অনেকে ভেবেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী দৌড়ে টিকে থাকতে পারবেন না
এক বছর আগে প্রেসিডেন্সিয়াল পদের প্রচারণা শুরুর পর থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প সব দিক দিয়েই বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। আসলে খুব কম মানুষই ধারণা করেছিল যে, তিনি নির্বাচনী দৌড়ে টিকে থাকবেন। তবে তিনি সেই দৌড়ে টিকে যান।
তারা ভেবেছিলেন, তিনি জরিপে নাকচ হয়ে যাবেন। তাও তিনি জরিপগুলোয় ভালোভাবেই টিকে রইলেন। তারা ভাবলেন, তিনি প্রাইমারিতে টিকতে পারবেন না। সেটাও তিনি টিকে দেখালেন। তারা ভাবলো, তিনি রিপাবলিকান পার্টির নমিনেশন পাবেন না। তিনি নমিনেশনও পেলেন।
সবশেষে তারা বললেন, যত যাই হোক, নির্বাচনে জিতে আসার মতো ক্ষমতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেই।
কিন্তু তিনিই এখন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট। অনেকে ভাবেননি, এমন পাঁচটি কারণ তার এই বিজয়ের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
১।শ্বেতাঙ্গদের সমর্থন:
শ্বেতাঙ্গ প্রধান রাজ্যগুলো ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন দিয়েছে
ওহাইও, ফ্লোরিডা, এবং নর্থ ক্যারোলিনার শ্বেতাঙ্গ প্রধান রাজ্যগুলো একের পর এক ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন। এসব রাজ্যের বেশিরভাগ ভোট ডেমোক্রেটদের পক্ষে গিয়েছে। কারণ এসব রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা মনে করছেন, এতদিন তারা যাদের ভোট দিয়েছেন, সেখানে তারা উপেক্ষিত হয়েছেন। তাই তারা এবার বিকল্প কিছুর সন্ধান করেছেন।
২।নির্বিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প:
বারবার বিতর্কে জড়িয়েও আলোচনায় ফিরে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
পুরো নির্বাচনী প্রচারণার সময় বেশ কয়েকজন তারকার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধ ফেরত জন ম্যাককেইনকে বিদ্রূপ করেছেন। ফক্স নিউজের প্রেজেন্টার মেগান কেলির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছেন। নারীদের বিষয়ে তার যৌন আচরণ নিয়ে তার ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টিও ছিলো দায়সারা গোছের। এমনকি তিনটি প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে তিনি হেরে গেছেন বলেই মনে করা হয়। কিন্তু তারপরেও, তিনি যেন বার বার আলোচনায় ফিরে এসেছেন। এমনকি এসব বিতর্কও যেন পাত্তা না পেয়ে ফিরে গেছে।
৩।বহিরাগত একজন:
ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান নেতাদের সাথেও লড়াইয়ে জড়িয়ে যেন নিজের স্বাতন্ত্রই প্রমাণ করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প
শুধু ডেমোক্রেটদের বিরুদ্ধে নয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প লড়াই করেছেন তার নিজের দলের অনেক নেতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে এবং সবাইকে পরাজিত করেছেন। এমনকি পার্টির নেতা, হাউজ স্পিকার পল রায়ানের কোনও সাহায্যই তাদের দরকার হয়নি। হয়তো তার জয়ের পিছনে এটাও একটি ভূমিকা রেখেছে যে, তিনি তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তার পুরো প্রচারণার সময় তিনি নিজেকে এমনভাবে তুলে ধরেছেন যে, তার কারো দরকার নেই, জয়ের জন্য তিনি নিজেই যথেষ্ট।
৪।কোমির আর্বিভাব:
হিলারি ক্লিনটনের ইমেইলের বিষয়ে জেমস কোমির বক্তব্য মি. ট্রাম্পের পক্ষে সুবিধা এনে দিয়েছে
হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল নিয়ে নতুন করে তদন্তের কথা ঘোষণা করে, এফবিআই পরিচালক জেমস কোমির ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন। নির্বাচনের শেষের দিকে তার ওই ঘোষণা অনেক দোদুল্যমান রাজ্যের ভোটারদের মত পরিবর্তন করে দিয়েছে।
৫।ট্রাম্পের আলাদা প্রচারণা কৌশল:
নির্বাচনী প্রচারণার প্রচলিত ধ্যান ধারণার বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
নির্বাচনী প্রচারণার প্রচলিত ধ্যান ধারণার বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সেটি প্রমাণ করে দিয়েছে যে, তিনি অনেক বিশেষজ্ঞের চেয়ে ভালো প্রচারণা বোঝেন। তিনি উইন্সকিনসন আর মিশিগানের মতো রাজ্যগুলোয় প্রচারণা চালিয়েছেন, যা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করতেন যে, তার পক্ষে নেয়া সম্ভব না। এমনকি দরজায় দরজায় প্রচারণার বদলে তিনি বিশাল বিশাল র্যালি আর সমাবেশ করেছেন। তার অনেক প্রচারণার কৌশল বিশেষজ্ঞদের কাছে ঠিক মনে হয়নি, কিন্তু সেগুলোয় শেষ পর্যন্ত কাজ দিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:২০