টরেন্ট নিয়ে ব্লগে বেশ কিছু লেখা দেখলাম। কিন্তু কোনটাই সম্পূর্ণ মনে হল না। তাই টরেন্ট নিয়ে যা জানি তার সব কিছু এক জায়গায় লেখার চেষ্টা করলাম।
টরেন্ট কি বা কিভাবে কাজ করে তার আগে জানা দরকার টরেন্ট দিয়ে হয়টা কি। টরেন্ট মূলত ব্যবহার করা হয় ডাউনলোড করার কাজে। গতানুগতিক ডাউনলোড থেকে টরেন্ট একটু অন্যভাবে কাজ করে। ব্যাপারটাকে অনেকটা ইন্টারনেট ডাউনলোড ম্যানেজার দিয়ে দেয়া কোন ডাউনলোডের সাথে তুলনা করা যায়। তুলনাটা এই অর্থে যে এটি রিজিউম করা যায়। কথা হচ্ছে টরেন্ট দিয়ে কি ডাউনলোড করা যায়। আমি নিজে মনে করি টরেন্ট দিয়ে ডাউনলোড করা যায় না বলতে কিছু নেই। যে কোন মুভি, সফটওয়্যার, বই এর পিডিএফ ভার্সন সবই পাওয়া যায়।
এখন আসা যাক টরেন্ট কি সে কথায়। সোজা কথায় টরেন্ট হচ্ছে ফাইল শেয়ারিং প্রোটোকল। সাধারণত আমরা যে ফাইলগুলো ডাউনলোড দেই সেগুলো কোন সার্ভারে আপলোড করা থাকে এবং সেখান থেকে ডাউনলোড হয়। কিন্তু টরেন্টের বেলায় ফাইলগুলো এক ইউজারের পিসি থেকে অন্য ইউজারের পিসিতে ট্রান্সফার হয়। সোজা কথায় আপনি যখন একটি ফাইল ডাউনলোড দেবেন, তখন তা অন্য কারো পিসি থেকে ডাউনলোড হবে এবং অন্য কেউ যখন সেই ফাইল ডাউনলোড দেবে তখন তা আপনার পিসি থেকে ডাউনলোড হবে। এ ধরনের নেটওয়ার্ককে বলা হয় P2P ফাইলে শেয়ারিং নেটওয়ার্ক। আর এ জন্য টরেন্ট নেটওয়ার্কে শেয়ার করা ফাইলগুলোকে অনেক ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে ফেলা হয়। আপনি চাইলে আপনার ডাউনলোড শেষ হওয়ার পরও সেটি শেয়ারে দিয়ে রাখতে পারেন তখন সেটাকে বলা হয় সিড করা। টরেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে।
এখন দেখা যাক আপনি কিভাবে টরেন্ট দিয়ে কোন ফাইল ডাউনলোড দেবেন। এজন্য প্রথমে আপনার লাগবে একটি টরেন্ট ক্লায়েন্ট। এটি একটি সফটওয়্যার এবং এটি সাধারণত বিনামূল্যে পাওয়া যায়। এজন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন ইউটরেন্ট , বিট টরেন্ট অথবা বিট লর্ড। এছাড়াও আরো অনেক ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার আছে। আমি নিজে ইউটরেন্ট ব্যবহার করি। লিনাক্সের টরেন্ট ক্লায়েন্টগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন আমড়া কাঠের ঢেকির এই লেখায়। এখন আপনার প্রয়োজন যে ফাইলটি ডাউনলোড করবেন সে ফাইলের একটি টরেন্ট ফাইল। এ ফাইলগুলোর জন্য আপনি যেতে পারেন পাইরেট বে অথবা মিনিনোভা তে। আপনার প্রয়োজনীয় ফাইলটি পাবেন কিনা সেটা নির্ভর করে সফটওয়্যারটি কেমন জনপ্রিয় তার উপর। যদি এ সাইটগুলোতে না পান তবে টরেন্ট খোজার জন্য কিছু মেটা সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে সেগুলোতে খুজে দেখতে পারেন। এরকম সাইটের মাঝে রয়েছে টরেন্ট ফ্লাই, আই এস ও হান্ট, টরেন্ট রিএক্টর অথবা টরেন্টজ এ। এই সাইটগুলো অনেকগুলো টরেন্ট সাইট থেকে আপনার প্রয়োজনীয় টরেন্ট ফাইলটি খুঁজে দেবে যার ফলে আপনার অনেক কষ্ট বেঁচে যাবে। সাধারণত সাইটগুলোতে টরেন্ট ফাইলগুলোতে টরেন্ট ফাইলের নামের সাথে সিড ও লিচের সংখ্যা উল্লেখ থাকে। এমন টরেন্ট ফাইল ডাউনলোড করা ভালো যেটার সিডের সংখ্যা বেশি। তাহলে ডাউনলোড স্পিড বেশি পাওয়া যায়। টরেন্ট ফাইল দিয়ে ইউটরেন্ট ব্যবহার করে ডাউনলোড নিয়ে ভাদাইম্যা পোলার একটি ভালো লেখা আছে এখানে।
টরেন্ট দিয়ে ডাউনলোডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটি ডাউনলোড দিয়ে বসে থাকতে হয় না। যখন পিসি নেটের সাথে কানেক্টেড থাকে তখন এটি ফাইল ডাউনলোড করতে থাকে। ডাউনলোডের সময়টা নির্ভর করে আপনার ফাইলের আকার, সিডের পরিমান, নেটের স্পিড ইত্যাদির উপর। সবচেয়ে ভালো হয় ডাউনলোড দিয়ে সে ফাইলের কথা ভুলে গেলে । কেননা একটা মুভি ডাউনলোড হতে সাধারণত দুই থেকে তিনদিন লাগে। আমার মতে সময়টা বড় কথা নয়। কারণ আপনি আপনার দরকারি যে কোন সফটওয়্যার বা মুভি হাতের কাছে কোন বড় ধরনের খাটা খাট্নি ছাড়াই পেয়ে যাচ্ছেন। সবচেয়ে মজার কথা হচ্ছে যে সফটওয়্যার গুলো ক্র্যাক করতে হয়, সে ক্র্যাকগুলোও সাধারণত একই ফাইলে দেয়া থাকে।
সতর্কতাঃ
বলা হয়ে থাকে টরেন্টে পাওয়া কিছু ফাইলে ভাইরাস থাকে। তাই ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। পিসিতে ভালো কোনো এন্টিভাইরাস ইন্সটল করা থাকলে আর ভয়ের কিছু নেই।
টরেন্ট নিয়ে ভালো কিছু লেখার লিংক:
১. টরেন্ট কি এবং কিভাবে টরেন্ট দিয়ে ডাওনলোড করা হয় - নাজিরুল হক
২. পাইরেট বে থেকে মিনিনোভা : একে একে নিভিছে দেউটি! - ফিউশন ফাইভ
৩. ক্রন্দন....... অবৈধ দস্যুদের জন্য!!!!!!!!!!! - মুভি পাগল
৪. ডাউনলোড খোরদের জন্য৭টি মাল্টি টরেন্ট সাইট- ইয়াসিন আরাফাত (টেকটিউনস)
৫. টরেন্ট – অনলাইন ফাইল শেয়ারিং এ এক অপ্রতিরোধ্য প্রযুক্তি- darklord (টেকটিউনস)
অপটিমাইজেশনঃ
১. ইউটরেন্ট দিয়ে টরেন্ট ডাউনলোড-ভাদাইম্যা পোলা
২. টরেন্ট এর স্পিড বাড়ানোর গ্যারান্টিড টিপস-taufiq ahmed (টেকটিউনস)
সম্পূর্ণ লেখার ইচ্ছে থাকলেও সম্পূর্ণ হল না। টরেন্টের কিছু অপশন অপটিমাইজেশনের মধ্যমে ডাউনলোড স্পিড বাড়ানো যায় কিন্তু সেগুলো আমার জানা নেই। কেউ আমাকে জানিয়ে দিলে আমি সেগুলো যোগ করে দেব। এছাড়াও কারো যে কোন প্রয়োজনীয় তথ্য জানা থাকলে জানানোর অনুরোধ রইল।