অনাহুত দীর্ঘরাত
বন্যায়, খরায় ভিজে
ডানা ভাঙ্গা কাকের মতন
বেঁচে আছি শুভ্রতার পালক চেয়ে।
রোদে শুকিয়ে যাওয়া দিনগুলি পার করে
দিগন্তে এগিয়ে গেছে কত সহযাত্রী।
শুধু আমাদের মায়ের প্রবস বেদনার রাত দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়...
মায়াজালে বিদগ্ধ অবরুদ্ধ জীবন
কুহতার বন থেকে সানাইয়ের সুর বাজে
অতিপ্রাকৃতিক গন্ধম খেয়ে মানুষেরা পাপি হয়
জননীর কোল ঘেঁষে ভারি হয় জনতার পদচ্ছাপ।
শতাব্দির নির্মম শিক্ষা হয়ে ফিরে আসে
আপদমস্তক লোভি নেড়ি কুকুরের দল।
দু'আনা ভিক্ষার নিচে উভে যায় দেশ প্রেম।
উদ্ধাস্ত রাজনীতির ছায়া মাড়িয়ে রাজপথে
গজে উঠে লাল লাল জীবন্ত চাপাতি বৃক্ষ।
খাট, সামিয়ানা, দেয়ালে পলেস্তার জুড়ে
চোপ চোপ রক্তের দাগ মুছে দেয়া যায় না।
হাহাকার শেষে জননীর মৃত্যু উৎসবে
ক্ষমতার রাজনীতির ফাতেহা পাঠ।
তখনো ওয়াসার ট্যাংকির নীচে লাশের সারি
মুখ ফোটে কথা বলে।
কয়েকটি আগরবাতি জ্বলছে
নিকটবর্তী দূরে সমস্ত নিরবতা ভেঙ্গে
থেমে থেমে ভেষে আসছে মাতমের রোল।
গোলাপজল, আতরের ঘ্রাণ
মুখে মুখে অশুদ্ধ কলেমা শাহাদাত পাঠ।
চল্লিশ কদমের আরো কিছু পরে একটি গ্রামিণ সন্ধ্যায়
বাড়ি ফেরা মুসল্লিদের অভিব্যক্তি...
ক্ষুধাময় জীবনের মায়া
গোয়ালে গরুর ডাক
নাঙ্গল, কোদাল, জোয়ালের পাশে সোনালী আঁশ
প্রদিপহীন খড়কুটো সংসারে আরো কিছুদিন
বেঁচে থাকার ইচ্ছাই আমাদের মেরে ফেলেছে।
ছবি: জামিনদার।
নূরের টেক, সোনারগাঁ, নারায়নগঞ্জ