নাৎসি পার্টির নেতা হিসেবে জার্মানির শাসনভার নেয়ার আগে হিটলার চেয়েছিলেনে একজন সফল চিত্রশিল্পী হতে।
হিটলারের আঁকা চিত্রকর্মগুলোর আসলেই কি কোনো শিল্পমান রয়েছে?
লোকজন বলেছে- হিটলারের আঁকা ছবিগুলো গতানুগতিক। শিল্পের যে একটা ছন্দ থাকে তা ছবি গুলোতে খুব একটা দৃশ্যমান নয়। তাছাড়া রঙের ব্যবহার এবং চিত্রকর্মে দার্শনিক কোনও চিন্তাভাবনার প্রতিফলন দেখা যায় না। যদি হিটলার সেদিন ভিয়েনার অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেন আর চিত্রশিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা পেতেন তাহলে তাকে নিয়ে ইতিহাস হয়তো অন্যভাবে লেখা হতো। ১৯৩৯ সালের ৩০ অক্টোবর লাইফ ম্যাগাজিনের এক নিবন্ধে হিটলার সে সময় জার্মানিতে কর্মরত এক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে বলেছিলেন, 'আমি একজন শিল্পী, রাজনীতিবিদ নই। একজন শিল্পী হিসেবেই আমি আমার জীবন শেষ করতে চাই।
১।
হিটলারের আঁকা ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ছবি।
পৃথিবীর ইতিহাসে ঘৃণিত ব্যক্তি হলেন এডলফ হিটলার।
সরকারী কাস্টমস থেকে অবসর গ্রহণের পর হিটলারের বাবা সপরিবারে অস্ট্রিয়ার লিনতস শহরে চলে আসেন। হিটলারের বাবা ১৯০৩ সালে মারা যান। বাবার রেখে যাওয়া পেনশন ও সঞ্চয়ের অর্থ দিয়েই তাদের সংসার কোনমতে চলতে থাকে। অনেক ভোগান্তির পর ১৯০৭ সালে তার মাও মারা যান ফলে হিটলার নিঃস্ব হয়ে পড়েন। পড়াশোনায় বিশেষ সুবিধা করতে পারেন নি। এক সময় ভিয়েনায় যান। কিন্তু চিত্রশিল্পী হবার স্বপ্ন নিয়ে আবার লিন্ৎসে ফিরে আসেন।
২।
হিটলার ভিয়েনার আর্ট অ্যাকাডেমিতে দুইবার পরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। পরীক্ষকরা অদ্ভুত যুক্তি দেখাচ্ছিল যে হিটলার ছবি নাকি সব বিল্ডিং এবং এই রিলেটেড জিনিসের উপরে, কোন ক্রিয়েটিভিটি নাকি নাই।
হিটলার ১৯১৪ সালের দিকে জার্মানির মিউনিখ শহরের সিটি হল ভবনের একটি ছবি জলরংয়ে এঁকেছিলেন। হিটলারের আঁকা চিত্রকর্ম গুলো মাঝারি মানের চিত্রকর্ম। হিটলার ১৯০৫ সাল থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে দুই হাজারটি চিত্রকর্ম এঁকেছিলেন। হিটলার তার আত্মজীবনীমূলক বই 'মেইন ক্যাম্ফে' একজন তরুনের চিত্রশিল্পী হয়ে ওঠা এবং ভিয়েনা অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্ট থেকে বারংবার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ঘটনা তুলে ধরেছিলেন।
৩।
শিল্পকলা সম্বন্ধে মোটামুটি জ্ঞানওয়ালা যে কেউ বুঝবে এই ছবিগুলা এমন কোন স্পেশাল কিছু না। আর্ট কলেজের সাধারণ ছাত্ররা এইধরণের কাজ নিয়মিত করে।
হিটলারের প্রেমের ফাঁদে পড়ে ৮জন নারী আত্মহত্যা করেছিলেন!
হিটলার একজন আজীবন দুখী মানুষ। এমন কি সে প্রেম ভালবাসায় সফল হতে পাড়েন নি। ভিয়েনায় থাকার সময়ে নিজের দৈনন্দিন খরচ মেটানোর জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির আঁকা ছবি দেখে সেগুলো পোস্টকার্ডের ওপর নকল করতেন। সেসব পোস্টকার্ড বিক্রি করে সংসার চালাতেন। অভাবে অভাবে বড় হয়েছেন।
৪।
একজন শিল্পী কিভাবে এমন নৃশংস হয়!!
হিটলার শৌখিন চিত্রকর ছিলেন।
হিটলার কখনোই কোন কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে যাননি, পৃথিবীতে প্রথন ধূমপান বিরোধী ক্যাম্পেইন করেছিলেন তিনি। তিনি সবসময় তার মায়ের প্রতিকৃতি তার কাছে রাখতেন। ১৯৩৯ সালে নোবেল পুরষ্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন হিটলার। তিনি কুকুর ভালোবাসতেন। তিনি ছিলেন কঠোর নিরামিষভোজী। তিনি ছিলেন কুসংস্কারাচ্ছন্ন একজন মানুষ।
৫।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০২১ রাত ১০:০০