১। মার্কিন ধনকুবের এন্ড্রু কার্নেগী ছিলেন তাঁর সময়ের সবচেয়ে বড় ধনকুবের।
তিনি ছিলেন বস্তির ছেলে। তাঁর বয়স যখন ১২ বছর তখন খেলার জন্য একবার তিনি পাবলিক পার্কে ঢুকতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর পোশাক এত মলিন ও নোংরা ছিল যে, সেই পার্কের দারোয়ান তাকে পার্কে প্রবেশ করতে দেয়নি। সেদিন তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, একদিন তার টাকা হবে আর তিনি এই পার্কটি কিনে ফেলবেন। ধনকুবের হওয়ার পর কার্নেগী ঐ পার্কটিই কিনেছিলেন এবং পার্কে নতুন একটি সাইনবোর্ডও লাগিয়েছিলেন। তাতে লেখা ছিল, 'আজ থেকে দিনে বা রাতে যে কোন সময়ে যে কোন মানুষ যে কোন পোশাকে এই পার্কে প্রবেশ করতে পারবে'।
২। অসামান্য প্রতিভাবান কবি কাজী নজরুল ইসলাম যখন ইসলামি হামদ, নাত, গজল রচনা শুরু করলেন- তখনকার একটি ঘটনা। শিল্পী আব্বাস উদ্দিন একদিন অনকে খোজাখুজি করে নজরুলকে না পেয়ে সকালে তার বাসায় গেলেন। বাসায় গিয়ে দেখলেন নজরুল গভীর মনোযোগ দিয়ে কি যেন লিখছেন। নজরুল ইশারায় আব্বাস উদ্দিনকে বসতে বললেন। আব্বাস উদ্দিন অনকেক্ষন বসে থাকার পর জোহরের নামাজের সময় হলে তিনি উসখুস করতে লাগলেন। নজরুল বললেন- কি তাড়া আছে, যেতে হবে?
আব্বাস উদ্দিন বললেন- ঠিক তাড়া নেই, তবে আমার জোহরের নামাজ পড়তে হবে। আর এসেছি একটা ইসলামি গজল নেবার জন্য। গজল না নিয়ে আজ যাওয়া হচ্ছে না।
নামাজ পড়ার কথা শুনে নজরুল তাড়াতাড়ি একটি পরিস্কার চাদর তার ঘরের আলমারি থেকে বের করে বিছিয়ে দিলেন। এরপর আব্বাস উদ্দিন যথারীতি জোহেরর নামাজ শেষ করার সাথে সাথে নজরুল আব্বাস উদ্দিনের হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বললেন- এই নাও তোমার গজল। আব্বাস উদ্দিন বিস্ময়ের সাথে দেখলেন তার নামাজ পড়তে যে সময় লেগেছে ঠিক সেই সময়ের মধ্যে নজরুল সম্পুর্ণ একটি নতুন গজল লিখে ফেলেছেন।
গজলটি দেয়া হলো:
হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ
দিলাম তোমার চরণ তলে হ্রদয় জায়নামাজ
আমি গোনাহগার বে-খবর
নামাজ পড়ার নাই অবসর
তব, চরণ-ছোওয়ার এই পাপীরে কর সরফরাজ।
হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ।
তোমার অজুর পানি মোছ আমার পিরহান দিয়ে
আমার এই ঘর হউক মসজিদ তোমার পরশ নিয়ে
যে শয়তান ফন্দিতে ভাই
খোদার ডাকার সময় না পাই
সেই শয়তান থাক দূরে (শুনে) তকবীরের আওয়াজ।
৩। দেশ পত্রিকার সম্পাদক সাগরময় ঘোষ একবার বেড়াতে গিয়ে নদীতে পড়ে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গেই এক যুবক ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে উদ্ধার করল। কিছুদিন পর যুবকটি দেশ পত্রিকায় ছাপানোর জন্য একটি নাতিদীর্ঘ কবিতা নিয়ে হাজির হলেন তাঁর কাছে। কবিতাটি পড়ে সাগরময় ঘোষ যুবকটি বললেন, ‘তুমি বরং এক কাজ করো।’ ‘কী কাজ?’ ‘আমাকে যেখান থেকে উদ্ধার করেছিলে সেখানে ফেলে দিয়ে আসো।’
৪। সৈয়দ মুজতবা আলী তখন বেশ বিখ্যাত লেখক।
প্রতিদিনই তাঁর দর্শন লাভ করতে ভক্তরা বাসায় এসে হাজির হয়। একদিন এক ভক্ত মুজতবা আলীর কাছে জানতে চাইলেন, তিনি কোন বই কী অবস্থায় লিখেছেন। মুজতবা আলী যতই এড়িয়ে যেতে চান, ততই তিনি নাছোড়বান্দা। শেষে মুজতবা আলী সরাসরি উত্তর না দিয়ে বললেন, ‘দেখো, সুইস মনস্তত্ত্ববিদ কার্ল গুসতাফ জাং একদা তাঁর ডায়েরিতে লিখে রেখেছিলেন, কিছু লোক আমাকে জিজ্ঞেস করে, আমি কীভাবে লিখি। এ ব্যাপারে আমাকে একটা কথা বলতেই হয়, কেউ চাইলে তাকে আমরা আমাদের সন্তান গুলো দেখাতে পারি, কিন্তু সন্তান গুলো উৎপাদনের পদ্ধতি দেখাতে পারি না।’
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৩:০৯