আজ ১৫ আগষ্ট। ইসলামী শিক্ষা আন্দোলনের অগ্রসেনানী আব্দুল মালেকের ৩৯তম শাহাদাত বার্ষিকী। ইসলামী শিক্ষার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদী ও সমাজতন্ত্রীদের হাতে গুরুতর আহত হওয়ার ৩ দিন পর ১৯৬৯ সালের এই দিনে তিনি শহীদী মৃত্যুর অমিয়সুধা পান করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগের সেরা ছাত্রের মর্মান্তিক ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ইসলামপ্রিয় তরুণরা একদিনের জন্যও ভোলেনি। শহীদ আব্দুল মালেক লাখো তরুণের ‘প্রেরণার বাতিঘর', ‘তিমির রাতের অভিযাত্রী', ‘আলোরদিশারী' হিসেবে বেঁচে আছেন। ইসলামী ছাত্রশিবির এই দিনটিকে ইসলামী শিক্ষা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
ধর্ম নিরপেক্ষ, নাস্তিক্যবাদী যে ছাত্র সংগঠনগুলোর মুখে মুক্ত চিন্তা ও বাক স্বাধীনতার তুবড়ি ফোটে তাদের হাতেই ১৯৬৯ সালের ১২ আগষ্ট কালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান আব্দুল মালেক নির্মমভাবে প্রহৃত ও মারাত্মক জখম হন। পাকিস্তানের শিক্ষানীতি কী হবে এনিয়ে ঐদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসিতে আয়োজিত মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিভাগের সেরা ছাত্র, তৎকালীন ছাত্র ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা শহর সভাপতি শহীদ আব্দুল মালেক বক্তব্য দিতে চাইলে প্রথমে বাধা দেয়া হয়। পরে সুযোগ দিলে তিনি তার ক্ষুরধার যুক্তি দিয়ে ইসলামী শিক্ষার অপরিহার্যতা প্রমাণ করেন। তিনি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন, ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্খা হলো প্রকৃত শিক্ষা ব্যবস্খা। যার মাধ্যমে সত্যিকার শিক্ষিত মানব জাতি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এরূপ সত্যবচনে সেক্যুলারপন্থীদের গায়ে জ্বালা ধরে। তারা হায়েনার মতো হামলে পড়ে মালেকের উপর। চিকিৎসাধীন অবস্খায় ১৯৬৯ সালের ১৫ আগষ্ট তিনি অসংখ্য সহপাঠী ও শুভানুধ্যায়ীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান।
তারা চেয়েছিল শহীদ আব্দুল মালেককে হত্যা করে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্খার আন্দোলনকে চিরতরে মুছে ফেলতে। কিন্তু তাদের এই ষড়যন্ত্র চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তার প্রমাণ আজকের এই বাংলাদেশ। আব্দুল মালেকের রক্ত ইসলামী শিক্ষা ও সমাজ ব্যবস্খার আন্দোলনকে আরো বেগবান করেছে। শহীদ আব্দুল মালেকের মধ্যে বিস্ময়করভাবে অনুকরণীয় সব গুণের সমাবেশ ঘটেছিল। তার গোটা জীবনকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি ছিলেন প্রখর মেধাবী, অনুন্ধিতসু,নিরহংকার, বিনয়ী, মিষ্টভাষী, দ্বীন প্রতিষ্ঠায় নিষ্ঠাবান কর্মী, সঠিক নেতৃত্ব দানের দূর্লভ যোগ্যতার অধিকারী, ভালোবাসা, ত্যাগ ও কুরবানীর উজ্জ্বল ও অনুপম দৃষ্টান্ত।
আব্দুল মালেকের জন্ম ১৯৪৭ সালের মে মাসে। জন্ম স্খান বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার খোকসাবাড়ী গ্রামে। অসাধারণ মেধাবী আব্দুল মালেক জুনিয়র স্কলারশীপ লাভ করেন। এসএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী বোর্ডে মেধা তালিকায় একাদশ স্খান অর্জন করেন। রাজশাহী কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে মেধা তালিকায় ৪র্থ স্খান নিয়ে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন। শাহাদাত বরণ কালে তিনি ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে ১২২ নং রুমে থাকতেন।
বিস্তারিত জানতে পড়ুন: রক্তাক্ত জনপদ বইটি।
আওয়ামী হায়েনারা এক মালেকের জীবন নিয়ে ভেবেছিল সব শেষ করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু এক মালেকের হারানো বেদনা ভুলতে আমরা লাখো মালেক!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৫২টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর
পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন ড. ইউনূস
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুভেচ্ছা বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!
অপেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=
বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি
আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।
সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন