বাংলাদেশের বেশ কিছু লোক আছেন যারা কোন ইসলামি দল বা গোষ্ঠীর নাম শুনলেই একটু আবেক ত্বারিত হয়ে পরেন।তারা ভাবেন এরা ক্ষমতায় এলে বুঝি তাদের ধর্ম কর্মের একটু সুফল হবে।পরকালে শান্তি আসবে।ভাবনায় ভূল নেয়, ভূলটি হয় যখন আমরা তাদের আসল চেহারাটা না দেখেই পীর ভাবি বা দেখেও আল্লাহ ক্ষমাশীল ভেবে এদের সাথেই এগিয়ে যায়।
মূল ব্যাপারে যাবার আগে আমার একটা প্রশ্নের উত্তর খুব দরকার। কেউ কি বলতে পারবেন যে নিম্নোক্ত ব্যাক্তিদের মধ্যে কেউ কি মুক্তিযোদ্ধা ????????????????
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য :
(১) মতিউর রহমান নিজামী
(২) আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ
(৩) মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী
(৪) মুহাম্মদ কামারুজ্জামান
(৫) আবদুল কাদের মোল্লা
(৬) এটিএম আজহারুল ইসলাম
(৭) এএনএম আব্দুজ্জাহের
(৮) মীর কাশেম আলী
(৯) ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক
(১০) রফিকুল ইসলাম খান
এবং গোলাম আজম*
প্রশ্নটা শোনে হয়তো অনেকেই আমাকে পাগল ভাবতে পারেন ঠিক আমি যেমন ভাবি, যখন শুনি যে, দেশে নাকি কোন যুদ্ধাপরাধী নেয়।
আবার আগের কথায় ফিরে যায় যে, ইসলামি আইনে সৎ লোকের শাসন চেয়ে আমরা জামায়াতি ইসলাম কে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ভোট দেয়। যাদের গঠনতন্ত্র মতে ‘আল্লাহ ও সৎ লোকের’ ‘অর্গানাইজড’ শাসন কায়েমের মধ্য দিয়ে দমনপীড়ন ও অন্যায় খতম করার কথা বলা থাকে। বলা হচ্ছে যে আল্লা মানবজাতিকে পাঠিয়েছেন পৃথিবীর বুকে খিলাফত (ইসলামী শাসনব্যবস্থা) চালু করতে, এবং মানবজাতিকে দায়িত্ব দিয়েছেন ‘মনুষ্য প্রণীত’ আইন বাতিল করে ‘আল্লাহ প্রদত্ত’ আইন ও জীবনব্যবস্থা চর্চা করতে। খুবই ভালো কথা কিন্তু আমি জানতে চাই যে ইসলামী শাসনব্যবস্থায় কোথাও কি এমনটি করার নিয়ম আছে যে একটি দেশের শত শত নিরীহ মানুষ কে গুলি করে মারা হচ্ছে , হাজারো মায়ের ইজ্জত লুটে নিচ্ছে , মানুষের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে কিছু হায়েনার দল ,আর আমি মুসলমান হয়ে এসব পাশে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখে যেতে পারবো??????????? শুধু দাড়িয়ে দেখা না ঐ জানোয়ারদের সাথে উল্লাসে মেতে উঠতে পারবো??????????
যারা বলবেন দেলোয়ার হোসেন সাঈদী একজন আলেম তিনি কোন খারাপ কাজ করতে পারেন না কিংবা গোলাম আজম একজন অধ্যাপক তিনি ধর্ষন করতে পারেন না তাদের জন্য কেবল একটি প্রশ্ন সেদিন তারা কেন এই গণহত্যার প্রতিবাদে হাতে একটি পাথরের টুকরোও তুলে নেন নি ?????? কেনই বা একটা জ্বলন্ত বাড়িতে এক বালতি পানি ঢালতে যান নি ????? আল্লাহ প্রদত্ত’ আইন ও জীবনব্যবস্থায় কি বলা নেয় বিপদে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে ?????? তবে কি তোমরা নিজেরাই তার ধার ধারি না ? অথচ এখন আসছো তোমরা মানুষের সেবক হয়ে দেবতার প্রিয় সাজতে। ধিক্ তোমাদের এই ভণ্ডামিকে। শত ধিক্।
গোলাম আজম যে রাজাকার ছিলেন তার প্রমান তার দেয়া বাণীতেই প্রতিয়মান !!
তিনি বলেন , ১৯৭১-এর মার্চ মাসের ঐ উত্তাল দিনগুলোতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহইয়ার সাথে শেখ সাহেবের আলোচনার সময় আমার সাথে শেখ সাহেবের একান্ত ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ও বর্তমান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জনাব সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম-এর পিতা জনাব সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং জনাব আব্দুস সামাদ আযাদ-এর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তাঁরা আমাকে জানিয়েছিলেন যে, অখন্ড পাকিস্তান-এর চিন্তা নিয়েই উনারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। জনাব আব্দুস সামাদ আযাদের সাথে ২৫শে মার্চেও আমার টেলিফোনে আলোচনা হয়। তিনি আমাকে পুনরায় আশ্বস্ত করে বলেন যে, তাঁরা অখণ্ড পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোন বিকল্প চিন্তা করছেন না।
পাঠক ভাইয়েরা একটু খেয়াল করে দেখেন সে কি বুঝাতে চাচ্ছে এখানে।" পুনরায় আশ্বস্ত করে বলেন " আমার কথা হলো সে কে যে তাকে আশ্বস্ত করতে হবে এখানে ?????????? সে কি পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী ছিলো??? উত্তর যদি না হয় তবে নিশ্চয় পাকিস্তানের পি এস ছিলো। নয়তো তাকে কেন বার বার অখণ্ড পাকিস্তানের বেপারে আশ্বস্ত করতে হলো ????
আরে রাজাকারের বাচ্চা এতো বানিজ্যিক, অর্থনৈতিক, সামরিক বৈষম্য আর এতো অত্যাচার নির্যাতনের পরেও অন্যরা অখণ্ড পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোন বিকল্প চিন্তা করার আগেই তুই কেন স্বাধীন বাংলাদেশ চাইলিনা ???
তরুন সমাজের কাছে আমার আরেকটি প্রশ্ন ধরেন যদি এখন কোন কারনে ভারত আমাদের দেশ দখলে আসলো।তারা আমাদের বিশেষ করে সকল মুসলমানদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে যুবকদের গুলি করে মারছে , আপনার যুবতি বোনদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে , আপনার বাবাকে গাছের সাথে বেধেঁ মাথায় গুলি করার আগে বলছে যে বল তোর ছেলে কোথায়। আপনি মায়ানমারে যুদ্ধের প্রশিক্ষণরত অবস্থায় শুনতে পেলেন আপনার পরিবারে আর কেউ বেঁচে নেয়। খবর নিয়ে জানলেন যে, পাশের পাড়ার "হরিদাস" সাথে করে ইন্ডিয়ান আর্মিদের নিয়ে এসে আপনার বোনের, মা, বাবার এই সর্বনাশ করলো তখন আপনার কি মনে হবেনা যে একবার শুধু দেশে গিয়ে এই হরিদাসকে পেলে জ্যান্ত পুড়ে মারবেন?? এখন হরিদাস যদি বলে যে আমার কি দোষ আমি তো কেবল চেয়েছিলাম ভারতের সাথে অখন্ড থাকতে যাতে আমাদের ধর্ম কর্মে সুবিধা হয় আর আধিপত্যবাদী মায়ানমার থেকে সাহায্য নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে যাবো না, কারন এতে করে মায়ানমার হয়তো বাংলাদেশকে একটি তাবেদার রাষ্ট্রই বানাবে এবং এরা ভারতকে হারিয়ে দিবে যেটা আমি চাই না। এখন বলেন এই কথা বললে কি ওর আর রক্ষা পাওয়ার উপায় আছে ???
অথচ ঠিক একি কথা বলেছিলেন আমাদের দেশদ্রোহী গোলাম আজম ( ওদের ওয়েব লিংক) । তিনি বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে ’৭০ সাল পর্যন্ত ভারত সরকার এ দেশের সাথে যে আধিপত্যবাদী আচরণ করেছে তাতে আমাদের নিশ্চিত এ বিশ্বাস ছিল যে, ভারতের সহযোগিতা নিয়ে দেশ স্বাধীন হলে তা ভারতের তাবেদার রাষ্ট্রই হবে। তাই, কিছু বামপন্থী, সকল ডানপন্থী ও সকল ইসলামী দলগুলোসহ প্রায় সকল সুপরিচিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব এ সুস্পষ্ট ধারণার কারণেই ভারতের সাহায্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা সঠিক মনে করেননি। ভারতের সাহায্য না নিয়ে যদি স্বাধীনতা যুদ্ধ করা হতো, তাহলে আমরা অবশ্যই সে যুদ্ধে যোগদান করতাম।
কি বুঝলেন সবাই?? অথচ এরাই এখন এদের গঠনতন্ত্রের বিদেশ নীতিমালায় বলে যে,
০১. “সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্র“তা নয়” এই নীতির ভিত্তিতেই বিদেশনীতি পরিচালিত হবে।
০২. দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে সবার ওপর স্থান দিয়ে বিদেশনীতি ও কার্যক্রমে প্রতিবেশী দেশসমূহসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ স¤পর্ক স্থাপনে গুরুত্ব দেয়া হবে। ( ওদের ওয়েব লিংক )
তাই তরুন সমাজে আমরা যারা আছি চোখ কান খুলে একটু বোঝার চেষ্টা করি যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ কিছুটা হলেও সুখে আছি তাদের ব্যাথাটা কি ?
ভাবতে খুব খারাপ লাগে যে এখনো বাংলার বুকে এদের পা। শহীদের বুকে পা রেখে দিব্যি হাঁটা চলা করছে।
কিংবা সাক্ষীর অভাবে বিচারের নামে কালক্ষেপণ হচ্ছে দেখে........
কিংবা রাজনীতি.......
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১২ ভোর ৬:০৮