অনেক ভয়ংকর হতে পারে।
আমাদের দেশ এমনিতেই প্রয়োজনের চাইতে অধিক জনসংখ্যার ভারে নিমজ্জিত। তাই নতুন করে সমস্যা কাধে নেয়ার মানেই হয় না। কিন্তু আমরা কি অতীত ভুলে গেছি? ১৯৭১ এ যখন পাকহানাদার রাতের অন্ধকারে আমাদের দেশের নিরীহ মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পরেছিলো, ভারত কিন্তু তার সমস্ত বর্ডার নিঃশর্তে খুলে দিয়েছিলো। দেখেনি তখন কে হিন্দু আর কে মুসলমান! এক কোটি শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিলো। একবার ভেবে দেখেছেন? তখন যদি তারা এই আশ্রয় এবং খাবারের যোগান না করতো তাহলে ত্রিশ লক্ষ শহীদের সংখ্যাটা কি কোটির আশেপাশে থাকতো না??
আজ আমাদের পাশের দেশ মায়ানমার কি করছে? নিজেদের দেশের জনগনের মাঝে ধর্মীয় চেতনাকে উষ্কে দিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের হত্যা করছে, ধর্ষন করছে, বাড়ী ঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে! তাদের সংখ্যা কত হতে পারে? সবমিলিয়ে দশ লক্ষ!
আমরা কি পারিনা এই দশ লক্ষ লোকের প্রান বাচাতে আমাদের বর্ডার খুলে দিতে?
অনেকেই বলবেন খাওয়াবে কে? এরা এসে দেশের ভিতরে গোলযোগ আর শান্তি বিঘ্নিত করবে। একেবারে ঠিক কথা। কিন্তু আমরা যে ৪৫ বছর ধরে বিহারিদের পেলে যাচ্ছি! যারা এত বছর পরেও নিজেদের পাকিস্তানী ভাবে এবং উর্দুতে কথা বলে! লক্ষ লক্ষ বিহারি কি আজো তাদের বাংলাদেশী ভাবতে শিখেছে না পেরেছে? তাদের খাওয়াতে পড়াতে পারলে এই কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গাদেরো খাওয়াতে পড়াতে পারবো আমরা।
দরকার পরিকল্পিত চিন্তা আর পদক্ষেপ। রোহিঙ্গারা মুসলিম তাই আমরা খুব সহজেই জাতিসংঘ সহ মিডেলইস্টের দেশগুলর সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে পারি। তাদের অনুরোধ করতে পারি এদের আশ্রয় দিতে। অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরব অবস্থান করছে। আমরা শুরু থেকেই তাদের শরনার্থীদের মতো রেশন নির্ভর না করে কাজে লাগাতে পারি।
আমাদের জায়গার অনেক অভাব, সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা আছে এটা সত্যি কিন্তু তাই বলে কি আমরা আমাদের পাশের দেশে মুসলমানরা এভাবে অত্যাচারিত হচ্ছে দেখেও চোখ বুজে বর্ডার বন্ধ করে রাখবো?
আমরা দেশের ভিতরে যেমন চাইনা ধর্ম নিয়ে কেউ রাজনীতি করুক সাম্প্রদায়িকতার আগুন ছড়াক, ঠিক তেমনি পাশের দেশ ভারত হোক আর মায়ানমার- চাইনা ওখানেও কোন মানুষ শুধুই ধর্মের কারনে অত্যাচারিত হবে আর আমরা শুধুই নিরবতা পালন করবো।
নীচের ছবিগুলো বলে দেয় মায়ানমারের ভয়াবহতা কতটা। ধর্ম মানুষের জন্যেই। মানুষকে হত্যার জন্য না। কোন ত্রান এবং বিদেশী সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হয় না আরাকানে। কি হচ্ছে একমাত্র উপরওয়ালাও জানে।
আসুন বর্ডার খুলে দেই
সব বাধা সরিয়ে দেই
মানুষ আসুক আসবেই
মানবতার জয় হবেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩২