ব্রিটিশ আমলের নিয়মে চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার বিল্ডিং
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার বিল্ডিঙে নম্বরপত্র সংক্রান্ত কোন কাজে গেলে আপনি ফিরে যাবেন সেই ১৯২১ সালে। আমার ধারণা তখনকার সময়ও রেজিস্টার বিল্ডিঙে কাগজপত্র তুলতে গেলে এখনকার নিয়ম অনুসরণ করতে হত। পার্থক্য শুধু--তখন ছিল ১৯২১ আর এখন ২০১৩।
শেখ হাসিনা সরকার অনেক কিছুকেই ডিজিটালাইজড করেছেন। কিন্তু ঢাবি সম্ভবত তার ডাকে আশানুরূপ সারা দেয়নি। মার্কশিটসহ অন্যান্য কাগজ তুলতে গেলে যে পরিমাণ হুজ্জতি পোহাতে হয়, তখন মনে হবে, 'কোন দুঃখে যে এইখানে ভর্তি হয়েছিলাম!' সামান্য জিনিসের জন্য এতো ঘুরতে হয়, উফ!! রেজিস্টার বিল্ডিং--হল--আবার রেজিস্টার বিল্ডিং--জনতা ব্যাঙ্ক--আবার রেজিস্টার বিল্ডিং। কঠিন চক্কর। কয়েকদিন কেবল দৌড়াতে হবে। (মনে হবে রেজিস্টার বিল্ডিঙে আগুন দিতে পারলে শান্তি হত।)
অথচ, এসব কম্পিউটারে একটা ক্লিকের কাজ। ব্যস। তা না। সেই ম্যানুয়াল সিস্টেমে চলছে সব। ৩০৮ এ গেলে দেখা যাবে লোকজন মামুলি দুই-একটা কাজ করছে আস্তে ধীরে। কেবল একজন সারাক্ষণই ব্যস্ত--মার্কশিট লেখেন যে লোকটা।
আজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা দেখলে হাসব না কাঁদব বুঝতে পারি না। যে শিক্ষার জন্য এতো কিছু, তার খবর নাই। প্রশাসনিক ও অন্যান্য কাজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ খরচ। হল-বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস-শিক্ষকদের থাকার কোয়ার্টার ইত্যাদি ইত্যাদি। এতো সব কার জন্যে? মূল বিষয়টা তো হোল শিক্ষাদান। ওটাই তো প্রশ্নের মুখে। তবে এতসব অপচয়ের মানে কি?
উন্নত বিশ্বের কোন দেশটায় এমন ফ্রি শিক্ষা ও থাকার জায়গা মিলে? ব্রিটিশরা নিয়ম করেছে এবং সেসবের আপডেট তাদের দেশে তারা করেছে সময়ের সাথে সাথে। কিন্তু আমরা রয়ে গেছি সেই অন্ধকূপে।
যাহোক, এতো কথা বলে লাভ কি? মাননীয় ঢাবির ভিসি, আল্লাহর দোহাই রেজিস্টার বিল্ডিঙের কিছু করুন। কিছু ওয়েবসাইট খুললেই ডিজিটালাইজেশন হয়ে যায় না। ব্রিটিশ আমল থেকে বেরিয়ে ২০০৩ সালে আসুন। সমস্ত কিছু অতিসত্বর কম্পিউটারাইজড করুন। ছাত্ররা দরকার হলে ৫০০ টাকা বেশি খরচ করতে রাজি আছে, কিন্তু অহেতুক সময় নষ্ট ও ব্রিটিশ আমলের দাদা-দাদির যুগে যেতে চায় না। নিদেনপক্ষে রেজিস্টার বিল্ডিঙ থেকে কাগজপত্র উঠাতে হলে কি করনীয়--এইসব তথ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবে দিন। কাজ সহজ করুন।
খোদার কসম বলছি, রেজিস্টার বিল্ডিঙে গেলে কোন সুস্থ মানুষের মাথা ঠিক রাখা দায়। হুদাই এতসব নিয়ম। কাজ হয়ে যাওয়ার পর মনে হবে--আর কোনদিন যদি এইখানে পা দিছি, মু..ও আসমু না। রাবিশ!!