কিছুদিন পরেই পরীক্ষা। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসবো এমন সময় বন্ধু টাইপের একজনের ফোন... বিরাট সমস্যায় পরে গেছে, সিদ্ধান্ত নিতে ঝামেলা হচ্ছে... কী করবে বুঝতে পারছেনা। সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে তাকে হেল্প করতে হবে। আবার সমস্যার কথা সরাসরি বলতেও বিব্রত বোধ করছে। কিন্তু না বললেতো আর সমাধান করা যাবেনা। বিষয়টা যখন ক্লিয়ার করে বললো, তখন যা বুঝতে পারলাম তাতে মনে হলো বেচারা জটিল সমস্যায় পরে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। হয়তো "এসপার, নয়তো ওসপার" এ জাতীয় অবস্থা। কী করবে বুঝতে পারছেনা। আমার কাছে সমাধান চায়।
.
তাকে কী সমাধান দেয়া যায় ভাবি। কুলিয়ে উঠতে পারিনা। নিজেই যেখানে নিজের হিসাব মিলাতে গিয়ে প্রায়ই দুইয়ে দুইয়ে পাঁচ করে ফেলি... সেখানে অন্যের হিসাব মিলাতে ভয় হয়। নিজের সাথে অন্যকেও ডুবিয়ে মারতে সাহস হয়না।
.
মাঝে মাঝে আমাদের সামনে এমন কিছু মুহূর্ত চলে আসে... যখন নিজেই নিজের সমাধান খুজে বের করতে হয়। সিদ্ধান্ত তখন একান্তই নিজের ভিতর থেকে বের করে আনতে হয়। অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলেনা। আবার এমন কিছু সিদ্ধান্তও নিতে হয়, যাতে নিজের সাধ, আহ্লাদ, ভালো লাগা, ভালোবাসা সবকিছু বিসর্জন দিতে হয়। কারণ জীবন সংসারে আমরা একা একা বেড়ে উঠিনা। আমাদের সাথে অনেক মানুষের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ জড়িয়ে থাকে। তাই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হয়।
.
সেদিন মনির ছেলেটাকেও সেই কাজটাই করতে হয়েছিল। বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ করেই কোম্পানী যখন তাকে সিরাজগঞ্জ বদলি করে দিল, তখন ছেলেটা কী করবে বুঝতে পারেনা। এতদিন বাড়িতে থেকেই চাকরি করেছে, এখন হঠাৎ করে এতদূর বদলি করাতে মাথা ঘুরে যায়। নতুন জায়গায় জয়েন করতে হবে, নয়তো চাকরী ছাড়তে হবে। হয়তো "এসপার, নয়তো ওসপার"।
.
ছেলেটা কিছুদিন সিদ্ধান্তহীনতায় কাটানোর পর অনেক কিছু ছাড় দিয়ে শেষ পর্যন্ত চাকরীটাকেই প্রায়ওরিটি দেয়... বদলি হয়ে চলে যায় সিরাজগঞ্জ। ঐ যে একদিন বলেছিলাম, আমাদের মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে মেয়েদের সব ক্ষেত্রেই ছাড় দিতে হয়... এমন কি সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও আমরা প্রথমে ছাড় দেই, তারপর সিদ্ধান্ত নেই। কারণ আমরা মধ্যবিত্ত। আমাদের সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রথম শর্ত হলো ছাড় দিতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১০