আচ্ছা আপনাদের একটা জোকস শোনাই! এক কাপলের বাসায় আরেক কাপল বেড়াতে এসেছে। তারা চারজনই আবার স্কুল জীবনের ফ্রেন্ড। হাই হ্যালো শেষ হবার পর যার এক বান্ধবী তার আরেক বান্ধবীকে বলছে দোস্ত আমি প্রেগন্যান্ট। এই খবর পাবার পর বান্ধবী তার অপর বান্ধবীকে জড়িয়ে ধরে পেটের কাছে হাত বুলিয়ে বলল কংগ্রাচুলেশন দোস্ত! এটা দেখে প্রেগন্যান্ট মহিলার স্বামী তার বন্ধুকে বলল দোস্ত আফসোসের ব্যাপার কি জানিস যেইটা দিয়া প্র্যাগনেন্ট বানাইলাম সেইটাতে হাত বুলাইয়া আমারে কেউ কংগ্রাচুলেশন বলে না!!!!
আমার মাঝে মাঝেই মনে হয় আমাদের জাতির কন্যা,পুত্র কিংবা তাদের নাতি-নাতনীদের প্রত্যাশাটিও ঠিক সেরকম। দেশটার কথা যতবার উঠবে জাতির জনকের সেই জিনিসে ততবার হাত বুলাইতে হবে। আর জাতির জনকের সেই জিনিসের নাম হচ্ছে আওয়ামীলীগ। হুম জানি। না জানার কিছু নেই, অস্বীকার করারও কিছু নেই বাংলাদেশ নামক যে সন্তানের জন্ম ৭১-এ হয়েছিল তা হয়েছিল আওয়ামীলীগের হাত ধরেই। কিন্তু তাই বলে এর মাকে ছোট করে দেখার কোন উপায় নেই। আবার এই মাকে যদি কেউ কংগ্রাচুলেশন জানায় তাতেও আপনার আপত্তি থাকার কথা নয়।
এখানে আমি জাতির পিতা কে নিয়ে আপত্তিকর কোন কথা বলতে আসিনি। আমি সিরিয়াসলি আপনাদের কাছে জানতে চাচ্ছি, যারা ৭১ এবং একাত্তর পূর্ব বাংলায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা সম্পর্কে জানেন তারা কি স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কিছু জানে? কারন আমি যার সম্পর্কে কথা বলবো তার কথা বলতে হলে স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের অবস্থা জানা থাকাটা খুবই জরূরী। ভাই ৭ই মার্চের ভাষণ শুনলে আজও আমার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু সেটাই সব কথা নয়। এক সন্তানের জন্ম দিয়ে হয়তো তার স্কুল কলেজের ভর্তি ফর্মে বাপের নামের স্থানটা পূরণ করা যায়। কিন্তু এর বাইরেও সন্তানকে হাঁটতে শেখাতে হয়, স্কুলে দিয়ে আসতে হয়। আরো এরকম অনেক দায়িত্ব। তাই আপনাদের স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাস জানাটাও জরুরী। তবে এটুকুই বলি ১৫ই আগস্টের হৃদয়বিদারক ও জঘন্য হত্যাকান্ডের পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেন নি; ক্ষমতা দখল করেছিলেন শেখ মুজিবেরই মন্ত্রী খন্দকার মোস্তাক এবং তার সাথে যুক্ত হয়েছিলেন শেখ মুজিবের মন্ত্রী সভার প্রায় সব সদস্য। শেখ মুজিব নিহত হবার পরদিনই দেশের সামরিক বাহিনীর প্রধান, বিমান বাহিনীর প্রধান, নৌ বাহিনীর প্রধান, বিডিআর প্রধান- এরা সবাই গিয়ে মোস্তাক সরকারের আনুগত্য প্রকাশ করে রেডিও-তে বিবৃতি দেন; এই বড় মাপের ক্ষমতাধরদের মাঝে কিন্তু জিয়াউর রহমান ছিলেন না। এখন দেখি কিছু কিছু রাজনীতিবীদ বলেন বিএনপির জন্ম ক্যান্টনম্যান্ট তাই এর কোন গণতান্ত্রিক দল নয়!! কি যুক্তি রে বাপ।
আচ্ছা ভাই আপনাকে একটা প্রশ্ন করি, আপনার বেবি হয়েছে?
-হুম আছে ভাই। কেন?
-ও কি নরমাল ডেলিভারি ছিল নাকি সিজারিয়ান?
-সিজারিয়ান ছিল ভাই। ল্যাব এইডে অনেক টাকা খরচ করতে হয়েছে।
-কেন কেন সিজারিয়ান করাতে হলো কেন ভাই? কিছু কপ্লিকেশনস ছিল ওর মায়ের তাই শেষ পর্যন্ত সিজারিয়ানই করাতে হয়েছিল।
-ও আচ্ছা। আচ্ছা কমপ্লিকেশনস এর কারনে বেবী সিজারিয়ান হয়েছে তাতে কি আপনার ওর প্রতি মায়া বা কোন কিছুর কমতি আছে ভাই?
-কি বলছেন এটা? কোন কিছুর কমতি থাকবে কেন? নরমাল ডেলিভারী হলে শুনেছি বেবী ন্যাচারালি একটু স্ট্রং হয় বাট আদার দেন দ্যাট সি ওয়াজ ওকে। বাট সময়ের সাথে সাথে সেটা ঠিক হয়ে যায়।
-আমিও তো তাই বলি বিএনপির জন্ম ক্যান্টনম্যান্টে হয়েছে ঠিক আছে কিন্তু জিয়া কি দেশে ডেমক্রেসি ফিরিয়ে দেননি? দেশের সেই ক্রান্তিকালে একটা দল গঠন করে দেশের হাল ধরা ছাড়া জিয়াউর রহমানের আর কোন অধিকতর ভালো বিকল্প কিছু ছিল কি?
কংগ্রেস পার্টির উপর রামাচন্দ্র গুহ-এর লেখা একটা আর্টিকেল পড়বার পর বুঝতে পেরেছিলাম কিভাবে জহুরলাল নেহরু ভারতে ডেমক্রেসি এসটাবলিস্ট করছিলেন এন্ড হাউ ইট সারভাইভড ইন্দিরা গান্ধী। ইট ইজ বোথ এ ট্রাজেডি আন্ড আইরনি দ্যাট এ মিলিটারি ম্যান হ্যাজ বিন ক্লোসার টু নেহরু দ্যান এনি অফ আওয়ার সো-কল্ড ডেমক্র্যাটস। ইন ফ্যাক্ট সে দিক থেকে তিনি শেখ মুজিবর রহমান, খালেদা জিয়া কিংবা হাসিনা চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিলেন।
জিয়াউর রহমান, এ আর্মি ম্যান। পরবর্তীতে একজন জনপ্রিয় রাজনীতিবীদ হয়েছিলেন। আজ থেকে ঠিক ৩২ বছর আগের এই দিনে তিনি শহীদ হন। ডেস্পাইট দ্যা টুইস্ট এন্ড টার্নস অফ পলিটিক্স, থ্রি ডেকেডস ফ্রম হিজ ডেথ, হোয়েন থিংস আকচুয়েলি ওয়ার্ক ইন বাংলাদেশ, দে ওয়ার্ক এলং দা পাথ সেট বাই জিয়া। আপনি আমি স্বীকার করি বা না করি। হ্যাঁ আপনি আমি তার বিরোধী হলে অনেকভাবে তাকে হয়তো ক্রিটিসাইজ করা যায়. বাট আওয়ার ক্রিটিসিজম রিংস হলোও বিকজ নট ওনলি আর উই আওয়ারসেলফস নো বেটার, ইন মেনি রেসপেক্টস উই হ্যাভ ফলেন শর্ট অফ দা স্টান্ডার্ড সেট বাই জিয়া। এজ এ ম্যাটার অফ ফ্যাক্ট আজকে আমরা জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশেই বাস করছি, শেখ মুজিবের বাংলাদেশে না।
তিনি বাংলদেশের একমাত্র রাষ্ট্রপ্রধান যিনি মেরিটোক্রেসিতে বিশ্বাস করেছিলেন এবং সব দল ও মত থেকে চেরি পিক করে সফল ও প্রতিভাবান মানুষদের রাজনীতিতে এনেছিলেন। জাতিকে ভাগ করা খুবই সহজ কাজ, এ কাজে ভুল হয় না কিন্তু একত্র করা খুবই কঠিন কাজ, এই কাজে ভুল হয় সবচেয়ে বেশী - কেননা য়ুনিফাই করার কোনো হ্যান্ডবুক থেকে না, আপনাকে ক্রিয়েটিভ হতে হয়, আপোষ করতে হয়। জিয়াউর রহমানেরও ভুল হয়েছিলো, প্রচুর ভুল হয়েছিলো কিন্তু তিনি পকেট ভারী করার জন্য ভুল করেন নি। ভূল করছিলেন জাতিকে একত্রিত করতে। এটাই স্টেটসম্যানশিপ। হোয়াইল হি কুড হ্যাভ চুজেন দা পাথ অফ আইয়ূব এন্ড ব্যান অল পলিটিসিয়ানস ইন দা প্রিভিয়াস আওয়ামীলীগ গভার্নমেন্ট, অর লাইক শেখ মুজিব ফর্ম এ "ন্যাশনাল পার্টি" অফ হিজ অউন উইথ এ মনপলি অফ পাওয়ার, অর লাইক দা পাকিস্তানি জিয়া এন্ড মোশাররফ এক্সাইল অপজিশন লিডারস, জিয়া একচুয়েলি ইনভাইটেড পিপল লাইক কামাল হোসেন এন্ড হাসিনা ওয়াজেদ ব্যাক টু দা কান্ট্রি টু রিবিল্ড আওয়ামীলীগ।
জিয়াউর রহমানের মারা যাওয়ার দিনে আহাজারি করে, তিনি বেঁচে থাকলে আমরা কৈ চলে যেতাম এসব চিন্তা করে যেমন কোনো লাভ নাই। ঠিক তাকে হাজার চেষ্টা করেও আপনি আমি তাকে তার সম্মানের স্থান থেকে নামাতে পারবোনা। যারা এদেশকে নেতৃত্ব দেবেন বলে আশা করছেন তারা যদি জিয়াউর রহমানের 'no-nonsense', 'whatever works' এপ্রোচটা নিতে পারেন তাহলে নিজের ও দেশের জন্য কিছু লাভ হবে বলে মনে হয়।আর জিয়া না মুজিব এই তর্ককে দূরে ঠেলে দিয়ে জিয়ার দেশ গড়ার এপ্রোচটা বেছে নিন।