আওয়ামী লীগ আগামী দশ বছরের মধ্যে ক্ষমতায় আসতে পারবে না।
তারা একটানা প্রায় ১৬ বছর ক্ষমতায় ছিলো। ধর্ম যেমন মানুষকে কোনঠাসা করে রাখে, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষকে কোনঠাসা করে ফেলেছিল। মানুষ মন খুলে কথা বলতে পারতো না। এমনকি মন ভরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস লিখতে পারতো না। যদি গুম করে ফেলে, যদি কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। বিএনপির কোমর ভেঙে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। আর এবার আওয়ামী লীগের কোমর ভেঙে দিয়েছে দেশের জনগণ। এখন গর্তে লুকিয়েও আওয়ামী লীগ বাচতে পারছে না। অবশ্যই আওয়ামী লীগের উচিৎ শিক্ষা হয়েছে। এই শাস্তি তাদের পাওয়া। ঘৃনা খুব খারাপ জিনিস। দেশের মানুষের আওয়ামী লীগের উপর ঘৃনা জমেছে এক সাগর সমান। যদি তারা সৎ থাকতো, যদি শেখ হাসিনা জনগণের কথা শুনতো, তাদের ভাষা বুঝতো তাহলে আজ তাদের এই করুন পরিনতি হতো না।
পুরো দেশটা চলছিলো শেখ হাসিনার খেয়াল খুশি মতো।
সব আপা জানে। সব আপা করবে, আপা যাই বলবে তাই করতে হবে। এমন পরিস্থিতি হয়ে গিয়েছিল— আপা ছাড়া উপায় নাই, আপা ছাড়া গতি নাই। শেখ হাসিনা ক্ষমতা খুব ভালোবাসতেন। ক্ষমতায় থাকার জন্য তিনি সব করতে রাজী। গুম, খুন, হত্যা তার কাছে কোনো ব্যাপারই না। দেশের জনগণ সহ্য করতে করতে তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল। শেখ হাসিনা আরও কয়েক বছর ক্ষমতা থাকলে হিটলার হয়ে যেত। হিটলার কত না অত্যাচার করেছে মানুষকে। বিশ্ববাসী হিটলার কে ঘৃনা ভরে স্মরণ করে। শেখ হাসিনা দেশের টাকা অনেক ফালতু কাজে খরচ করেছে। এয়ারপোর্টের নাম বদলে দিলো অনেক টাকা খরচ করে। শেখ মুজিবের কত ভাস্কর্য তৈরি করলো। মুজিব বর্ষে প্রচুর টাকা খরচ করলো। দরিদ্র দেশে এত ফালতু খরচের দরকার ছিল না। বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগ বেশি লুটপাট করেছে। আপা কাউকে থামান নাই। তাই লুটপাট বহু গুন বেড়ে গিয়েছিল।
শেখ হাসিনা গত পনের বছর শুধু তার বাবার নাম নিয়েছেন।
যেন দেশ স্বাধীন তার বাবা একা করেছেন। আর কারো কোনো ভূমিকা নেই। তার মধ্যে এরকম একটা ভাব ছিলো, আমার বাবার দেশ, আমি যা খুশি তাই করবো। কারো কথা শুনবো না। দেশ যে শুধু তার বাবার একা না, সব শ্রেনী পেশার মানুষ যে যুদ্ধ করেছেন, দেশের মানুষ যে অনেক কিছু ত্যাগ করেছেন, সেসব তিনি ভুলে গেছেন। একজন দেশের প্রধানমন্ত্রী কেন আল্লাহর ত্রিশ দিন শুধু তার বাপের নাম নেবেন? এই দেশ হিন্দুর, এই দেশ মুসলমানের, এই দেশ খ্রিস্টানের, এই দেশ বৌদ্ধের। এই দেশ উপজাতিদের। এই দেশ আমাদের সকলের। শেখ মুজিবের একার না। এই দেশ রিকশা চালকের, এই দেশ শ্রমিকের, এই দেশ ছাত্র শিক্ষক, সাহিত্যিকের। এই দেশ ভিক্ষুকের, এই দেশ বেকারের। শুধু শেখ মুজিব শেখ মুজিব করলে হবে। হ্যা শেখ মুজিবের অবদান আছে। সেটা আমরা অস্বীকার করি না। তাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। কিন্তু শেখ হাসিনা শেখ মুজিব করতে করতে, তিতা বানিয়ে ফেলেছেন। এই বছর ১৫ আগষ্ট কিছুই হলো না। ৭ই মার্চের ভাষণ রাস্তায় মোড়ে মোড়ে বাজেনি। খিচুড়ি রান্নার জন্য চাদাবাজী হয়নি। তাতে দেশের কোন ক্ষতিটা হলো?
আওয়ামী লীগের সব নেতা কর্মী অসৎ।
ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে যুবলীগ সকলে অসৎ। তারা সীমাহীন টাকা লুটপাট করেছে। দেশের ক্ষতি করেছে। এখন অন্তবর্তী সরকারের আমলে সব প্রকাশ পাচ্ছে। একজন মানুষের কত টাকা লাগে? তারা প্রত্যেকে প্রয়োজনের তুলনায় পাচ শ গুন বেশি চুরি করেছে। হ্যা বিএনপিও চুরী করেছে। গত ৫৩ বছর ধরে সব সরকারই ইচ্ছে মতো দূর্নীতি করেছে। এখন কি করুন পরিনতি আওয়ামী লীগের। পাপের শাস্তি আওয়ামী লীগ পাচ্ছে। শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হলো। মুতে দেওয়া হলো। ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি লুটপাট হলো, আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হলো। আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হলো। কোটি কোটি টাকা খরচ করে নতুন ডিজাইন করে পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হলো। সব শেষ। সব ধ্বংস। কাজেই আওয়ামী লীগ আগামী ১০/১৫ বছরের জন্য গর্তে চলে গেলো। শেখ হাসিনা অনেক সময় পেয়েছিলেন কিন্তু অনেক কাজ করেন নাই। দেশকে দীর্ঘদিন সীমাহীন ঋনের বোঝা টানতে হবে। এখন যদি পাচার হয়ে যাওয়া টাকা ইউনুস সাহেব ফিরিয়ে আনতে পারেন, তাহলে তাতেই দেশের জন্য ভালো হয়।
মানুষের কোনো কিছুই গোপন থাকে না।
দেরীতে হলেও সব কি প্রকাশ পায়। এজন্য কবি বলেছেন, দেরী হোক যায়নি সময়। প্রকৃতি কাউকে ক্ষমা করে না। সে যথাসময়ে শাস্তি দিয়ে দেয়। আজকে আওয়ামী লীগ তাদের কর্মফল ভোগ করছে। অপমান অবহেলা অপবাদ তারা তিলে তিলে টের পাচ্ছে। সবাই পালাচ্ছে। কেউ কেউ ধরা পড়ছে। কিছুদিন জেল খেটে তারা জামিনে বের হবে। বাকি জীবনটা তারা জাতির কাছে মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারবে না। আওয়ামী লীগের এমন কোনো শালা নাই, এমন কোনো নেতা কর্মী নাই, এমন কোনো ছাত্রলীগ, যুবলীগ নাই যে দূর্নীতি কতে নাই। এখন সমস্ত দূর্নীতিবাজ গুলো কে অবশ্যই গ্রেফতার করতে হবে। শাস্তি দিতে হবে। এবং টাকা ফেরত দিতে হবে। কোনো ছাড় নাই। হ্যা শেখ হাসিনা দুই একটা ভালো কাজ করেছে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল আর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। কিন্তু অসংখ্য খারাপ কাজের ভিড়ে, তার ভালো কাজ গুলো হারিয়ে গেছে। লোভ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। টাকা মানুষকে অমানুষ বানায়। ক্ষমতা মানুষকে ভুল পথে নিয়ে যায়। ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসতে তাদের উচিৎ আওয়ামী লীগ থেকে শিক্ষা নেওয়া।
শেখ হাসিনা তার বাবার হত্যাকারীদের বিচার করেছেন।
রাজাকারদের বিচার করেছেন। বিএনপির কোমর ভেঙে দিয়েছেন। বুদ্ধিজীবীদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন। সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা খর্ব করেছেন। কোনো পত্রপত্রিকা সত্য সংবাদ প্রকাশ করতে পারতো না। কোনো টিভি চ্যানেল স্বাধীন ভাবে টিভি চালাতে পারতো না। বাংলাদেশের সব কিছু চলতো আপার খেয়াল খুশি মতো। একটা কথা আছে, আল্লাহর মাইর দুনিয়ার বাইর। অন্যায় অত্যাচার যুগের পর যুগ চলতে পারে না। সব কিছুর একটা শেষ আছে। পুলিশ ডিপার্টমেন্টে যারা আওয়ামী লীগ আছে, তারাও সীমাহীন টাকা সরিয়েছে। বেনজির থেকে হারুন কেউ কারো চেয়ে কম না। এদের অবশ্যই শাস্তি দিতে হবে। আওয়ামী লীগের অধ্যায় শেষ। শেখ হাসিনার ছেলে জয়, কথা বলতে গেলেই ভুলভাল বকে। জয় সঠিক ভাবে কথা বলতে পারে না। রাজাকারের নাতীর সাথে পুতুলের বিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বড় ভুল করেছেন। তার লোভ, তার হিংসাত্মক মনোভাব, তার মুখের ভাষা ইত্যাদি কারণে শেখ হাসিনা তার বাবার নাম ডুবিয়ে দিলেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:১০