somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

বইয়ের কথা

১৭ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আদর্শ হিন্দু হোটেল বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়।
রাণাঘাটে আদর্শ হিন্দু হোটেল বাস্তবেও রয়েছে, এবং সে থেকেই বিভূতিভূষণ এই উপন্যাস রচনার ইন্ধন নেন। লেখক পাচক হাজারি ঠাকুরকে অবহেলিত নায়ক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। পদে পদে তার জীবনের দারিদ্র্য, গঞ্জনা, অবহেলা নিয়েই কাহিনীর পথচলা। আর সেই পথচলায় তার সঙ্গ দেয় একটাই স্বপ্ন- তার নিজের হোটেল হবে, যেখানে বাইরে লেখা থাকবে- ''হাজারি চক্রবর্তীর হিন্দু হোটেল, রাণাঘাট। ভদ্রলোকদের সস্তায় আহার ও বিশ্রামের স্থান। আসুন! দেখুন!! পরীক্ষা করুন''!!!

হাজারি ঠাকুরের সাথে নিজের জীবনের মিল পাই।
১৯৪০ সালে বইটি প্রকাশ পেয়েছিল। তখন ভারতে চলছে ইংরেজ শাসনামল। উপন্যাসে দেখা পাই পদ্ম ঝি, বেচু চক্কোত্তি, মতি চাকর প্রভৃতির। এদের জীবনটা ঘিরে থাকে হোটেল, রান্না-বান্না, খদ্দের, হোটেলের মানরক্ষা এবং উত্তরোত্তর উন্নতি; সাথে অবশ্যই ফাঁকফোঁকর দিয়ে নিজের আয় বৃদ্ধি ও উপরি পাওনা। হাজারি অন্যদের মতো নয়, সে তার কাজের সাথে অত্যন্ত সৎ। কিন্তু তার সরলতার সুযোগ নিয়ে পদ্ম ঝি তাকে প্রায়ই উপহাস করে এবং ঠকাতেও ছাড়ে না। একদিন হোটেলের বাসনকোসন চুরি যায়। হাজারির উপরই দোষ চাপানো হয় এবং সে এই চাকরিটি হারায়।

কয়েদী নিমাই ভট্টাচার্য।
যে খুনী, সে সাজা পেয়ে জেল থেকে বেড়োলেই কি তাকে কেউ বরণ করে নেয়? জানতে হলে এই বই পড়তেই হবে। অসাধারন একটা বই। সবাই শুধু 'মেমসাহেব' নিয়ে কথা বলে। মেমসাহেব থেকেও অনেক সুন্দর এই বই 'কয়েদী'।

ক্রাচের কর্নেল শাহাদুজ্জামান।
বাংলা একাডেমী পুরস্কারপ্রাপ্ত বই। বাংলাদেশের কর্নেল তাহেরের জীবনের মুক্তিযুদ্ধকালীন ও তার পরবর্তী সময়ের জানা-অজানা ঘটনার প্রেক্ষিতে এই বই। মুক্তিযুদ্ধের আরও বই আছে সাথে এটাও জানার জন্যে সকলের পড়া উচিত। ৩৫০ পৃষ্ঠা জুড়ে একজন কর্নেল তাহেরের জীবন মানচিত্র অঙ্কন ছাড়াও লেখক পাক-ভারত দেশবিভাগ, মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ব, মুক্তিযুদ্ধকালীন ও তার পরবর্তী সময়ের জানা-অজানা অনেক পরিপ্রেক্ষিত এবং নায়ক-খলনায়কের সাথে পাঠকের পরিচয় ঘটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কর্নেল তাহেরের প্রতি ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এক ধরনের আক্ষেপ সৃষ্টি হয় মনে। ফাঁসিতে ঝোলানোর আগের বর্ণনা পড়ে কান্না পেয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। এক আদিম বিষণ্নতায় মন দ্রবীভূত হয়ে যেতে বাধ্য।

বাদশাহ নামদার হুমায়ূন আহমেদ।
আমার প্রিয় একটা বই। মুঘল সম্রাট হুমায়ূনের বৈচিত্র্যময় শাসনকাল, তার চরিত্রের খামখেয়ালিপনা এবং তার চারপাশের বহুবর্ণের বিচিত্র মানুষকে ইতিহাসের পাতা থেকে হুমায়ূন আহমেদ তার এই উপন্যাসে চিত্রিত করেছেন। সুন্দর ও সাবলীলভঙ্গিতে মুঘল সম্রাজ্যের চমকপ্রদ উপস্থাপনে এ উপন্যাসে ইতিহাস জীবন্ত হয়ে পাঠকের সামনে উন্মোচিত হয়েছে।

সপ্তপদী তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়।
ভালবাসার জন্যে ধর্মকে ছেড়ে দেয় অথচ সেই ভালবাসা বিনিময়ে কী দিয়েছে, জানতে হলে মাস্ট রিডিং। বলা বাহুল্য, এই বইটা আমি কয়দিন আগেই শেষ করেছি। পৃথিবী শুধু জল আর মাটি নয়, তার বাহিরেও একটি সীমানা আছে। মাটির ওপরে আকাশের নিচে মানুষ আছে, আর সেই মানুষের মন নামক এক আবেগীয় অনুভূতিময় বস্তু আছে। "যাকে তুমি ভালোবাস, তার মুখটি দেখে তুমি তার পরানের সুখ-দুখটি বুঝতে পার কি না? পার তো! ভালোবাসলে পরানের কথাটি মুখ দেখে বোঝা যায়"। সপ্তপদী উপন্যাসের এক দুর্দান্ত উক্তি। উত্তম সুচিত্রার এই নামে সিনেমাও আছে। সেটিও দারুন তবে উপন্যাস আর সিনেমার মধ্যে রয়েছে চোখে পড়ার মত ফারাক। সমাজের ধর্মের যে প্রকট আধিপত্য কিংবা ধর্মের নামে অধর্মের যে লেলিহান শিখা দাউ দাউ করে ছারখার করে দেয় সব কিছু সেই আগুনের উত্তাপে অঙ্গার উপন্যাসের নায়ক কৃষ্ণেন্দু আর নায়িকা রিনা ব্রাউন। ভালোবাসার মাঝে প্রকান্ড দেয়াল ধর্ম, সে দেয়াল টপকানোর সাধ্যি কার? ভালোবাসার মানুষকে কি সহজেই ভোলা যায়?
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:৩৮
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×