ব্লগার নুরুজ্জামান মানিক কে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছু নেই। অন্তর্জালে এবং মূলধারার গনমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে ক'জন নিরন্তর গবেষনা এবং লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে নুরুজ্জামান মানিক অন্যতম। কোন রাজনৈতিক দলের ধ্বজাধারী বা ব্যক্তিপূজার ইতিহাসচর্চা নয়, বরং নিরপেক্ষভাবে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামকে তুলে ধরার প্রয়াসই তাঁকে বিশিষ্ট করে তুলেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ইবুক - মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১, ডিসেম্বরের দিনগুলি।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মা্সে ভারতের পশ্চিম ফ্রন্টে পাকিস্তানের সরকারী উস্কানিমূলক আক্রমন পাক-ভারত যুদ্ধের সূচনা করে। এ ঘটনার মাধ্যমেই ভারত প্রথমবারের মত সরাসরি বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধ শুরু করার সুযোগ পায়। ডিসেম্বর মাসে একদিকে মিত্রবাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমনের মুখে বাংলার মাটি একটু একটু করে শত্রুমুক্ত হতে শুরু করে। অন্যদিকে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা বাংলারই কিছু কুলাঙ্গার সন্তানদের দিয়ে নানা প্রোপাগান্ডা প্রচার আর তথাকথিত পরাশক্তিগুলোর সহায়তা নিয়ে শেষ মরণকামড় দেবার প্রস্তুতি নিতে থাকে।
বাঙালি জাতির জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন এই ১৬টি দিনের প্রতিদিনকার ঘটনাবলীকে সংক্ষেপে বর্ননা দিয়ে এ মাসের শুরু থেকেই আমারবন্ধুডটকমে নুরুজ্জামানের একটি ধারাবাহিক লেখা প্রকাশিত হচ্ছিল। এই লেখাগুলোই সংকলন আকারে এসেছে ইবুকটিতে। এখানে ব্লগার মানিক সেই ইতিহাস তুলে ধরেছেন যা সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে মাধ্যমিক পাঠ্যপুস্তক বা সরকারী টেলিভিশন চ্যানেলের মত বদলে যায় না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইবুকটি এবারের ফেব্রুয়ারির মেলায় বই আকারেও প্রকাশিত হবে।
রাজনীতিবিদদের ভন্ডামি, পদে পদে দূর্নীতি আর একাত্তরের পরাজিত কুৎসিতদের শকুনদের দ্বারা আক্রান্ত বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর একমাত্র উপায় নতুন/পুরোনো সব প্রজন্মের মানুষের মধ্যে আরও একবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ফিরিয়ে আনা। আর চেতনা ফিরিয়ে আনতে হলে সেই উত্তাল সময়টার সাথে ভালভাবে পরিচয় জরুরী। ব্লগার মানিককে আন্তরিক সাধুবাদ তাঁর এই পরিশ্রমী প্রচেষ্টার জন্য।
বইটি নিজে পড়ুন এবং অবশ্যই পরিবার ও আশেপাশের নতুন প্রজন্মকে পড়তে উৎসাহিত করুন।
ইবুকের লিঙ্ক