পবিত্র কোরআন শরীফে ১১৪ টি সূরা আছে।
১১৪ টি সূরার মধ্যে সর্ব প্রথম সূরা হচ্ছে 'সূরা আল-ফাতিহা'। অর্থ হলো আরম্ভ বা শুরু। এ সূরার আরেকটি নাম 'আলহামদু শরীফ'। এক কথায় বলতে গেলে- পুরো কোরআন শরীফের সারবস্তু সূরায়ে ফাতিহায় নিহীত বা পুরো কোরআন শরীফ হলো সূরায়ে ফাতিহার ব্যাখ্যা। তাই এ সূরাকে কোরআনের মা বলা হয়েছে। আয়াত সংখ্যা ৭ এবং রুকু সংখ্যা ১। 'আল ফাতিহা' সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। নবীজি সঃ এর নবুওয়াত লাভের একেবারেই প্রথম যুগের সূরা। আসলে এ সূরাটি হচ্ছে একটি শ্রেষ্ঠ দোয়া। এই দোয়া আমাদের প্রতিদিন পাঠ করা উচিত।
যদি যথার্থই 'আল কোরআন' থেকে আপনি লাভবান হতে চান, তাহলে সারা বিশ্বজাহানের মালিক আল্লাহর কাছে দোয়া এবং সাহায্য প্রার্থনা করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নাই। বান্দা দোয়া করেঃ হে মহান প্রভু! আমাকে পথ দেখাও। জবাবে আল্লাহ বলেন, কুরআন তোমার সামনে। এই কোরআন তোমাকে হিদায়াত ও সঠিক পথের নির্দেশ দিবে। আল্লাহর রাসূল এরশাদ করেন, এ সূরাটি আরশের নিম্নস্থিত ভান্ডার থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। (সুবাহানাল্লাহ)
সূরা ফাতিহা বাংলায় উচ্চারনঃ
আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’লামীন আর রাহমানির রাহীমি। মালিকি ইয়াওমিদ্দীন, ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তাঈন, ইহ্দিনাস সিরাতাল মোস্তাকীম, সিরাতাল্লাজীনা আন-আমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দোয়াল্লিন। আমীন।
আসুন জেনে নিই এই সূরার বাংলা অর্থঃ
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে। যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। যাবতীয় সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। তিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা। তিনি অনেক মেহেরবান ও দয়ালু। শেষ বিচারের দিনের একমাত্র অধিপতি। আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। আমাদের সরল পথ দেখাও হে প্রভু। সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
সূরা আল-ফাতিহার প্রথম তিনটি আয়াতে আল্লাহর প্রশংসার বর্ণনা করা হয়েছে।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে প্রতি রাকাতে 'সূরা ফাতিহা' পাঠ করতে হয়, পাঠ করা ওয়াজিব। খাটি মুসলমানরা বলেন, হে আল্লাহ! আমাদেরকে সরল পথ দান করুন। কেননা সরল পথের সন্ধান লাভ করাই সব চাইতে বড় জ্ঞান ও সর্বাপেক্ষা বড় কামিয়াবী। সরল পথের সন্ধানে ব্যর্থ হয়েই দুনিয়ার বিভিন্ন জাতি ধ্বংস হয়েছে। নবীজি বলেছেন, যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা বুঝতে পারলো- সে গোটা কোরআন শরীফ ও ইসলামকে বুঝতে পারলো। নবীজি আরো বলেছেন হে মুমিন, তোমরা সূরা ফাতিহা বারবার পড়ো।
কোন বান্দা যখন বলে, আলহামদুলিল্লাহি রাবিবল আলামীন
তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে।
বান্দা যখন বলে, আর-রহমানির রহীম
তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণ বর্ণনা করেছে।
বান্দা যখন বলে, মালিকি ইয়াউমিদ্দীন।
আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করেছেন।
বান্দা যখন বলে, ইয়্যাকানা’বুদু ওয়া ইয়্যা কানাস্তাইন,
আল্লাহ বলেন, এ হচ্ছে আমার ও আমার বান্দার মাঝের কথা। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়।
বান্দা যখন বলে, ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম.. (শেষ পর্যন্ত)।
আল্লাহ বলেন, এসব হচ্ছে আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়।
( যে কারনে এই পোষ্ট লিখলামঃ আজ খুব ভোরে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। তখন ইউটিউবে সূরা আল ফাতিহা শুনলাম। উচ্চারণ, বাংলা অনুবাদ অর্থসহ। বেশ লাগলো। হুজুরের গলা সুন্দর ছিলো। তারপর এই সূরার শানে নুযুল পড়লাম। খুব ভালো লাগলো। তখন ভাবলাম, ব্লগারদের সাথে শেয়ার করি। ইচ্ছা আছে প্রতিটা সূরা নিয়ে লিখব।)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৪