ভালোই তো! নিরাপদ হইয়া গেলাম। খারাপ না। কেমনে নিরাপদ হইলাম নিজেও জানি না। ভালোই তো! খারাপ কি! আমার বাবার এক বন্ধুর কথা বলি। বাস্তব জীবনের সচিত্র কৌতুক।
ছোট থাকতে মানুষ কত কি না করে! আমার বাবার এক বন্ধু আছে। কি এক ঘটনায় জানি উনি মনে খুব কষ্ট পাইলেন। উনাদের বয়স তখন পাচ ছয় বছর। তা আমার সেই চাচাজান মনে কষ্ট পাইয়া ঠিক করলেন আত্মহত্যা করবেন। সেই জন্য তিনি একটা রশি নিলেন আর এক বদনা পানি নিলেন। পরে উনি বেগুন খেতে যাইয়া বেগুন গাছের সাথে রশি বাইন্ধা গলায় দড়ি দিলেন। উনি নিজের প্রতি নিজে এতটা নির্মম, তাই বলে বেগুন গাছ তো আর এত নির্মম হইতে পারে না। তাই উনি গলায় দড়ি দিয়া বেগুন গাছের নীচে শুইয়া শুইয়া মৃত্যুর অপেক্ষা করতে লাগলেন আর বদনার নল দিয়া পানি খাইতে লাগলেন কিছুক্ষন পর পর। সকালবেলা উনি দড়ি দিলেন কিন্তু বেলা গড়াইয়া বিকাল হইয়া গেল উনার আর আত্মহত্যা হয় না। উনি বদনার পানি খাইয়া শেষ কইরা গলায় রশি সহ ঘুমাইয়া গেলেন কোন ফাকে। হৃদয়বান বেগুন গাছ উনাকে সুশীতল ছায়া দিয়া আগলে রাখল। বালকের কষ্ট এই পৃথিবীর মানুষেরা না বুঝলেও বেগুন বৃক্ষ তাহা বুঝিল। সারাদিন খোজ না পাইয়া সবাই উনারে নানা জায়গায় ব্যাপক খোজাখুজি কইরা বেগুন গাছে নীচে গলায় দড়ি দেওয়া ঘুমন্ত অবস্থায় আবিষ্কার করিল। উনার পাশে খালি বদনাটি জীবনের অন্তঃসারশুণ্যতা বুঝাইতেই হয়ত খালি হইয়া বসিয়া ছিল।
পরবর্তীতে উনাকে অনেক বাবা সোনা ডাকিয়া আদর করিয়া এই জঘন্য আত্মহত্যার পথ হইতে সকলে অনেক চেষ্টা করিয়া ফিরাইয়া আনিল।
বালকের মনের দুঃখ কেউ না বুঝিলেও বেগুন গাছ বুঝিয়াছিল। আসুন আমরা সকলে বেগুন ভাজি খাই আর বলি,
হে বেগুন বৃক্ষ তুমি দিয়াছ জীবন
তুমিই বুঝিলে শুধু বালকের মন