somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজকের ডায়েরি - ৪৮

১৮ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিরাট দিকদারির মধ্যে আছি।
দুটা তরমুজ কিনেছি। সিড়ি দিয়ে ছয় তলায় গেলাম ভালো। কিন্তু সকাল থেকে কোমরে ব্যথা। ব্যথাটা যেন জমাট বেধে আছে। চুপচাপ দাড়িয়ে থাকলে ব্যথা করে না। হাটলেই ব্যথা করে। মনে হচ্ছে কেউ মালিশ টালিশ করে দিলে আরাম লাগতো। সুরভি তার বাবার বাড়ি গেছে। কে সেবা যত্ন করবে? আজকাল সুরভি ঘর সংসার আর ফারাজাকে নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। খালি বাসায় গতকাল রাতে হঠাৎ ভয় পেলাম। তীব্র ভয়। আসলে স্বপ্ন দেখে ভয় পেয়েছি। স্বপ্নে দেখলাম, জামাতের আমির আমাকে চুমু দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসছেন।যাইহোক, বেশ গরম পড়েছে। ফ্যানের বাতাসে গরম কমছে না। এসি ছাড়তে পারছি না। সার্ভিসিং করাতে হবে। সংসার বড় অদ্ভুত। কাজের শেষ নেই। সমস্যার শেষ নেই। পানির ফিল্টার কাজ করছে না। অথচ গতমাসে ফিল্টার সার্ভিসিং করিয়েছি। ফোন করলাম, মাসুম পানির ফিল্টার কাজ করছে না। আমি এখন বাসায় আছি। তুমি লোক পাঠিয়ে দাও। মাসুম বলল, স্যার এখন লোক নাই। বিকেলের দিকে পাঠাবো। এরপর তিনটা বিকেল গেলো। কোনো খোজ খবর নাই।

ঘরে আলো কম কম লাগে।
আরেকটা টিউব লাইট লাগাবো। টিউব লাইট আনলাম। মিস্ত্রিকে ফোন দিলাম। মিস্ত্রি এলো। একটা টিউব লাইট লাগানো কঠিন কিছু না। আমি নিজেই পারি। কিন্তু ইচ্ছে করছে না। তাছাড়া কোমরে ব্যথা। মিস্ত্রি টিউব লাইট লাগিয়ে দিলো। ভালো করে তাকিয়ে দেখি, বাকা করে লাগিয়েছে। বললাম বাকা হয়েছে। মিস্ত্রি অস্বীকার করছে। গাধার সাথে তর্ক করলাম না। আমাদের দেশের লোক গুলো এরকমই। তিনশ টাকা দিলাম। কিন্তু বদটা একটা টিউব লাইট লাগিয়ে পাচ শ টাকা চাইছে। সব মিলিয়ে পনের মিনিট সময় লেগেছে। যাইহোক, পানির ফিল্টারের লোক এসেছে। আমি জানি এখন এই ছেলে আমাকে বলবে এটা নষ্ট, ওটা নষ্ট। ওটা বদলাতে হবে। ইত্যাদি। সব মিলিয়ে পাচ হাজার টাকা বিল করবে। ছেলেটা পানির ফিল্টার দেখলো। আমি যা ভেবেছিলাম তাই। ছেলেটা বলল, অনেক কিছু বদলাতে হবে। আমি বললাম, ফিল্টারে সমস্যা কি? ছেলেটা বলল, অনেক সমস্যা। সব মিলিয়ে পাচ হাজার তিন শ টাকা লাগবে।

আমার খুব রাগ লাগলো।
আমি জানি আমার পানির ফিল্টার ঠিক আছে। গত মাসে সার্ভিসিং করিয়েছি। ছেলেটা বলছে পাচ হাজার টাকা লাগিবে! কোথাও একটা তার হয়তো ছুটে গেছে। পানির ফিল্টারের সামান্য কাজ আমি নিজেই পারি। যাইহোক, আমি ছেলেটাকে বললাম, তুমি দাঁড়াও। আমি কোমরে ব্যথা নিয়েই ফিল্টার চেক করলাম। যা ভেবেছিলাম তা-ই। একটা তার ছুটে গেছে। তার টা জোড়া লাগিতদিলাম। এক মিনিট সময় লাগলো। ছেলেটাকে বললাম, এই তো ঠিক হয়ে গেলো। তুমি এত টাকা চাইলে কেন? ছেলেটা বলল, আপনি ফিল্টারের জিনিসপত্র গুলো পুরোনো হয়ে গেছে। তাই বলেছি, বদলানো দরকার।
বাংলাদেশের মানুষ গুলো এরকমই। তাদের শুধু একটাই চিন্তা, কি করে ঠকানো যায়। ছেলেটা বলল, আমাকে তিন শ টাকা দেন। আমি চলে যাই। বললাম, তিনশ টাকা কেন? ছেলেটা বলল, আমার সার্ভিস চার্জ। বললাম, তুমি তো কোনো কাজই করো নাই। ছেলেটা বলল, আমার যাতায়াত ভাড়া তিন শ টাকা। আমার প্রচন্ড রাগ হলো। বললাম, তোমাদের দোকানের পেছনে যে চায়ের দোকান আছে, সেখানে আমি প্রতিদিন আড্ডা দিতে যাই। আমার বাসা থেকে হেটে যেতে সময় লাগে ১২ মিনিট। তুমি তিন শ টাকা চাইছো কেন? রিকশা ভাড়া বড়জোর ৪০ টাকা।

আমাদের বাসায় একজন গেস্ট এসেছেন।
তিন মাস হলো। সে ফিরে যাচ্ছেন না। অথচ ঢাকায় উনার ছেলে আছে। ছেলের কাছে যায় না। ছেলের বউ তাকে সহ্য করতে পারে না। বয়স্ক একজন মানুষ। থাকুক আমাদের বাসায়।এখন এই লোক যথেষ্ট বিরক্ত করছে। বাসায় কি রান্না হবে সেটা উনি ঠিক করে দিচ্ছেন। সেদিন ইফতারির পর আমার তেহারি খেতে মন চেয়েছে। ভাবীকে বললাম, ভাবী তেহারি রান্না করেন। অই লোক দৌড়ে এসে বলল, না। খবরদার তেহারি না। আমার পেট ভালো নেই। আজকে আলুর ভর্তা আর ডাল ভর্তা করো। উনি গেস্ট। অথচ উনি সব কিছুতে মাতব্বরি করছেন। আমি দুধ চা খাই। আমাকে দুধ চা খেতে দেখলেই উনি আমাকে জ্ঞান দেন। দুধ চায়ে কি কি ক্ষতি আমাকে ব্যাখ্যা করেন। এই লোক কোনো কাজ করে না। আর্থিক অবস্থা ভালো না। অথচ ফোনে সারাদিন কথা বলে। সেদিন একজনকে ফোন করে বলল, উত্তরাতে তার পাচ কাঠা জমি লাগবে। সে একটা বাড়ি বানাবে। শবে বরাতের দিন উনি আমাদের বললেন, প্রথম রোজা আমি তোমাদের হোটেল শেরাটনে করাবো। অথচ প্রথম রোজা চলে গিয়ে আজ ১৭ রোজা।

আমার ভাগ্নী স্কলারশিপ পেয়ে আমেরিকা গিয়েছিল।
সেখানে এক আমেরিকান ছেলের সাথে তার প্রেম ভালোবাসা হয়ে যায়। ভাগ্নী বাংলাদেশে চলে আসে। প্রেমের টাবে সেই আমেরিকান ছেলে বাংলাদেশে আসে। খুব ধুমধাম করে বিয়ে হয়। ছেলেটা সাত মাস ছিলো। কি সব জটিলতার কারণে সে তার স্ত্রীকে আমেরিকা নিতে পারছে না। সেবার ছয় মাস থেকে গেলো। আমি মনে মনে ভেবেছিলাম, এই ছেলে আর ফিরে আসবে না। কিন্তু ছেলেটা এক বছর পর আবার ফিরে এসেছে। প্রতিদিন ছেলেটার সাথে দেখা হয়। গতকাল দেখলাম, চায়ের মগ হাতে। বললাম, কোথাও যাচ্ছো? বলল, মামা চা আনতে। চা কে খাবে? বলল, আপনার ভাগ্নী খাবে। বললাম, চা তো ঘরেই বানাতে পারো। ছেলেটা বলল, ঘরের চা আমাদের ভালো লাগে না। তিনবেলা বাইরে খেতে খেতে এখন ঘরের খাবার ভালো লাগে না। আমাদের এলাকার সবাই ছেলেটাকে চিনে গেছে। বেশ কিছু বাংলা শব্দ পারে। মামা, টাকা। রিকশা। অবাক ব্যাপার হচ্ছে একটা গালিও শিখেছে। কুত্তার বাচ্চা। ছেলেটা সুরভির হাতের রান্না খুব পছন্দ করে। আমার কন্যা ফারাজাকে অনেক আদর করে। ফারাজার জন্য সে একটা বড় পুতুল এনেছে আমেরিকা থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:০৯
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×