নাসার কেপলার টেলিস্কোপ 2009 সালে উৎক্ষেপন করা হয়। যার মূল কাল পৃথিবীর মত বাসযোগ্য গ্রহ খুঁজে বের করা। 2009 সাল থেকে এখন পর্যন্ত কেপলার হাজার হাজার নতুন গ্রহ আবিষ্কার করেছে । এদের মধ্যে অনেক গুলোই প্রায় বা কিছুটা পৃথিবীর মত। কেপলার যে গ্রহগুলো আবিষ্কার করে সেগুলোর নাম কেপলারের নামের সঙ্গে মিল রেখে রাখা হয়। যেমন kepler-62 e বা kepler-188 f । তবে কেপলার শুধু গ্রহই অনুস্দান বা আবিষ্কার করে না নক্ষত্রদেরকেও চিহ্নিত করে যেমন kepler-186 । তবে সম্প্রতি আমারা জানতে পেরেছি যে কেপলার একটি স্টার ডিটেক্ট করেছে এবং ধারনা করা হচ্ছে তার চারপাশে মেগা স্ট্রাকচার রয়েছে। যে স্টারের কথা আমরা বলছি তার অফিসিয়াল নাম KIC 8462852 । কেপলার এই পর্যন্ত 1,50,000 স্টার খুঁজে পেয়েছে। তবে KIC 8462852 এর মত আগে একটিও পাইনি। আসলে KIC 8462852 2011 সালে আবিষ্কার করা হয়। তবে এতদিন এতো সাহস করে বিজ্ঞানীরা বলতে পারেনি যে একটি এলিয়েন স্ট্রাকাচার। এখনও কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছে না যে এটি একটি এলিয়েন স্ট্রাকচার তবে সকল সম্ভবনা বিচার বিশ্লেষন করার পর তারা এই সম্ভবনায় এসে ঠেকেছেন।
বিশ্লেষনে যাবার আগে আমাদের বুঝতে হবে কেপলার কীভাবে কাজ করে। কেপলার গ্রহ নক্ষত্র আবিষ্কার করার পর তার মূল কাজ হল সেই গ্রহটি পৃথিবীর মত কিনা তা বিশ্লেষন করা। কেপলার আবিষ্কৃত গ্রহগুলোর কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য নির্নয় করে। যেমন গ্রহটি কত দিন পর পর তার সূর্যকে প্রদক্ষিন করে। গ্রহটি কত বড়, গ্রহটি তার সূর্য থেকে আসা রশ্মিকে কত পারসেন্ট বা কি পরিমান বাঁধা প্রদান করছে ইত্যাদি।
এখন কোন গ্রহ যদি তার সূর্যকে এক বছর বা তার কাছাকাছি সময়ে একবার প্রদক্ষিন করে তাহলে সেই গ্রহটি পৃথিবীর মত হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি। এর মানে হল গ্রহটি গ্লোডিলক জোনের মধ্যে আছে। সে সূর্যের খুব কাছাকাছি না আবার সূর্য থেকে খুব বেশি দূরেও না। পৃথিবীর মতই ।
তো কোন গ্রহ যখন তার নিজস্ব সূর্যকে প্রদক্ষিন করে তখন কেপলার সেই গ্রহটির কারনে ঐ সূর্য থেকে আসা আলো কত পারেসেন্ট বাধাঁ দেয় তা নির্নয় করে । কেপলার আগে থেকেই ঐ সূর্য থেকে আসা আলো মেপে নেয়। তো সাধারনত সূর্য থেকে আসা আলো বাধাঁ পাওয়ার পরিমান হয় এক পারসেন্ট (1%) এর মত। তবে KIC 8462852 সূর্যের বেলায় এই হার 22% এক কাছাকাছি যেটা অবিস্বাস্য। যেখানে 1% -2% হয়ে থাকে সেখানে 22% অস্বাভাবিক। প্রথমে কেপলার ক্রু ভেবেছিল হয়ত কোন ত্রুটির কারনে এমনটি হয়েছে। তবে সে ব্যাপারে তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। কেপলারে কোন প্রকার ধুলা বা ত্রুটি নেই। এর পরে আসে মহাকাশে ধুলোর মেঘ, গ্রহানু ইত্যাদি ইত্যাদি । তবে 2011 সাল থেকে এই পর্যন্ত সকল সম্ভবনাই বিশ্লেষন করে দেখা হয়েছে। কোন সম্ভাবনাই বিশ্লেষনে ঠিকে থাকতে পারেনি। এখন একমাত্র সম্ভাবনা বা বিশ্বাস হল যে কারনে এত বিপুল পরিমান আলোর বাধাঁ পরছে তা হয়ত কোন বুদ্ধিমান প্রজাতির মেগা স্ট্রাকচার। তারা হয়ত তাদের সূর্যকে ঘিরে রেখে শক্তির চাহিদা পূরন করছে। শক্তির উৎস হিসেবে হয়ত তারা তাদের সূর্যকে ব্যবহার করছে। অনেকটা হয়ত সোলার প্যানেলের মত। এবং আর বিস্ময়ের ব্যাপার হল স্ট্রাকচারটি কোন গ্রহের মত গোলাকার নয় এটি রিং এর মত। এবং সম্পূর্ন সূর্যটিকে চারিদিকে বৃত্তাকারে ঘিরে রয়েছে।
2011 তে আবিষ্কারে পর 2015 তে এসে সবার সামনে আনার কারন হল কেপলার ক্রু এতদিন এই বিষয়টি নিয়ে নানা রকম গবেষনা করেছে বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে ভেবেছে। তাই এখন সবাই এক প্রকার বিশ্বাস করেই নিয়েছে যে এটাই মানবজাতির সর্ব শ্রেষ্ট আবিস্কার । এবং আমরা মহাকাশে বুদ্ধিমান প্রানী খুঁজে পেয়েছি। এই মহূর্তে এই নিয়ে বিজ্ঞান মহলে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে।
তবে আশার বানীর সঙ্গে কিছু নিরাশার বানীও আছে। KIC 8462852 সূর্যটি আমাদের খেকে 1500 আলোকবর্ষ দূরে সেখানে আমরা যদি যেতে চাই তাহলে আলোর গতিবেগে গেলেও আমাদের 1500 বছর লাগবে আর এটা আমাদের জন্য কোন দিনও হয়ত সম্ভব হবে না। 1500 আলোকবর্ষ থেকে যদি কোন বার্তা প্রেরন করা হয় তাহলে আমাদের কাছে আসতে সময় লাগবে সেই 1500 বছর। এবং সবচেয়ে বড় নিরাশার কথা হল আমরা এখন কেপলার টেলিস্কোপ দিয়ে যেটা দেখছি তা আসলে আজ থেকে 1500 বছর আগের আলো বা ছবি। যদি এই স্ট্রাকচারটি কোন ভিন গ্রহী প্রানীর হয়ে থাকে তাহলেও এতদিনে হয়ত তারা সেখানে আর নেই। কিংবা এতদিনে হয়ত তারা আমাদের দিকে মাঝপথে চলে এসেছে, কে জানে। আবার এমন ও হতে পারে তারা তাদের নিজেদের প্রযুক্তি বা আবিষ্কারের ফলে বিলীন হয়েগেছে। যেমন এখন আমরা আমাদের বিলীন হওয়ার ঠিক মাঝ পথে।
পূবে আমিওএকজন.কম | Amioakjon.com এ প্রকাশিত হয়েছে। নাসার_কেপলার_টেলিস্কোপে_মেগা_এলিয়েন_স্ট্রাকচার
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:০০