একজনের সাথে প্রেম হলে শারিরীক সম্পর্ক হয়ে যেতে পারে। এটা নিয়ে অপরাধ বোধে ভোগার কিছু নেই। তুমি আরেক জায়গায় বিয়ে করলে এ বিষয়টি কোন বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না।
একটি মেয়ে তার প্রেমিকের সাথে বিয়ে বহির্ভূত অবৈধ শারিরীক সম্পর্ক করলো। গর্ভবতী হলো, বাচ্চা নষ্টও করলো, বাচ্চা নষ্টের পরও অবৈধ সম্পর্ক অব্যহত রাখলো। শেষ পর্যন্ত অসৎ ছেলেটি বিয়ে করতে অস্বীকার করলো, অন্য কোথাও বিয়ে করে সুখী হতে মেয়েটিকে পরামর্শ দিলো- এ অবস্থায় মেয়েটি সারা যাকেরের কাছে জিজ্ঞেস করলো, সে এখন কি করবে?
এর প্রেক্ষিতে মেয়েটিকে সারা যাকের উপরোক্ত পরামর্শ দিয়েছে। পরামর্শটির ভিতরে আরো বেশ কিছু কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই ধরনের প্রেম, বিয়ের আগে শারিরীক সম্পর্ক, বাচ্চা নষ্ট করা ইত্যাদির অপকারিতা, অপ্রয়োজনীয়তা নিয়ে সারা যাকের একটি শব্দও বলেনি। বরং তার পরামর্শ শুনে মনে হবে এসব খুবই স্বাভাবিক। যেমন পশুপাখিরা করে থাকে।
হ্যাঁ একটি মেয়ে বা ছেলে বিপথে গিয়ে এই ধরনের ভুল করে ফেলতেই পারে। এ অবস্থায় সমাধানের পরামর্শও দেয়া যেতে পারে। কিন্তু পরামর্শের নামে অবাধ যত্রতত্র যৌনতাকে উৎসাহ দেয়ার অধিকার কেউ রাখে না। মুসলিম প্রধান একটি দেশে এই ধরনের পরামর্শের উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবতে হবে।
পরামর্শটি যেহেতু সারা যাকের দিয়েছে তাই তার ব্যাক্তিগত কিছু বিষয় জানা সবার অধিকার। যেমনঃ-
১। সারা যাকেরের নিজের চরিত্র ওই মেয়েটির মতো কিনা? যদি হয়, তখন তার স্বামী তাকে মেনে নিতো কিনা বা সে সময় কোন বাঁধা তার স্বামীর পক্ষ থেকে আসতো কিনা?
২। যদি সারা যাকেরের নিজের মেয়ের চরিত্র ওই ধরনের হতো তাহলে মা হিসেবে কিভাবে বিষয়টি গ্রহণ করতো?
৩। সারা যাকেরের ছেলে ওই ধরনের কোন মেয়েকে বিয়ে করতে রাজী আছে কিনা? সবকিছু জেনে ওই ধরনের কোন মেয়েকে নিজের ছেলের বউ হিসেবে সারা যাকের আনবে কিনা?
যদি প্রশ্নের উত্তর "হ্যাঁ" বোধক হয় তাহলে সারা যাকের নিজের নষ্ট চরিত্রের দিকে অপরকে ডাকতেই পারে। সেটি নিয়ে খুব বেশি কিছু বলার নেই। সবাই জানবে একজন নষ্ট মহিলা তার নষ্টামির দিকেই ডাকছে। কিন্তু উত্তর যদি "না" বোধক হয় তাহলে তাকে জানাতেই হবে কোন অধিকারে সে তরুণ-তরুণীদের ওই নষ্ট পথে যেতে উৎসাহিত করেছে। যা সে নিজে পছন্দ করেনা, যা তার স্বামী মানে না, যা তার ছেলের জন্য সে পছন্দ করবে না, সেই পথে কেন সে অন্য তরুণ-তরুণীকে ডাকলো তা জানাতেই হবে।
এ এক ভয়ংকর আহবান। এই ধ্বংসের পথে জাতিকে ডাকার উদ্দেশ্য সারা যাকেরকে জানাতেই হবে। সারা যাকের এই ধরনের একটি পরামর্শ দেয়ার জন্য প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করেছে কথিত দিন বদলের শ্লোগানধারী প্রথম আলোকে। যারা ধারবাহিক ভাবে জাতিকে সমকামিতা, বহুগামিতা, বিয়েহীনতা, পরকিয়া, ডিভোর্স ইত্যাদির দিকে বিভিন্ন ওয়েব সাইট ও সেলিব্রিটিদের ব্যাক্তিগত কাহিনীকে আনন্দের সাথে প্রচার করে কৌশলে, ভিন্ন স্টাইলে উৎসাহিত করে যাচ্ছে। এবার সেই প্রথম আলো সরাসরি অবাধ যৌনতার দিকে আহবান জানালো সারা যাকেরের মাধ্যমে।
এমনিতেই অনৈতিতার প্রসারের কারণে প্রেম, প্রেমিক কর্তৃক বিয়ের আশ্বাস, শারিরীক সম্পর্ক, গর্ভবতী হওয়া, বাচ্চা নষ্ট করা, এরপরও অবৈধ সম্পর্ক কনটিনিউ করা, শেষ পর্যন্ত নষ্ট প্রেমিক কর্তৃক বিয়ে করতে অস্বীকার করা- বর্তমান কথিত আধুনিক বাংলাদেশের তথাকথিত অতি আধুনিক ও সংস্কৃতি মনা তরুণ-তরুণীদের কমন বিষয়ে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। সব হারিয়ে চোখে অন্ধকার দেখা তরুণী, একজন মেয়ের সব নিয়ে আরেক নতুনের সন্ধানে থাকা তরুণের পদচারণা ভয়ংকর এক পরিবেশের জানান দিচ্ছে।
এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? নিশ্চয় সচেতনতা ও নৈতিক শিক্ষা। এই ধরনের ভয়াবহ সম্পর্ক ও এর বাস্তব পরিণতি সম্পর্কে সকলকে সচেতন করা জাতির কর্তব্য। কিন্তু বাস্তবে কি হচ্ছে? তথাকথিত সুশীল মিডিয়া ও নষ্ট চরিত্রের সুশীলরা সেই ধ্বংসের পথেই সবাইকে ডেকে চলেছে অবিরত। এই আহবানের ধ্বংসের ছোঁয়া থেকে রক্ষা পাবে না ব্যাক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র। সূদূর প্রসারী সেই ষড়যন্ত্রের কবলে পড়েছে এই দেশ, জাতি ও নতুন প্রজন্ম। প্রতিহত করতে হবে এখনই। প্রতিবাদ জানাতে হবে প্রতিটি ক্ষেত্র থেকে। নতুবা অনিবার্য ধ্বংস ধেয়ে আসছে টর্নেডো গতিতে। চুপ করে থাকলে কেউই রক্ষা পাবেনা।
আগের পোস্ট- ডিভোর্স দাও, নতুন হয়ে যাও!