somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্ধুত্বের গল্প

২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-Why should I always do whatever you want?
-ভালোবাসিস তাই
.
রূপম বসে অনন্যার কথা ভাবছে। অনন্যার সাথে তার বন্ধুত্ব সম্পর্ক অনেকদিনের। হঠাৎ করে অনন্যা অন্য কাউকে ভালোবাসে জেনেও সে তার উপর দুর্বল হয়ে পড়ে। সে পর্যায়ে নিজেকে যতটুক বুঝিয়েছে আর কোনোদিন এভাবে বোঝায়নি। আসলে অনুভুতির কাছে ম্যাচিওরিটি অর্থহীন।
.
নিজেকে বোঝাতে বোঝাতে অনন্যার থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। অনন্যা বুঝতে পেরে হঠাৎ তাকে জিজ্ঞাস করে।
.
ঐদিন পার্কে কেউ ছিলো না।রূপম ভাবছে কি বলবে। একটা গাছের ডালে তাকিয়ে দেখছে সে। অনন্যা বার বার জিজ্ঞাস করছে 'দোস্ত তুই কি আমায় ভালোবাসিস?' রূপম জানেনা কি বলবে। কিছুক্ষন পর রূপম কিছু না বলে চলে গেলো।
পরেরদিন অনন্যা তাকে কল করলে সে লজ্জার সুরে সব কথা ভেঙ্গে বললো। রূপম জানতো এখানেই বোধয় তাদের বন্ধুত্বের ইতি। 'বেস্ট ফ্রেন্ড' নামক সেই সুন্দর সম্পর্কের বাঁধ ভেঙ্গে ফেলেছে। ফোনের দুই প্রান্তই নির্বাক। কারও কাছে বলার কিছু নাই..
হঠাৎ অনন্যা-
-ক্যান ভালোবাসলি আমায়?
-.......
-বল কিছু রূপ.. চুপ করে থাকিস না
-জানিনা। কিভাবে যেনো হয়ে গেছে।
-আমার মধ্যে এমন কি আছে যে তোকে আমারই প্রেমে পড়তে হবে?
-তোর মনটা হলেই হবে।
-জানিসই তো আগামী বছর আমার চিটাগাং চলে যেতে হবে। তুই এমন কিছু কিভাবে এক্সপেক্ট করলি?
-দোস্ত যা তো তুই! তোর কাছে কিছু চাইসি? এক পাক্ষিক কিছু তো হতেই পারে। চলে যাবে অনুভুতিটা, চিন্তা করিস না।
.
হালকা হাসি দিয়ে অভ্যন্তরীণ অনুভূতিগুলো লুকিয়ে চলে যেতে লাগলো রূপক। তখনই পেছন থেকে অনন্যা ডেকে বললো..
-রূপ দাঁড়া
-হুম বল
-দোস্ত তুই আমার কথা জানিসই। আমি তোকেও বন্ধু হিসেবে অনেক ভালোবাসি।তুই আমার লাইফ থেকে হারিয়ে যাস না প্লিজ..
.
রূপম জানতো না যে 'বন্ধু' শব্দটার জন্য তার জীবনে এত কষ্ট পেতে হবে। তবুও সে ম্লান গলায় হাসি দিয়ে বললো
-কই যাবো আমি? হু যেতে পারি। তোর সাথে আগামী বছর চিটাগাং।
-দোস্ত জীবনটা এখনও অনেক বাকী রে। দেখিস তুই আমার চেয়ে অনেক ভালো কাউকে পাবি। তুই অনেক ভালো রে। আসলে আমিই তোকে ডিজার্ভ করি না।
.
কথাগুলো কাঁটার মত বিঁধছিলো রুপমের মনে। কিছু না বলে সে চলে গেলো। কলেজেও আসে না অনেক দিন। কারও ফোন রিসিভ করে না। বাসায় যতবারই গেছে, গিয়ে শুনতে পায় মামার বাড়িতে সে।
হঠাৎ একদিন অনন্যার ফোনে তার বান্ধবীর ফোন আসে..
-দোস্ত রূপমের কথা শুনছিস?
- না তো! কি হইসে!?
-ওয় তো সুইসাইড এটেম্পট করসে
.
ম্যাসেজের রিপ্লাই না দিয়ে ক্রমান্বয়ে রূপমের মোবাইলে কল দিতে থাকে সে। সে কল রিসিভ করে না। ৫৭টা কল দেয়ার পর রূপম ঘুম কাঁতর হয়ে কল রিসিভ করে..
-...
-কই তুই?
-আছি
-কি করছিস?
-হুম
-কি বুঝাইসিলাম তোকে আমি?
-হুম
-হুম হুম করিস ক্যান? কি হইসে?
-কিছুনা
-দোস্ত তোর কিছু হইলে আমাকে নিজের কাছে নিজেকে দোষী বানিয়ে যাবি। প্লিজ দোস্ত বোঝার চেষ্টা কর।
-হুম
-আর কোনোদিন যদি এরকম শুনি তাহলে তোকে থাপ্রাবো
.
আর কিছু বলেনা রূপম। সে অনন্যার চেয়ে অনন্যার শাসন, অভিমান, গালফুলো রাগকে বেশি ভালোবাসে।এখন তার স্লিপিং পিল খেয়ে ঘুমানো আর হাত দিয়ে রক্ত ঝরানো বৃথা মনে হচ্ছে না।
.
সেদিনের পর আর রূপমের খোঁজ পায়নি অনন্যা। হঠাৎ একদিন কলেজে গিয়ে থমকে দাঁড়ায় সে। রূপম এসেছে। অনন্যা তার কাছে গিয়ে রাগ করে দাঁড়ায়। গিয়ে বলে..
-কই ছিলি এতদিন?
.
রূপম লজ্জার সূরে মাথা ঘুরিয়ে নেয়। সে জানে সে যা করেছে সেটা তার করা ঠিক হয় নি।
-বাসাতেই
-কি কি করসিলি?
-কই কিছু না তো!
-তোরে এখন ইচ্ছামত থাপ্রাইতে ইচ্ছা করতেসে। সামনে হকিস্টিক পাইলে ভেঙ্গে ফেলতাম..
-ভুলে করসি দোস্ত। মাফ কর..
.
অনন্যা ঘাড় ঘুরিয়ে অভিমান করে দাঁড়ায়।
-অনু!
-...
-দোস্ত ভুল হইসে তো!
-...
-কথা তো বল!
-গেলাম গা। থাক তুই..
-চল একসাথেই যাই..
.
অনন্যা রূপমের এই মানানো টাকে ভালোবাসে। ফ্রেন্ড হিসেবে সে বয়ফ্রেন্ডের চেয়েও বোধয় বেশি প্রোটেকশন দেয়।
.
অনন্যার মনে আছে। সেদিন রাতে দুজন একসাথে হাঁটার সময় ছিনতাই কারী ধরলে সে নিজের সব কিছু দিয়ে দেয়। তবুও সে অনন্যার দিকে তাকাতে দেয় না।
.
কিন্তু অনন্যা তার প্রতি রূপমের একটু অগ্নোরেন্স সহ্য করতে পারে না।
-রূপ!
-হু
-দোস্ত!
-হু
-কুত্তা!!
-বল
-বাই
-যা..
-বাই বাই
-যা
-টাটা
-হুম
-কি হইসে তোর?
-কিছুনা তো!
-আগের মতো হ..
-হইসি বল
-ফুচকা খাবো। তুই বিল পে করবি..
-আজিবন তো আমিই করি!
-একটা গল্প শোনা..
.
‪#‎বন্ধুত্বেরগল্প‬
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:১৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। পৃথিবীকে ঠান্ডা করতে ছিটানো হবে ৫০ লাখ টন হীরার গুঁড়ো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০২




জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে তাপমাত্রা। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাই উত্তপ্ত এই পৃথিবীকে শীতল করার জন্য বায়ুমণ্ডলে ছড়ানো হতে পারে ৫০ লাখ টন হীরার ধূলিকণা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অচেনা মানুষ আপনাদের দীপাবলীর শুভেচ্ছা

লিখেছেন আজব লিংকন, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:২১



আমারই বুকে না হয় শিবেরই বুকে
নাচো গো... ও নাচো গো...
পবন দা'র গলায় ভবা পাগলার গানটা কারা জানি ফুল ভলিউমে বাজিয়ে গেল। আহ.. সে সুরের টানে বুকের মাঝে সুখের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোরআন পড়বেন, ফিকাহ জানবেন ও মানবেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:০০



সূরাঃ ৯৬ আলাক, ১ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। পাঠ কর, তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
২।সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে
৩। পাঠ কর, তোমার রব মহামহিমাম্বিত
৪। যিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×