somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রামুর ঘটনা; প্রসঙ্গের বাইরের কিছু প্রাসঙ্গিক কথা...

০৩ রা অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংখ্যাগরিষ্ঠতা ব্যাপারটাই খারাপ। সংখ্যাগরিষ্ঠতা মানেই হলো সংখ্যালঘুদের ওপর কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ পাওয়া। আর মানুষ একবার অন্যের উপর কতৃত্ব প্রকাশের সুযোগ পেলে সেটা সহজে ছাড়ে না। রামুতে ঘটে যাওয়া ঘটনা, ঘটনার প্রেক্ষাপট মোটামুটি সবারই জানা। ঘটনার উৎস অবশ্যই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতজনিত প্রতিক্রিয়া। কিন্তু শুধু অনুভূতিতে আঘাত এমন ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে ?
- মনে হয় না। ব্যাপারটার সাথে আর যা যোগ হয়েছে, তা হলো সংখ্যাগরিষ্ঠ শক্তির অপব্যবহার। সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশকে ইন্ধন দিয়ে সমাজের "বুদ্ধিপরজীবী" অংশ সহজেই নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করে নিতে পারে। এই সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এমনিতেই মুখিয়ে থাকে নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্র পাওয়ার জন্য। ক্ষমতা মাত্রই মানুষকে নষ্ট করে। বন্ধুত্বের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় একজনের ক্ষমতা প্রদর্শনীর ভারে, আর সেখানে সহস্র লোকের ক্ষমতার অহমিকায় তো মন্দির ভাঙবেই...

হাত, পা, সব ঠিকঠাক থাকলেই মানুষ হয় না, আবার বিকলাঙ্গ হয়েও মানুষ হওয়া যায়। কিন্তু এই সংখ্যাগরিষ্ঠদের চরিত্রে ধ্বংস-ধ্বংস খেলার যে প্রবণতা, তাতে তারা শারীরিক বৈশিষ্ট্যে মানুষ হলেও এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য "মানুষ" শব্দের এর আগে 'অ' বর্ণের মতো যুক্ত হয়; 'অ' টা বিশাল ফন্টে, আর 'মানুষ' থাকবে আণুবীক্ষণিক ফন্টে- "অমানুষ"

এখানে সমাজের আরেকটা অংশের প্রতিক্রিয়াও সমস্যা সৃষ্টি করছে। তারা এই অমানুষদের কৃতকর্ম ধর্মের উপর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে, অনেকটা জোর করে। কিন্তু ব্যাপারটা মোটেও বিশেষ কোন ধর্মের ত্রুটি হিসেবে দেখে সেভাবে বিচার করার মতো সহজ সমিকরণীক গণিত না। সেভাবে বিচার করলে ভুল করা হবে এবং তাতে সংঘাত, ধর্মীয় অস্থিরতা বাড়বেই, কমবে না। ভার্চুয়াল জগতেও এ কারণে দুই পক্ষের অনর্থক বিবাদের সৃষ্টি হচ্ছে। রামুর সেই বক-ধার্মিকদের বাইরে যত ধার্মিক আছে কেউই কিন্তু এই আচরণ সমর্থন করছে না। শুধু ধর্মের সমস্যার কারণে এই সংঘাত হলে সকল ধার্মিকই একাত্ম হতো। সেটা কিন্তু হচ্ছে না। এখানে একদল অমানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠগতার সুবিধা পাওয়ায় যত অনিষ্ট হচ্ছে। আজকে যদি রামু'র বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ হতো, সেখানেও একই প্রেক্ষাপটে একই ঘটনা ঘটতো। অহিংসার বাণী সেখানে খাটতো না। রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রেও খাটে নাই। এটাই হচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা। ধর্মের বাণী ছাপিয়ে অধর্ম করে, করায় !

ধর্মে অবিশ্বাসীরা সবসময় যা করে, এখনো তা'ই করে যাচ্ছে। দরকার ছিল ধার্মিকদের সাথেই একাত্ম হয়ে এসব বক-ধার্মিকদের বিরুদ্ধে লড়ে যাওয়া। কিন্তু এরা লড়ে যায় কেবলই ধর্মের বিরুদ্ধে, মাঝখানে মানুষ মরে সাফ হয়। এ ঘটনায় ধর্মকে দোষারোপ করা হচ্ছে... একটা কথা বলে রাখি-

একটা সময় অবিশ্বাসীদের সংখ্যা বেশি হবে। তারা হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ। সে সময় তারা বিশ্বাসীদের গলায় পাড়া দিয়ে বলবে,
কই তোর আল্লাহ ? ডাক দেখি। কই আসে না কেন ? তারপর হো হো করে হাসতে হাসতে উল্লাস করবে ! হ্যাঁ, এটাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা। না মানে ধর্ম, না মানে নিধর্ম। করে শুধু অধর্ম !

এর মানে এই না অবিশ্বাসীরা খারাপ। ভালো-খারাপের সাথে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের কোন সম্পর্ক আছে- এই কথা আমি "অবিশ্বাস" করি।
সবার আগে শারীরিক মানুষেরা মানবিক মানুষ হতে শিখুক। তারপর বিশ্বাস-অবিশ্বাস যা ইচ্ছা করুক...
তখন এই পৃথিবীতে 'সমস্যা' নামক শব্দটা আর থাকবে না...!
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×