লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : উপন্যাস
সতর্কীকরণ : কাহিনী সংক্ষেপটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট
কাহিনী সংক্ষেপ :
বুলুর বাবা মিজান সাহেব সস্তায় ওদের বাড়িটি কিনে ছিলেন ২৪ বছর আগে। বুলুদের এই বাড়ির পিছন দিকে একটা কুয়া আছে। প্রথম যে দিন বুলুরা এই বাড়িতে আসেন সেদিনই সন্ধ্যার সময় বুলুর মা কুয়ার পাশে ঘোমটা দেয়া একটা মেয়েকে দেখে ভয়ে চিৎকার করে উঠেন। সেদিনের পরে এই বাড়িতে ২৪ বছর পেরিয়ে গেছে, এর মধ্যে সেই ঘোমটা পরা মেয়েটিকে তিনি বেশ কেয়েকবার দেখেছেন, কিন্তু কাউকে কিছু বলেন নি। অন্য দিকে মিজান সাহেব মাঝে মাঝে কুয়ার ভেতরে কলকল শব্দ শোনেন, তিনিও কাউকে কিছু বলেন না।
বুলুর ছোট বোন বীণা। বুলু আর বীণার বি.এ. রেজাল্ট বেরিয়েছে। বীণা মেধা তালিকায় স্থান পায়।
অন্যদিকে বুলু তৃতীয় বারের মত পরীক্ষা দিয়েও ফেল করে এবং বাড়ি থেকে পালায়।
পরীক্ষার রেজাল্ট জানাতে বীণা তার কলেজ লাইফের খেপাটে বান্ধুবী অলিকের বাসায় যায়। অনেকদিন পর তাদের দেখা হয়, এর মধ্যে অলিকের মা চামরার এক রেয়ার ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
মিজান সাহেব যেখানে চাকরি করেন তার মালিক গনি সাহেব, খুবই ভালো মানুষ। কাউকেই তিনি কখনো ধমক দিয়ে কথা বলেন না, বরং হাসি মুখেই কথা বলেন। তবুও সবাই তাকে বাঘের মত ভয় পায়। বুলু বি.এ. ফেল করে বাড়িতে ফিরেনি শুনে গনি সাহেব বুলুর চাকুরির ব্যবস্থা করে দিবেন জানান। ২৮ দিন পরে এক দুপুরে বুলু পায়ে কাটা ফুটিয়ে খুরিয়ে খুরিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে।
গনি সাহেবের ৩ মেয়েরই বিয়ে হয়ে গেছে। আর সবচেয়ে ছোট ১১ বছরের ছেলে বাবু। বাবু মানুষীক ভারসাম্যহীন বাচ্চা। গনি সাহেবের মেয়ে আর জামাইরা অপেক্ষায় আছে তার সম্পত্তি ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য।
অলিকের মা যে চর্ম রোগের কারণে মারা গেছেন সেই একই রকম দাগ অলিকের শরীরেও দেখা দিয়েছে। অলিক বীণাদের বাড়িতে যাবার জন্য বের হয় কিন্তু ঠিকানা মনে নেই। দোকানে বুলুদের ঠিকানা জিজ্ঞাসা করতে করতে এগুতে থাকে। তখন বুলু এসে জানায় যে সে বীণার ভাই। বুলু তাকে বাসায় নিয়ে যায়।
এদিকে বুলুর পায়ে যে কাটা বিঁধে ছিলো সেটার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। তার পা নীল হয়ে ফুলে গেছে, গায়ে প্রচন্ড জ্বর। শেষে অবস্থা এমন হলো যে বুলুর মুখ দিয়ে লালা বেরতে শুরু করল। বীণা বুলুকে নিয়ে হাসপাতালে গেলো, কিন্তু ভর্তী করাতে পারল না, কোন সিট নেই। অলিকের বাবা বড় সচিব, তাই বীণা ফোন করলো অলিককে। অলিক তার বাবাকে বলে এক ঘন্টার মধ্যে ভর্তী আর চিকিৎসা শুরুর ব্যবস্থা করলো। অনেক দিন হাসপাতালে থেকে ৩টি অপারেশন হওয়ার পরেও বুলুর পা ঠিক হলো না, শেষ চেষ্টা হিসেবে বুলুর পা কেটে বাদ দেয়ার জন্য অপারেশন করা হলো। কিন্তু বুলুর আর জ্ঞান ফিরে এলো না, অজ্ঞান অবস্থায় বুলু মারা গেলো।
মিজান সাহেবের অফিসের ফাইলে কিছু গরমিল ধরা পরে যা তিনি সমাধান করতে পারেন না। দিনদিন তার টেনশন বাড়তে থাকে। এদিকে গনি সাহেব মিজান সাহেবকে ইংগিত দিয়ে ছিলো একাউন্ট ডিপাটমেন্টের রহমান টাকা সরিয়েছে বলে ফাইলে গরমিল হচ্ছে। কিন্তু মিজান সাহেবের সেটা বিশ্বস হয় না। মিজান সাহেব প্রতিদিনই চেষ্টা করে যাচ্ছেন হিসাব মিলাতে কিন্তু পারছেন না। তিনি হিসাব মিলাতা পারছেন না কারণ গনি সাহেব ইচ্ছে করেই এই গরমিল করে রেখেছেন। হিসাবে আসলে কোন গোলমাল নেই। কমচারিরা যেনো চাপের মধ্যে থাকে তাই তিনি ইচ্ছে করে এই ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু মিজান সাহেব আর এই চাপ নিতে পারে না, তিনি রেজিকনেশান লেটার লিখে অফিসে রেখে বেরিয়ে যান। কিন্তু শেষ পযর্ন্ত তার চাকরি ছাড়া হয় না। বুলু মারা যাওয়ার পরে তার সভাব চরিত্র অনেকটা চেঞ্জ হয়ে যায়।
বীণার বিয়ের কথা হচ্ছিল, বুলু মারা যাওয়ার পরে সেটা ভেঙ্গে যায়। অলিক চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়। সেখান থেকে সে চিঠি লিখে যানায় যে তার চর্ম রোগটি ডাক্তাররা ধরতে পেরেছেন। এখন অনেকটা ভালোর দিকে।
----- সমাপ্ত -----
=======================================================================
আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
১৯৭১ - হুমায়ূন আহমেদ
অচিনপুর - হুমায়ূন আহমেদ
অয়োময় - হুমায়ূন আহমেদ
অদ্ভুত সব গল্প - হুমায়ূন আহমেদ
অনিল বাগচীর একদিন - হুমায়ূন আহমেদ
অনীশ - হুমায়ূন আহমেদ
অন্যদিন - হুমায়ূন আহমেদ
অন্যভুবন - হুমায়ূন আহমেদ
আজ আমি কোথাও যাব না - হুমায়ূন আহমেদ
আজ চিত্রার বিয়ে - হুমায়ূন আহমেদ
আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ - হুমায়ূন আহমেদ
গৌরীপুর জংশন - হুমায়ূন আহমেদ
হরতন ইশকাপন - হুমায়ূন আহমেদ
ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ
ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:০৩