রাত প্রায় দেড়টার মতন বাজে। সবাই যে যার মতন বাসায় চইলা গেছে। জানা আপায় যাওয়ার আগে মিস্টি একটা হাসিমাখা লুক দিয়া কইল কালপুরুষ তুমিও নাহয় চলে যাও এখন, কাল সকালে এসে বাকি কাজগুলো শেষ কোরো কেমন! তাই কি আর হয় রাতের মইধ্যে সার্ভারের কাজ শেষ করন লাগব নাইলে ইজ্জতের ফালুদা হইয়া যাইব। কাজ করতাছি আর একটার পর একটা বিড়ি ফুকতাছি। এতক্ষন জানা আপায় আছিল দেইখা হালায় বিড়িটাও খাইবার পারিনাইক্যা। যাউকগ্যা অহন মনের সুখে বিড়ি টানি।
আব্বে হালায় ! কথা নাই বার্তা নাই ফুড়ুৎ কইরা কারেন্টা চইলা গেল। পরলাম না বিপদে! কারেন্টের যেই অবস্থা দুই ঘন্টার আগে কি আর আইব। ইজ্জতের ফালুদা হওন এইবার আর কেউ রক্ষা করতে পারব না। অফিসে বইসা আছি অন্ধকারে। এমুন সময় কার যেন হাসির শব্দ কানে বাজল। ইয়া আল্লাহ ! কোন ভুত ফুত নাত। আমি আবার ভুতেরে খুব ডরাই। কিছুক্ষন কোন সাড়া শব্দ নাই। আবার কিছুক্ষন পর সেই হাসির শব্দ। লাইটারের আগুন দিয়া দেখার চেস্টা করতাছি। দেখি আসলে সত্যি ভুত নাকি আমার মনের ভুল।
এরই মইধ্যে আজীব এক কাহিনী ঘটল। কারেন্ট নাই কিন্তু কম্পিউটার অটো চালু হইয়া গেল। মেয়েটার হাসির শব্দ আবার শুনতে পাইলাম। শব্দটা খুব চেনা চেনা মনে হইতে লাগল। আশ্চর্য রকম ব্যাপার স্যাপার ঘটতে শুরু হইছে। সার্ভার আর ওয়েব ডাটাবেজের ল্যাঙ্গুয়েজ অটোমেটিক ঠিক ঠাক হওয়া শুরু হইয়া গেছে। আবার সেই মেয়ের হাসির শব্দ। এই হাসি আমার কাছে মনে হইল আমি রোজই শুনি। খুব মিস্টি একটা হাসি। খুবই পরিচিত। কিন্তু কিছুতেই মনে করবার পারতাছিনা রোজ এই হাসি কই শুনি! পেছন থিকা কেডায় যেন হাত দিল আমার কান্ধে আর তারপর কিছু মনে নাই।
চোখ যখন খুলছি দেখি সব ফক ফকা। সকাল হইয়া গেছে। মাথার সামনে জানা আপায় দাঁড়াইয়া আছে। তার চোখ মুখ দেইখা মনে হইল আমি এমন ভাবে ফ্লোরে কাইত হইয়া পইরা আছি দেইখা উনি প্রচণ্ড কষ্ট পাইছে। জানা আপায় কইল আহারে ! সব আমার দোষ ওভাবে তোমাকে রাতে ছেড়ে যাওয়াটা ঠিক হয়নি। অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তোমাকে না ! এভাবে কাজ করলে হবে ? নিজের শরীরের প্রতিও খেয়াল রাখতে হবে। দাঁড়াও কালপুরুষ এবার তোমাকে স্পেশাল কিছু একটা না দিলে একেবারেই হচ্ছেনা।
আমি কইলাম ধুর ! জানা আপায় যে কি কইবার লাগছেন না। কছম কইবার লাগছি, আমি কিন্তু কিছুই করিনাই। রাইতে কারেন্ট আছিল না। হের মইধ্যে এক ভুত আইল ! তারপর যা করার ভুতেই করল। শেষে আমি অজ্ঞান হইয়া পইরা গেলাম। আর কিছু মনে নাইক্যা। জানা আপায় কয়, ওহ ! তাই, তাহলে ভুত দেখি সার্ভার পুরো ঠিক করে দিয়ে গেল। তাহলেত স্পেশাল কিছু ভুতকেই দেয়া লাগবে, কি বল ? আমি কই, সার্ভার কি সত্যি ঠিক হইয়া গেছে ? আমার আবার অজ্ঞান হওনের দশা হইল। জানা আপায় কইল হুম ! সার্ভার এখন একদম ঠিক আছে। তোমাকে আর তোমার ভুতকে বলে দিও চকোলেট খাওয়াব। এই কইয়া আমার দিকে একটা রহস্যের মিস্টি হাসি দিয়া জানা আপায় হাইটা গিয়া হের চেয়ারে গিয়া বসল।
গল্পটা পুরাই কাল্পনিক, এইডারে সত্যি ভাইবা আবার কেউ বিপদে পরলে কইলাম আমার কোন দোষ থাকব না।