ধর্মীয় কিংবা সামাজিক বিধিনিষেধের দোহাই দিয়ে নারীকে অবদমিত রাখা আমাদের মত রক্ষনশীল সমাজের নতুন কোন বিষয় নয়।মধ্যযুগীয় সমাজে নারীর স্বাধীন ইচ্ছা কিংবা মতামতের কোন সুযোগ ছিল না।শিক্ষা আর প্রযুক্তির বিকাশে সে অবস্থার পরিবর্তন ঘটা ছিল অবশ্যম্ভাবী।কিন্তু প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষা ধারীদের সংখ্যা বাড়লেও আমাদের মানষিকতার আয়তন যে সে অনুপাতে বাড়ছে না সেটা বলে দেয়া যায় র্নিদ্বিধায়।যে কারনে নারীর প্রতি আচরনে আমাদের মধ্যযুগীয় ধ্যান ধারনায় পরিবর্তন এসেছে খুব সামান্যই।পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী নিগৃহীত হচ্ছে সবখানে;বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা থেকে প্রত্যন্ত গ্রামের কিশোরী মেয়েটি পর্যন্ত।
এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি যোগ হয়েছে অনলাইন আর বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় নারী অবমাননাকর বিভিন্ন ওয়েবসাইট আর ফেসবুক পেইজ।এবং এটা যে আর উপেক্ষা করার পর্যায়ে নেই সেটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে গেল বাগেরহাটের আমাদের এক কিশোরী বোন সাবিয়া তার আত্মহত্যার মাধ্যমে।তার কিছু সহপাঠী তার ব্যক্তিগত ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়।পরবর্তীতে মানুষরূপী পশু দুই সাংবাদিক তা মিডিয়ায় প্রকাশের হুমকি দেয় এবং এ অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় কিশোরী মেয়েটি।
শুধু গ্রামেই নয়,সম্প্রতি ইউল্যাবের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনা দেশের তরুন সম্প্রদায়কেও দারুনভাবে নাড়া দিয়ে যায়।নারীর প্রতি বিকৃত আচরন যেন থামছেই না।ফেসবুকে অশ্লীল পেইজ খুলে নারীদের নানাভাবে হয়রানী করছে একশ্রেনীর বিকৃতরুচির পুরুষ।এসব পেইজে শেয়ার করা হচ্ছে মেয়েদের ফেসবুক একাউন্টের প্রাইভেসি সেটিংয়ের ফাকফোকর গলিয়ে চুরি করা বিভিন্ন ব্যক্তিগত ছবি।কিংবা গোপন ক্যামেরায় ধারন করা মেয়েদের কোন অসতর্ক মুহূর্তের ছবি।সাথে সাথে তা শেয়ার করা হচ্ছে এসব পেইজে।
এসব পেইজের নামগুলোও নারী অবমাননাকর এবং অত্যন্ত আপত্তিকর।এক শ্রেনীর ধর্মান্ধ ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী এসব কর্মকান্ডের মাঝে উল্টো নারীদের পোষাকের খুত ধরছে এবং একপ্রকারে ইভ টিজিং কিংবা নারীর যৌন হয়রানীর জন্য নারীকেই দায়ী করছে।
স্যোশাল মিডিয়া ও অনলাইনে নারীর প্রতি নানা ধরনের হয়রানী ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে আমাদের একটা শক্তিশালী অন্দোলন গড়ে তোলার এখনই সময়।নাহলে হয়তো একদিন আপনার আমার বোন কিংবা পরিবারের অন্য কেউ একই ঘটনার শিকার হবে।সামাজিক দায়িত্ব এড়িয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই আমাদের।আপনার জায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব, যেভাবেই সম্ভব, প্রতিরোধ করুন এই অন্যায়ের।