somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রবীন্দ্রনাথের কোনো বিকল্প নাই- ৭১

২৮ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইউরোপের রাজনৈতিক আকাশে তখন দুর্যোগের কালোমেঘের ছায়া যা সচেতন মানুষের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।ঠিক এ সময়ে 'গীতাঞ্জলি'র কবিতায় রবীন্দ্রনাথ মানুষের জন্য আনেন বিশ্বাস, ভালোবাসা ও নির্ভরতার বাণী।সর্বশক্তিমানকে চিনিয়ে দেন ঘরের মানুষ হিসেবে। বলেন,ভালোবাসার মধ্য দিয়েই ঈশ্বর ও মানুষের পরস্পর নির্ভর সম্পর্ক ।'গীতাঞ্জলি'তে গভীর আত্মানুভূতির বাণী এমন সহজতম ভাষায় লিখিত যা কদাচিৎ দেখা যায় ।কবিয়াল বিজয়ের কণ্ঠ ধার করে গেয়ে উঠি—‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ কে বলে আজ নেই/এই মহাদেশে পূর্ণ পৃথিবীর/দেখি তারে যেদিকে চাই॥’

রানু-রবীন্দ্রনাথ অথবা কাদম্বরী দেবী সম্পর্ক নিয়ে বা্ঙ্গালী সমাজের অস্বস্তি এতকাল পরও মিলিয়ে যায়নি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, "বিলাতে রাস্তার দুষ্ট বালকেরা কৌতুক করিবার জন্য কুকুরের ল্যাজে ঝুমঝুমি বাঁধিয়া ছাড়িয়া দেয়। সে যেখানেই চলে, শব্দ হয় এবং তাহার পেছনে ভিড় জমিতে থাকে। আমার নামের পেছনে সেই রকমের একটা ঝুমঝুমি বাঁধা হইয়াছে। চলিতে গেলেই শব্দ হয় এবং লোকের দৃষ্টি পড়ে । রবীন্দ্রনাথ অতি তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয়কেও এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যা রীতি্মতো শৈল্পিকগুণে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে ।এটা হচ্ছে যে কোনো বিষয়কে একটু আলাদাভাবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি ।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে 'রক্ত করবী' বিষয়ে উচ্চভিলাষী ছিলেন, রচনা হিসেবে একে বিশেষ গুরুত্ববহ মনে করেছিলেন তার পরিচয় মেলে যখন তিনি 'রক্ত করবী' রচনাকালেই এর ইংরেজী অনুবা্দের কাজ করেছিলেন । সম্ভবত নাটকের ষষ্ঠ খসড়া অবলম্বনে শুরু হয়েছিল অনুবাদের কাজ এবং খুব আশ্চর্যজনকভাবে, বাংলা ভাষ্য প্রকাশের আগেই বের হয় ইংরেজি অনুবাদ 'দি রেড অলেন্ডার্স। ১৯২৪ সালে বিলাতের ম্যাকমিলান্ অ্যান্ড কোম্পানি প্রকাশ করে ইংরেজি ভাষ্য ।আর বাংলায় 'রক্ত করবী' প্রকাশ পায় পরের বছর। ১৯২৩ সালে রক্ত করবী রচনা ও অনুবাদকালে জাপানি তরুণী টোসিকো ওয়াডার কাছে পত্রে রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছিলেন যে, তিনি সম্প্রতি একটি নাটক লেখা শেষ করেছেন এবং অচিরেই তা ইংরেজিতে প্রকাশ পাবে ।

এই নাটক আমাদের সামনে মেলে ধরে পুরো পৃথিবীর এক সহজ স্বচ্ছ চিত্ররূপ ৷ যার মধ্যে একদিকে পরিস্ফুট ভারতীয় মানস ও তার মৌলিক দ্বন্দ্ব; অপর দিকে প্রকাশিত গোটা পৃথিবীর এক অভিনব মৌল দিক নির্দেশনা-যা ধাবমান আগামীর আগমনী গানের সঙ্গে, বর্তমানের অমীমাংসিত দ্বন্দ্বের চলমানতায় ৷শোষিত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে দুর্বার আন্দোলনেই ঘটেছে রবীন্দ্রনাথের এ-নাটকের পরিসমাপ্তি ৷ যদিও তার ভেতরে ছিল কৃষিনির্ভর সভ্যতায় ফিরে যাবার আকাঙ্ক্ষা; তবু সে-আকাঙ্ক্ষায় ছিল না সামন্ততন্ত্রের আবেদন ৷ তাতে ছিল প্রকৃতির প্রাকৃতিক সরলতায় ফিরে গিয়ে মনুষ্যত্বের পূর্ণ বিকাশ সাধনের অঙ্গীকার ৷

রবীন্দ্রনাথের মত এত এত গল্প এবং এত উচ্চমানের গল্প যে আর কেউ লিখতে পারেননি সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহই নেই।রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পে রবীন্দ্রনাথ অনুপস্থিত। দুই-একটা গল্প হয়ত আলাদা যেমন, পোস্টমাস্টার, বোস্টমী, কাবুলিওয়ালা।এই যে এভাবে নিজেকে… আত্মগোপন করে রাখা, এটা বলতেই হবে যে অসাধারণ একটা বিষয়। আর বাংলা সাহিত্যের প্রথম আধুনিক উপন্যাস বলা হয় চোখের বালিকে এবং এখনও পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কোনো আধুনিক উপন্যাসের কথা বললে প্রথমেই চলে আসে চোখের বালি’র নাম।

"শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুঁই আর সবই গেছে ঋণে।/ বাবু বলিলেন, “বুঝেছ উপেন? এ জমি লইব কিনে।” শাস্ত্রে লেখা আছে প্রথমে 'নার্জিতং বিদ্যা, দ্বিতীয়ে নার্জিতং ধন, তৃতীয় নার্জিতং পুণ্য, চতুর্থ নার্জিতং কিং করিস্যতি'। এর অর্থ হলো যে পথের জীবনের বিদ্যা অর্জন করল না, দ্বতীয় পর্বে মানে যৌবনকালে ধন সম্পদ অর্জন করল না, তৃতীয় পর্বে বয়েসকালে পুণ্য অর্জন করতে পারল না, বৃ্দ্ধ বয়সে তার পরিণতি কী হবে ? রবীন্দ্রনাথ এমন এক ব্যক্তি যাঁর প্রভাব কোন বাঙালির জীবনে নেই–এটা হতেই পারে না। রবীন্দ্রনাথ দেশভাগ দেখেননি। তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধও দেখেননি। কিন্তু তাঁর বহু গল্পে মানুষের জীবনের, মানুষের রাষ্ট্রের ও সমাজের এমন কিছু কথা বলা হয়েছে যেগুলো চিরকালীন।

একবার গ্রীষ্মকালে রবীন্দ্রনাথের কাছে গিয়েছিলাম। খুব গরম সেদিন। তিনি আমার ঘর্মাক্ত কলেবর দেখে জিজ্ঞেসা করলেন -- "খুব গরম লাগছে বুঝি? পাখার কাছে একটু সরে বস।" তারপর একটু হেসে বললেন, "এখন এখানে ইলেকট্রিসিটি হয়েছে, আগে তো কিছুই ছিল না। ঘোর গ্রীষ্মে তখন কতদিন কাটিয়েছি এখানে--"
বললাম, "কষ্ট হ'ত নিশ্চয় খুব"-- হেসে উত্তর দিলেন, "না, খুব কষ্ট হ'ত না। গরম নিবারণের একটা খুব ভাল ওষুধ জানা আছে আমার।" জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চেয়ে রইলাম তাঁর দিকে। বললেন--"কবিতা লেখা। বেলা বারোটার সময় একটা কবিতা লেখা শুরু করলে সমস্ত দুপুরটা যে কোন দিক দিয়ে কেটে যায়--জানতেও পারি না। হঠাৎ দেখি বিকেল হয়ে গেছে।" [আপনাদের বলতে হবে গল্পটি কার লেখা।

( চলবে....)
৩৭৫ বার পঠিত
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভিসা বন্ধ করায় ভারতকে ধন্যবাদ।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩



ভারত ইদানীং ভিসা দিচ্ছেনা; তারা ভিসা না দিয়ে আমাদেরকে শিক্ষা দিতে চায়! তাদের করদ রাজ্য হাতছাড় হওয়া খুবই নাখোশ, এতোই নাখোশ যে মোদী মিডিয়া দিনরাত বয়ান দিচ্ছে এই দেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের চিকিৎসা বয়কট এবং

লিখেছেন পবন সরকার, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৬


ভারতের এক হাসপাতাল ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কোন রুগিকে তারা চিকিৎসা দিবে না। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যে হাসপাতাল থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে সেই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার জন্য বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। চামচা পুঁজিবাদ থেকে চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল দেশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:১৩






চামচা পুঁজিবাদ থেকে দেশ চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা মিলে চোরতন্ত্র করেছে।

সোমবার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাবে তবে............

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪২


শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে বিচারের জন্য ভারতের কাছে ফেরত চাইতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশকে প্রতিহিংসামূলক বিচারপদ্ধতি বাদ দিতে হবে। বিচারে শেখ হাসিনা যাতে ন্যায় বিচার পান বাংলাদেশকে আগে তা নিশ্চয়তা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত সোনার ডিম পাড়া হাঁস হারিয়েছে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৫২



শেখ হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র-অপপ্রচার করছেন। ভারত চাচ্ছে বাংলাদেশে একটি অশান্তি হোক। কারণ ভারত একটি মসনদ হারিয়েছে। সোনার ডিম পাড়া হাঁস হারিয়েছে।

আওয়ামী লীগ প্রতিদিন একটি সোনার ডিম পেড়ে নরেন্দ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×