শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
গণক ঠাকুর বসে আছেন
বটের গাছের তলায়
মাথার পরে বিশাল টিকি
তুলসি মালা গলায়।
শ্যামা চরণ হাত দিয়ে কয়,
“দেখুন হাতের রেখা
ভাল-মন্দ জীবন-মরণ
কোথায় আছে লেখা”?
গণক ঠাকুর হাতটা দেখে
বলল মুচকি হেসে
“তোমার মরণ কাশীর পরে
স্বর্গবাসীর বেশে”।
কাশীর মরণ শোনার পরেই
উল্লাসে যায় ফেটে
“মরলে কাশী স্বর্গে যাব
নরক যাবে কেটে”।
“হাতের রেখায় স্বর্গবাসী”
এইটা শোনার পর
পাপের কাজে মাতাল হলো
থাকলো না আর ডর।
হরেক রকম পাপের কার্য্য
করল অনেক দেশে
খুন, ধর্ষণের অভিযোগটা
উঠল অবশেষে।
প্রজারা সব রাজার কাছে
দিল বিচার ভার
সবার কথা শোনার পরে
করল বিচার তার।
রাজা মশাই বিচার করে
দিলেন তারে ফাঁসি
মুহুর্তেতে মিলিয়ে গেল
শ্যামা চরণের হাসি।
ফাঁসির আগে শ্যামা চরণ
রাজার কাছে বলে,
“গণক ঠাকুরের দর্শন চাই,
আছে বটের তলে”।
বটের তলে গিয়ে শ্যামা
বলছে কেঁদে, “ঠাকুর,
স্বর্গ এখন নরক হলো
কেমনে করব দূর”?
“ভাগ্য দেখে বলে ছিলেন
মরণ হবে কাশী
এখন দেখি ঝুলছে গলায়
রাজার দেয়া ফাঁসি”।
“কেমন তরো ভাগ্য গণেন
উল্টে যায় তার ফল
স্বর্গ এখন নরক হওয়ায়
দেহে পাইনা বল”।
এসব শুনে গণক ঠাকুর
বলল মুচকি হেসে,
“কোন কারণে মৃত্যু দন্ডে
গেলেন আপনি ফেঁসে”?
এই না বলে, হাত দেখে কয়
মুখটি করে কালো,
“নিজের দোষেই ভাগ্য নষ্ট--
ছিল অনেক ভালো”।
“গয়া-কাশীতে মরণ ছিল
ছিল স্বর্গবাস
এখন দেখি সেই রেখাটায়
লেখা সর্বনাশ”।
“অকাম-কুকাম করার ফলে
পাপ যে রাশি রাশি
পাপের চোটে ‘ক’ ফেটে ‘ফ’
তাই তো এখন ফাঁসি”।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩৯