মানুষ নিয়েই জগত্ ও জাতি । মানুষের মধ্যে আছে নারী ও পুরুষ । উভয়ের মিলনে আসে সন্তান । তবে , আমরা যতটা জানি , এই সন্তান লাভের মূলে নারীরই বিশেষ ভূমিকা আছে । নারী তার আদিম বৈশিষ্ট্যগত প্রেরণার মূলে মাতৃত্বের দাবীতে সে চাই এই সন্তান । তাই তো শাস্ত্রে আছে --- 'পুত্রার্থে ক্রীয়তে ভার্যা' ।
বর্তমানে জগতের মহাদুর্দিনে মায়েদের এবং মেয়েদের কতটুকু দায়িত্ব এবং কি-ই বা তাদের করণীয় তা অবশ্যই বিচার্য বিষয় । নারীর রূপটাই তার আসল বস্তু নয় । প্রকৃত বৈশিষ্ট্যানুপাতিক গুণ ও মাধুর্যই তাকে মহীয়সী ও গরীয়সী করে তোলে । পুরুষ চলবে তার ইষ্টে বা আদর্শে একান্ত অনুরক্ত হয়ে , আর নারী চলবে তার সমস্ত গুণ ও বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে ইষ্টানুগ চারিত্র্যের চলনের মধ্য-দিয়ে স্বামীকে স্বীয় সত্তাবোধে অনুসরণ করে । যেমন লতা সে বৃহত্ বৃক্ষকে বা অন্য কিছু অবলম্বন করে তার জীবন অতিবাহিত করে , সে কিন্তু জানেও না বোঝেও না যে সে অতিক্ষুদ্র । সে শুধু ওই বৃক্ষকেই আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকতে ও বৃদ্ধি পেতে চায় । এরুপ , অবলম্বন ও নির্ভরতা মেয়েদের একটি বিশেষ দিক । এই অবলম্বন সর্বপ্রথমেই পিতামাতার স্নেহের বাঁধনের মধ্য-দিয়ে চরিত্রগত করে নিয়ে বধূ-জীবনে শ্বশুর-সংসারে অধিষ্ঠিত হতে হয় । শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের মুখে শুনেছি----শ্বশুরবাড়িটা মেয়েদের পরীক্ষা দেওয়ার আসল কেন্দ্র । এখানে ভালভাবে পাশ করাই নারীজীবনের চরম সার্থকতা । এরুপ ক্রম-বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যখনই নারী তার অন্তর্নিহিত আদি আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী পরিবার ও পরিবেশের মধ্যে সংসারে শ্রদ্ধা, ভক্তি, ও সেবায় সকলকে পরিতৃপ্ত করতে পারে , তখনই নারী সুসন্তান লাভ করে মাতৃত্বের আসন পূর্ণভাবে অলংকৃত করতে পারে ।
অবলম্বন কিংবা নির্ভরতাকে যদি বর্তমানে নারী প্রগতির যুগে অধীনতা বলে প্রমাণিত করা হয়ে থাকে তাহলে নারী প্রগতির নামে নারী দুর্গতি হচ্ছে বললে এতটুকু ভুল হবে কি ? শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বললেন ------
"পুরুষ নষ্টে যায় না রে জাত
মেয়ে নষ্টে জাত কুপোকাত ।"
মেয়েদের বিধানের মধ্যে রয়েছে আট রকমের গুণ বৈশিষ্ট্য । এই বৈশিষ্ট্যগুলি মেয়েরা অধিগত করেই আসে এই পৃথিবীতে । সেই সব গুণ-বৈশিষ্ট্যের সুসংগতির ফলে নায়ক, অধিনায়ক বা আদর্শবান সন্তান আসে সমাজে । পরিবার, দেশ ও জাতিকে উন্নত ও বর্ধনশীল করেই নারীত্বের সার্থক পরিচয় দিয়ে থাকে ।
ক্রমশ ••••••••••••••••
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:৫৪