http://facebook.com/rajinreview/
কসম লাগে ভাই। এই রাণভীর সিং লোকটারে আমি দেখতারি না। কিন্তু শালা কোন মুভিতে একটুও খারাপ অভিনয় করে না। “গালি বয়” মুভিতে রণভীর সিং এর অভিনয় তে পুরাই তব্দা খাইয়া গেসি। তবে মুভিটির আরেক আকর্ষণ ছিল জয়া আখতারের নির্দেশনা। সেই জায়গাতে মুভিটি একটু পিছনে পরে গেল।
কাহিনী জানা যাক। মুম্বাইয়ের ধারাবি বস্তির এক ছেলে মুরাদ (রণভীর)। ছোট্ট একটি বস্তির ঘরে বাপ-মা, দাদী, এবং ভাই সহ পুরো পরিবার। বাপ ড্রাইভারে চাকরী করে তার উপর হঠাৎ একদিন নতুন বউ নিয়ে আসে। অভাবের সংসার। তবুও মুরাদ এর স্বপ্ন বড় কিছু হওয়ার। কিন্তু অভাব তো আর হতে দেয় না। গ্র্যাজুয়েশনের শেষ পরীক্ষার কয়েকদিন আগে তার বাপের বদলি হিসেবে ড্রাইভারের কাজ করতে হয়। তাও আবার নাইট শিফ্ট। যতই শিক্ষিত কিংবা ভালো মনের মানুষ সে হোক না কেন, সমাজের চোখে সে এক বস্তির ছেলে। সারা জীবন বস্তিতেই থাকবে। মনের সকল দুঃখ সে লিখে ফেলে হিপ হপ গানের কথা হিসেবে। পরিচয় হয় “এম সি শের”(সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী) নামক এক র্যাপারের সাথে। সেখান থেকেই যেন জীবনের এক নতুন পথ পেয়ে যায় মুরাদ। কিন্তু সমাজ কি তাকে দিবে উপরে উঠতে? সে তো বস্তির এক গলির ছেলে :“Gully Boy”।
মুভির সেরা দিক অবশ্যই রণভীর সিং এর অভিনয়। শুধু অভিনয়ই নয়। মুভির বেশ কয়েকটি গানও সে গেয়ে দিয়েছে। আর “আপনা টাইম আয়েগা ...” গানটি পুরাই ধামাকা। রণভীর সিং যে এনার্জি নিয়ে তার পারফর্মেন্স গুলি দিয়েছে তার জবাব নেই। পুরাই বাজিমাত।
এছাড়া পার্শ্বচরিত্রগুলিও দারুণ অভিনয় করেছেন। আলিয়া ভাট যথারীতি ফাটাফাটি। MC Sher চরিত্রে সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী পুরাই কোপায় দিসে। তবে দুর্দান্ত লেগেছে রণভীর এর পিতা চরিত্রে বিজয় রাজ কে। কয়েক বছর আগের লম্বা শুকনা একজন কমেডিয়ান, বর্তমানের এক দুর্ধর্ষ অভিনেতায় পরিণত হয়েছেন। রণভীর এবং বিজয় রাজের দৃশ্যগুলি মারাত্মক।
এবার মুভির খারাপ দিক গুলি নিয়ে আলোচনা করা যাক। জয়া আখতারের মুভি গুলি সাধারণত বেশ আনন্দদায়ক হয় তবে সমাপ্তি খুব একটা ভালো হয় না। এই মুভির সমাপ্তি খুবই সুন্দর তবে গড়বড় হয়ে গেছে বাকি মুভিতে। মুভির সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আলিয়া ভাটের চরিত্র “সাফিনা”। আলিয়া ভাট নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত অভিনয় করেছে তবে তার চরিত্রটি বেশ বিরক্তিকর। এছাড়া মুভিটি মুরাদ এর কাহিনী থেকে হঠাৎ সাফিনার কষ্টের জীবন দেখাতে শুরু করে। যেটা তে মুভি কিছুটা পথ হারিয়ে ফেলে। এছাড়া রণভীর এবং কাল্কির চরিত্রের হাল্কা ইটিশ পিটিশ হঠাৎ করে মুরাদ চরিত্রটির সাথে দর্শকদের সংযোগটি ভেঙে দেয়।
আচ্ছা ... সবই বুঝলাম কিন্তু আসল কথা হলো মুভিটি বেশ বোরিং। প্রতিটি দৃশ্যে নিজেকে আকড়ে ধরে রাখতে পারিনি। জিন্দেগী না মিলেগি দোবারা এবং দিল ধাড়াকনে দো এর পরে জয়া আখতারের কাছে আরও কিছু আশা করেছিলাম।
এরপর যে সমস্যার কথা বলবো সেটা অবশ্যই আমার ব্যক্তিগত। মুভির ভেতর কিছু র্যাপ ব্যাটল এর দৃশ্য আছে যেগুলি মুভির বেশ গুরুত্বপূর্ণ মূহূর্ত। যে দৃশ্যগুলি আমার ভালো লাগে নাই।
“তুই হিপ হপ কী বুঝস? .. এমিনেমের নাম শুনসোস? র্যাপ বলে ভালো লাগে না। ... অফ যা ...”
জ্বী। র্যাপ ভালো লাগে না। সুতরাং যাদের র্যাপ ভালো লাগে না তাদের এই মুভির সিংহ ভাগ কানেক্ট করতে একটু সমস্যা হবে। এক কথায় এ মুভি সবার কাছে অসাধারণ লাগবে না।
জয়া আখতারে “জিন্দেগী না মিলেগি দোবারা “ মুভির ধারের কাছেরও না এই মুভি। তবে “আপনা টাইম আয়েগা” গানে রণভীর সিং যে এনার্জি দেখিয়েছে সেটা প্রত্যেক দর্শকের লোম খাড়া করে দিবে।
সব মিলিয়ে ভালো মুভি।
রেটিং – ৩.৫ / ৫.০
১. ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০৪ ২