এদিক ওদিক তাকাতে লাগল শুভ। কেমন ভয় মাখা দৃষ্টি ওর দু চোখে এখন।হঠাৎ ওর চোখ দুটো আটকে গেল টেবিলে রাখা ফুলদানিটার উপর।সেখানে কিছু রজনীগন্ব্ধা সাজানো।
রজনীগন্ব্ধা শুভ'র খুব প্রিয় ফুল।ওর মনে পড়ে গেল ফেলে আসা সেই দিনগুলির কথা।তিলু ওকে অনেক রজনীগন্ব্ধা কিনে দিত।দু ' হাত ভরে। হঠাৎ তিলুর কথা মনে হল কেন? ও তো সেই কবেই তিলুকে ছেড়ে চলে এসেছে। প্রায় বছর দুয়েক। বিদেশে আসার পর বেশ কিছুদিন যোগাযোগ ছিল ওদের মাঝে।তারপর এখানকার আধুনিক বেশভূষা আর দূরত্ব- দু 'টোই শুভ ' র ভালবাসাকে আস্তে আস্তে ম্লান করে দিয়েছে।আর প্রয়োজন বোধ করেনি তিলুর সাথে যোগাযোগ রাখার।কিন্তু এতদিন পরে এসব কেন? নাহ্, এসব নিয়ে চিন্তা করার সময় ওর নেই এখন। ওর হাতটাকে কিছু একটা করা দরকার।
আবার উঁঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল শুভ।এবার ঠিক পারল। আস্তে আস্তে ড্রইং রুম পেরিয়ে রান্না ঘরের কাছে আসতেই দেখতে পেল, ওর মা শাড়ির আঁচল হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে। গায়ে একটা সাদা শাড়ি জরানো।শুভ' র চোখ আবার বিস্ফরিত হয়ে এল।
-মা! অনেকদিন পর দেখছি তোমাক. কেমন আছ তুমি মা?
-ভালো খোকা, তুই তো আমাকে একদম ভুলে গেলি।সেই কবে তোকে আমার আঁচল দিয়ে তোর মুখটা মুছে দিয়েছি! আয় বাবা, কাছে আয়।আঁচল দিয়ে তোর মুখ খানা মুছে দেই।শুভ মণ্ঞমুগ্ধের মত তাকিয়ে রইল ও'র মার মুখের দিকে।কি দেখছে এসব? কি ভাবছে এসব ও।মা' তো সেই কবেই মারা গেছেন। বছর দুই হবে। রাগ করে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিল ও। তারপর তিনদিন পর বাড়ি ফিরে দেখতে পেয়েছিল, সাদা কাপরে মোড়া মায়ের লাশ।সেই শুভ আবার বাড়ি ছেড়েছে আর ফিরে যায়নি সেখানে।
চলবে..
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:৫৩