somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রবীন্দ্রনাথের সাথে দেখা হলে কি করতেন?

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রবীন্দ্রনাথ তার সমস্ত কর্মকাণ্ড দিয়ে একটা বিষয়ই বুঝাতে চেয়েছেন, জীবন সুন্দর।
তার শিল্পকর্মে, সাহিত্যে, গানে, কবিতায় আমরা তা টের পাই। রবীন্দ্রনাথ একজন গ্রেট মানুষ। তার তুলনা হয় না। বাঙালীদের ভাগ্য তিনি এই বাংলায় জন্মেছিলেন। বাংলায় লিখেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ একজন ম্যাজিশিয়ান। তিনি সবার মনের কথা লিখে গেছেন। রবীন্দ্রনাথ কে নিয়ে অসংখ্য বই লেখা হয়েছে। আমি নিজেও একটা লিখেছি। নাম দিয়েছি 'বিকল্পহীন রবীন্দ্রনাথ'। বইটা একদম চলেনি। পাচ কপিও বিক্রি হয়নি। একদিন বইটা আমি নিজেই পুরোটা পড়লাম এবং অসংখ্য ভুল খুজে পেলাম। আমার খুবই মন খারাপ হয়েছে। আসলে প্রকাশক সাহেব মন দিয়ে বইটি প্রকাশ করেন নাই। হেলাফেলা করেছেন। যাইহোক, ইচ্ছা আছে বইটা আমি আবার নতুন করে লিখব। আপনাদের সবার দোয়াপ্রার্থী। একটা দুখের কথা বলি, রবীন্দ্রনাথের সাথে আমার কোনো মিল নেই। আমি রাস্তার পাশের চায়ের দোকান থেকে চা খাই। রবীন্দ্রনাথ তার সমগ্র জীবনে কখনো রাস্তায় দাড়িয়ে চা খান নাই। চা খেতে খেতে বৃষ্টিতে ভিজেন নাই।

রবীন্দ্রনাথকে আমি স্বপ্নে বেশ কয়েকবার দেখেছি।
প্রথম স্বপ্নটার কথা বলতে চাই। স্বপ্নটা এই রকম: শিলং পাহাড় বেড়াতে গেছি। সেদিন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছিলো। আমি একটা গাছের নিচে বসে বিয়ার খাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি রবীন্দ্রনাথ হেটে হেটে আমার দিকে আসছেন। আমি বললাম, গুরুদেব কেমন আছেন? গুরুদেব বললেন, তুমি কি আমার ছাত্র? আমি বললাম, না। গুরুদেব বললেন, তুমি এই দুপুরবেলা বিয়ার খাচ্ছো? অথচ দেখো বিশ্বের কত দেশ ভ্রমণ করেও আমি বিয়ার ছুয়ে দেখিনি। এখনও আমি রোজ চিরতার রস খাই। আমি বললাম, গুরুজ্বী স্যরি। ক্ষমাপ্রার্থী। আসলে আমি বড় যন্ত্রণাবিদ্ধ, বড় বিষন্ন, বড় হতাশ। গুরুজ্বী বললেন, আগামী মাসের প্রথম রবিবার তুমি আমার সাথ দেখা করবে শান্তিনিকেতনে।

দ্বিতীয় স্বপ্নটার কথা বলি-
এবার রবীন্দ্রনাথ আমার কাছে এলেন দাতের ডাক্তার হয়ে। আমার জীবনে আমি সবচেয়ে বেশি যত্ন নিয়েছি দাতের। অথচ আমার দাত গুলোর গজব অবস্থা। অলরেডি মাড়ির দুটা দাত ফেলে দিতে হয়েছে। আরেকটা দাত ফেলে দেওয়ার সময় হয়েছে। মজাদার খাবার গুলো আরাম করে চিবিয়ে খেতে পারি না। দাতের ডাক্তার আমি ভয় পাই। দাত ফেলার আগে মাড়িতে ইনজেকশন দেয়। যাইহোক, দাতের ডাক্তারের কাছে গেলাম। গিয়ে দেখি আমাদের রবীন্দ্রনাথ দাতের ডাক্তার। বললাম, কবি আপনি দাতের ডাক্তার হলেন কবে? কবি বললেন, একজন সাহ্যিতিককে সব কিছুই জানতে হয় রে পাগলা। যে দাতে সমস্যা সেই দাত কবিকে দেখালাম। কবি বললেন, দাঁত টা এখনই ফেলে দিতে হইবে। আমি বেশ ভয় পাচ্ছি। কারণ রবীন্দ্রনাথ কে আমার কাছে আনারি ডাক্তার বলে মনে হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ বললেন, সামান্য বিয়ার খেয়ে নাও। তাহলে দাত ফেলার সময় তোমার ব্যথা বোধ কম হবে।

তৃতীয় স্বপ্নটার কথা সংক্ষেপে বলি।
একদিন বাসায় আমি একা। বাইরে তুমুল ঝড়বৃষ্টি। রাত তখন দুটা। আমি 'শেষের কবিতা' বইটা পড়ছি। এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠলো। মনে মনে ভাবছি এত রাতে কে এলো? দরজা খুলে দেখি রবীন্দ্রনাথ! আমি তাকে বসালাম। নিজের হাতে চা বানালাম। রবীন্দ্রনাথ চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন, এত ভালো চা কাদম্বরীও বানাতে পারবে না। আমি বললাম, স্যার আমি এতক্ষণ আপনার লেখা 'শেষের কবিতা' বইটা পড়ছিলাম। রবীন্দ্রনাথ বললেন, আমি জানি তুমি 'শেষের কবিতা' বইটা প্রতিবছর একবার করে পড়ো। হঠাৎ কবি বললেন, রাজীব তুমি আমার সম্পর্কে ঠিক কতটা জানো? আমি সহজ করে এবং বোকার মতো করে বলে দিলাম, স্যার আমি আপনাকে যতটা জানি, ততটা মৃনালিনী দেবী বা কাদম্বরী দেবীও জানেন না। আমার কথা শুনে রবীন্দ্রনাথ বেশ অবাক হলেন! বললেন, কি জানো তুমি বলো। এক্ষুনি বলো। আমি বললাম, আপনার সম্পর্কে ১০টা তথ্য দেই।

১। আপনি সবুজ রঙ চোখে দেখেন না। কালার ব্লাইন্ড।

২। একবার আপনি বোটের ছাদে বসে বই পড়ছিলেন, হঠাৎ আপনার চটি জুতো নদীতে পড়ে যায়। সেই চটি জুতো উদ্ধার করতে আপনি নদীতে লাফ দেন।

৩। একবার আপনি হাংগেরি যান। তখন এক ব্যবসায়ী আপনার বেশভূষা দেখে আপনাকে ভিক্ষুক ভেবেছিলেন। আপনার হাতে একটা পয়সা দিয়ে দেয়।

৪। আপনি যতবার ব্যবসায় নেমেছেন, ততবার লস খেয়েছেন। ফুলের ব্যবসা করতে গিয়ে অনেক টাকা লোন নিলেন। সেই টাকা পরিশোধ করতে আপনাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।

৫। আপনি জমিদারের পুত্র ছিলেন, কিন্তু নিজে ধনী ছিলেন না। সংসার চালাতে রীতিমতো আপনাকে হিমশিম খেতে হতো।

৬। কাদম্বরী দেবীর সাথে আপনার সম্পর্ক ছিলো স্বচ্ছ, সহজ সরল সুন্দর ও পবিত্র। অনেকটা মা ছেলের মতো। অথচ একটা সুন্দর সম্পর্ক নিয়ে মানুষ আজও বাজে কথা বলে যাচ্ছে।

৭। আপনি একজন সাহ্যিতিক হয়ে, একজন মানবিক ও হৃদয়বান মানুষ হয়েও কন্যার বিয়েতে অনেক টাকা যৌতুক দিলেন। অবশ্য আপনি ছেলের বিয়েতে যৌতুক নেননি। বরং একজন বিধবাকে নিজের ছেলের বউ বানিয়েছেন।

৮। আপনি জীবনে বেশ কয়েকটি অন্যায় করেছেন, দ্বারকানাথের সমস্ত কাগজপত্র পুড়িয়ে দেন। কাদম্বরী দেবী আত্মহত্যা করার পর তদন্ত করতে দেননি। টাকা দিয়ে সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন।

৯। আপনি টাকার জন্য বিভিন্ন দেশ ঘুরে ঘুরে বক্তৃতা দিয়েছেন। দাওয়াত পেলেই চলে যেতেন। কখনো মানা করতেন না। নোবেল প্রাইজের টাকা দিয়ে ঋন শোধ করেছেন।

১০। জমিদারদের অনেক খারাপ অভ্যাস থাকে, কিন্তু আপনার কোনো খারাপ অভ্যাস ছিলো না। কোনো দিন বাইজি নাচান নাই, মদ খান নাই।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াতকে দেশপ্রেমিক শক্তি বলা ইতিহাসের নির্মম রসিকতা: আ স ম রব

লিখেছেন সহীদুল হক মানিক, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:২৬

‘জামায়াতে ইসলামীকে পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক শক্তি বলে আখ্যায়িত‘ করার প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। তিনি বলেন, ‘১৯৭১-এ স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাকরণবিদ ছাগশাবকগণ

লিখেছেন এল গ্যাস্ত্রিকো ডি প্রবলেমো, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:২৭

একদিন দুইজন ব্যক্তি গল্প করছিল। উক্ত দুই ব্যক্তি অত্যন্ত জ্ঞানী ছিল। তারা ব্যাকরণ ভালো জানতেন। তারা হাঁটতে হাঁটতে দেখল দুইটি কাঁঠালপাতা পড়ে আছে। তখন তারা সেই দুইটি পাতা খেলো। তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাকিস্তান, আমেরিকা, জামাত-শিবির আমাদেরকে "ব্যর্থ জাতিতে" পরিণত করেছে।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৭



আজকে সময় হয়েছে, আমেরিকান দুতাবাসের সামনে গিয়ে বলার, "তোরা চলে যা, ট্রাম্পের অধীনে ভালো থাক, আমরা যেভাবে পারি নিজের দেশ নিজেরা গড়বো। চলে যাবার আগে তোদের পাকী... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হয়তো কখনো আমরা প্রেমে পড়বো=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:০০


পোস্ট দিছি ২২/১২/২১

©কাজী ফাতেমা ছবি

কোন এক সময় হয়তো প্রেমে পড়বো আমরা
তখন সময় আমাদের নিয়ে যাবে বুড়ো বেলা,
শরীরের জোর হারিয়ে একে অন্যের প্রেমে না পড়েই বা কী;
তখন সময় আমাদের শেখাবে বিষণ্ণতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বর্তমান সরকার কেন ভ্যাট বাড়াতে চায় ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:১০


জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে অতিষ্ঠ হয়ে জনগণ ছাত্রদের ডাকে রাস্তায় নেমে আসে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটায়। অবশ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×