টম অ্যান্ড জেরির নির্মাতা আসলে দুইজন- উইলিয়াম হ্যানা আর জোসেফ বারবারা। দুজনেই মেট্রো গোল্ডউইন মায়ার নামের সিনেমা কোম্পানিতে কাজ করতেন। এই কোম্পানির জন্যই তারা কার্টুনটি তৈরি করেছিলেন। এখনো এই কোম্পানিই কার্টুনটি তৈরি করে। উইলিয়াম হ্যানা আর জোসেফ বারবারা অবশ্য আর টম অ্যান্ড জেরি নির্মাণ করেন না। তারা দু’জনেই যে মারা গেছেন। উইলিয়াম হ্যানা ২০০১ সালে, আর জোসেফ বারবারা মারা গেছেন ২০০৬ সালে।
উইলিয়াম হ্যানা আর জোসেফ বারবারা মেট্রো গোল্ডউইন মায়ার, সংক্ষেপে এমজিএম কোম্পানির রুডলফ আইসিং ইউনিটে কাজ করতেন। হ্যানা গল্প বানাতেন আর ক্যারেক্টার ডিজাইন করতেন; বারবারা পরিচালনা করতেন।
১৯৩০ সাল। ইউনিটটি খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই। তাদের কার্টুন সিরিজ ক্যাপ্টেন অ্যান্ড দ্য কিডজ চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। হ্যানা আর বারবারা আলোচনায় বসলেন, এবার কী নিয়ে কার্টুন বানানো যায়। বারবারা ঠিক করলেন, ইঁদুর আর বিড়ালের লড়াই নিয়ে একটা কার্টুন বানানো যাক; নাম দিলেন ‘পুস গেটস দি বুট’। গল্পের বিড়ালের নাম ঠিক হলো জ্যাস্পার, ইঁদুরের নাম জিংক্স। কার্টুনটির গল্পটাও ছিল ভীষণ মজার; জ্যাস্পার জিংক্সকে ধরার জন্য ওকে তাড়িয়ে ফিরছে। হঠাৎ ধাক্কা লেগে একটা ফুলের টব ভেঙে গেল। আর যায় কোথায়, জ্যাস্পারের আফ্রো-আমেরিকান মালকিন চিৎকার করে উঠলেন- আরেকটা কিছু যদি ভাঙে, তোমাকে এক্কেবারে বের করে দেব। ভয়ে তো জ্যাস্পারের বুক শুকিয়ে গেল। আর জিংক্সও মজা পেয়ে গেল। ও ঘরের মধ্যে ভাঙার মতো যা কিছু আছে, সব ফেলে দিতে লাগলো। আর জ্যাস্পার জান-প্রাণ দিয়ে সে সব ধরতে লাগলো।
এত্তো সুন্দর গল্পের একটা কার্টুন, কিন্তু এমজিএমের সহকর্মীরা কিন্তু হ্যানা-বারবারার এই কার্টুন নিয়ে তেমন আশাবাদী হতে পারলো না। ওরা বললো, এ আর এমন কী? ইঁদুর-বিড়ালের সেই পুরোনো একঘেঁয়ে গল্প।
১৯৪০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি, মুক্তি পেল পুস গেটস দ্য বুট। মোটামুটি ব্যবসাও করলো। কিন্তু তাতে লাভ হলো কী, হ্যানা- বারবারাকে ইঁদুর- বিড়ালের এই মজার কার্টুন বানাতে না দিয়ে গ্যালোপিং গ্যালস আর অফিসার পুচ নামের দুটো কার্টুনের কাজ দেয়া হলো।
কিন্তু সব হিসেব উল্টে গেল, যখন ১৯৪১ সালের অস্কারে মনোনয়ন পেল পুস গেটস দি বুট। অবশ্য শেষ পর্যন্ত কার্টুনটি অস্কার জেতেনি, অস্কার জোটে এমজিএমেরই আরেক কার্টুন দ্য মিল্কি ওয়ে’র কপালে। কিন্তু প্রযোজক ফ্রেড কুইম্বির মত পাল্টানোর জন্য মনোনয়নই যথেষ্ট ছিল। তিনি তড়িঘড়ি করে হ্যানা-বারবারাকে ডেকে ইঁদুর- বিড়ালের গল্প নিয়ে কার্টুনটির সিরিজ বানাতে বললেন। ওরাও হাতের কাজ ফেলে ওদের প্রিয় সিরিজটি বানানোর কাজে হাত দিলেন।
এখন সিরিজটির তো একটা নাম দেয়া দরকার। কী নাম দেয়া যায়, বলো তো? কেউই নাম ঠিক করতে পারছিল না। তখন তারা একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করলেন; যার নাম নির্বাচিত হবে, সে পাবে ৫০ ডলার। জন কার নামের এক অ্যানিমেটর টম অ্যান্ড জেরি নাম দিয়ে জিতে নিলেন ৫০ ডলার।
এবার হ্যানা-বারবারাও পুরোদমে কাজ শুরু করে দিলেন। ১৯৪১ সালেই মুক্তি পেল টম অ্যান্ড জেরির প্রথম কার্টুন- দ্য মিডনাইট স্ন্যাক। আর এরপর থেকে হ্যানা-বারবারা টম অ্যান্ড জেরি ছাড়া অন্য কোনো কাজে বলতে গেলে হাতই দেননি, সারা জীবন টম অ্যান্ড জেরি-ই বানিয়ে গেছেন। আর তাদের এই কাজের এমনই যাদু, এখনো ছেলে-বুড়ো সবাই টম অ্যান্ড জেরি বলতে পাগল। হলো তো টম অ্যান্ড জেরির গল্প শোনা? আমি তাহলে এবার টম অ্যান্ড জেরি দেখতে বসলাম, কেমন?

আলোচিত ব্লগ
সুগন্ধে ভাসচ্ছে প্রাণ
আজ আকাশে মুক্ত বাতাসের ঘ্রাণ-
রক্ত মাটিতে- ফুটেছে লাল গোলাপ!
হাতে হাতে উড়ছে লাল সবুজের পতাকা;
তুমি মা, ফিরছো বলে- আনন্দে বয়ছে-
চির সবুজে, জনসমুদ্রে,শ্লোগানে বাংলাদেশ;
তুমি সাদা, নীল মেঘ- তুমিই চিরঞ্জীব!
তোমার আদর্শেই ঘুরছে দামাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
জুম্মাবার
জুম্মাবার
সাইফুল ইসলাম সাঈফ
প্রতি শুক্রবার ইমাম এর নেতৃত্ব
মেনে নিয়ে আমরা মুসলিমরা
হই একত্রিত, হই সম্মিলিত
ভুলে যাই সবাই হৃদয় ক্ষত!
খুতবা শুনি আমরা একাগ্রচিত্তে
চলে আসি সকলে একই বৃত্তে।
কানায় কানায় পরিপূর্ণ প্রতিটি মসজিদ
ঐক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
আসলে "ওরফে গফুর" এর উদ্দেশ্য কি....
আসলে "ওরফে গফুর" এর উদ্দেশ্য কি....
'ওরফে গফুর' এর লেখা আমি বহুবছর থেকেই পড়ি। ওনার লেখা পড়ে ওনার মতবাদ, আদর্শে আমি বিভ্রান্ত হয়েছি বারবার। কারণ, কোন এক পত্রিকায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষেরা একজোট হতে চাই
ভারত - পাকিস্তান যুদ্ধ বন্ধে কি করতে পারি আমরা? একজন নীতিবান, যুদ্ধবিরোধী ও মানবতাবাদী মানুষ হিসেবে একক এবং সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে আমরা অনেক কিছু করতে পারি। চলুন নিচে দেখা যাক... ...বাকিটুকু পড়ুন
অপারেশন সিদুঁর বনাম অপারেশন নারায়ে তাকবীরের নেপথ্যে !
বলতে না বলতেই যুদ্ধটা শুরু হয়ে গেল। না, যুদ্ধ না বলাই ভালো—রাষ্ট্রীয় অভিনয় বলা ভালো। ভারত ও পাকিস্তান আবার সীমান্তে একে অপরকে চেঁচিয়ে বলছে, "তুই গো-মূত্রখোর ", "তোর দেশ জঙ্গি"।... ...বাকিটুকু পড়ুন