লেখাটা নিয়ে হয়তো আর লেখতে বসতাম না । একটি ছেলের মৃত্যুর পর এত সমাচার করার ইচ্ছাও ছিলো না বিন্দুমাত্র । কিন্তু এই যারা
এই লেখাটি LINK পড়েছেন আর ভুল ধরেছেন । ভুল ধরার আগে যাচাই করার দরকার ছিলো আরেকবার দেখে যাচাই করা । বাচ্চাটার মৃতদেহ পাবার পর উস্কানি শুরু করলেন অথচ কতটুকু বুঝে তা আমি জানিনা । তাই এইবার বাধ্য হয়েই বাকি বিষয়ে বলতেছি প্রশ্ন থাকলে এখানেই করবেন উত্তর দিয়ে শেষ করে দিবো এই বাচ্চাটাকে নিয়ে টানার ইচ্ছাপোষণ আর করছি না যেহেতু মৃত ।
প্রথমেই আমি যেইটা দিয়ে শুরু করবো যে বিজ্ঞান আর আবেগ এক জিনিস না । বিজ্ঞান সবসময় যুক্তিতে বিশ্বাসী । এটাও সত্য যে বাংলাদেশের বিজ্ঞান এমন একটি বিজ্ঞান যা অনেক সময় বহির্বিশ্বের বিজ্ঞানের ( স্ট্যার্ডার্ড ) সাথে মিল খুজে পাওয়া যায় না । কেন ? তা পরে বলছি । আমি দেখতেছি যে এখন জিহাদ ব্যাপারে দুইটি পক্ষ হয়ে গেছে । আবেগী দল ও যুক্তিময় দল ।
মানি আবেগ থাকতেই পারে যেভাবে বাচ্চাটা উদ্ধার হবার পর মানুষ যেভাবে জিনিসপত্র ভাংগা চুরা করা শুরু করছিলো তাতে বোঝা গিয়েছিলো মানুষের ক্ষোভ কেমন আবেগ কেমন ? একটি মৃত বাচ্চা বের হয়ে এসেছে যারা এত চেষ্টা করেও পেলোনা আর কারা কোথাকার কে পেয়ে গেলো , বাচ্চা এসে গেলো । এইটা দেখা মাত্র নিজেকে ঠিক রাখা বড়ই মুশকিল । যুক্তির চেয়ে আবেগের স্থান এইখানে আগে আর এটাই স্বাভাবিক ।
আমাদের এইখানে অনেক সময় অনেক বাবাদের উদ্ভব হয় । তারা তেল পোড়া , পানি পোড়া দিলে রোগ ভালো হয়ে যায় । কিছুদিন আগে ইউটিউবে এমনও দেখলাম যে ফকির বাবা জড়িয়ে ধরতেছে পায়ে চুমু দিতেছে তাদের মহিলাগুলা এমন কি তাদের লজ্জাস্থানেও মেয়েরা চুমু দিচ্ছে । এইতো ভারতে চুমুবাবা ধরা পড়লো যে মহিলাদের চুমু খেতো আর পুরুষদের লেবু ধরায় দিয়ে বিদায় করতো । আচ্ছা এইসব কি আপনি বিশ্বাস করেন ? এইগুলা কি আপনার সত্য মনে হয় ? ( বহির্বিশ্বের বিজ্ঞান কি মানে ? হয় ওখানে এমন ?)
হয়না কারণ এই সম্পর্কে আপনার জ্ঞ্যান আছে ( আপনার ) কিন্তু তাদের নেই(সেই অন্ধবিশ্বাসীরা ) তাই তারা পাঠায় । কিন্তু আপনি যদি শুরুতে এই ভন্ড বাবাকে থাপ্পড় মারেন তাহলে তার আশেপাশের মানুষ কিন্তু আপনাকে জ্যান্ত পুতে ফেলবে যতই চেষ্টা করেন তারা অন্ধবিশ্বাস করে এইসবে ।
তারা এই আলৌকিকতায় বিশ্বাস করে । আপনি , আমি করিনা । ঠিক ক্যাচার , আধুনিক আইপি ক্যামেরা ,মাইনিং সার্ভে ক্যামেরা ,টিভি ক্যামেরা এইসব সম্পর্কে আমি,আপনি কতটুকু জানি ? অবশ্যেই নাম শুনছি কাজ সম্পর্কে কি আমরা সবাই জানি ? কোনটা কি কাজে ব্যবহার হয় ?
আচ্ছা পাইপের ব্যাস ছিলো ১৪ ইঞ্চি আর তারমাঝে আরেকটি পাইপ ছিলো তার ব্যাস ছিলো ৩ ইঞ্চি । তাহলে ১ম টার ব্যাসার্ধ ৭ আর পরের টার ব্যাসার্ধ ১.৫ ইঞ্চি । বাদ দিলে থাকে ৫.৫ ইঞ্চি । এইটা দিয়ে কি সাড়ে ৩ বছরের বাচ্চার মাথা যাবে ? ধরলাম গেলো ৩০০ ফুট নিচে সাবমেরিন পাম্প এ বাচ্চাটা আটকালো না । সম্ভব না তাও ধরি ধরুণ সে নিচে পড়লো আরো ১৫০-৩০০ ফুট নিচে সে কি বেচে থাকবে ? ভাই ৪৫ তলা থেকে আসেন লাফ দিয়ে ট্রাই করি কিন্তু আবেগী আমরা সে বেচে থাকুক,সে বেচে আছে,জুস খেয়েছে এইসব কথা ঠিকই বিশ্বাস করছিলাম ?কি বিশ্বাস করেন নি ? ( বহিবিশ্বের বিজ্ঞান ( স্ট্যান্ডার্ড ) কি তা মানবে ? )
এইবার আসি মূল পয়েন্টে প্রথমে ক্যামেরা পাঠানোর কথা ছিলো ওয়াসার উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মাইনিং সার্ভে ক্যামেরা যা দিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে তারা পানির পরিমাপ করে কিন্তু সেইটা বিকল হয়ে যাওয়ায় সেইটা ঠিক করতে দিয়ে পাঠানো হয় বুয়েট বিশেষজ্ঞদের তৈরীর যন্ত্র ক্যাচার ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা যা দিয়ে আমরা পুরোদেশ দেখেছি যে শেষ প্রান্তে চট,টিকটিকি,তেলাপোকা,ককশীট পাওয়া গিয়েছিলো আর কিছু না । বাচ্চাটি কইগেলো !! নিচে যদিও পড়েও যায় তাহলে এই ককশীট,চট থাকবে কি করে ঐগুলা সহ পড়ে যেতো ।
এবার পাঠানো হলো বেসকারী একটি বাইরের দলকে যারা আইপি ক্যামেরা পাঠালো কিন্তু তাও গিয়ে সেই একই জিনিস দেখলো তাই ফিরে এলো । মানুষ হতাশ হয়ে পড়লো সবাই ধরেই নিলো কেউ নেই আসলে । টিভি অফ করে ঘুমাতে গেলো আর যারা স্পটে ছিলো তারাও বাড়ি আসতে শুরু করলো । লোকজন কমতে শুরু করেছে আর পুলিশও সবলোককে তাড়িয়ে দিচ্ছে ।
কিন্তু সরকারী প্রতিষ্ঠান এত সহজে কাজের সমাপ্তি ঘোষণা করতে পারেনা । তারা হাল ছাড়তে নারাজ । ফায়ার ব্রিগেড ঠিক করলো তারা সেই চট বস্তা তুলে আনবে তারপর দেখবে তলায় কিছু আছে কিনা । তারা তাই করলো সর্বশেষ ভোড় রাতে তারা ওয়াসার সেই মাইনিং সার্ভে ক্যামেরাটি নিচে পাঠালো এইটাই তাদের শেষ চেষ্টা কিন্তু তারা এইবার খুব ভালোমত খুজে দেখলো আশে পাশে কিন্তু মানব অস্তিত্ব খুজে পেলোনা । এইবার তারা বুঝতে পারলো আসলে কিছু নেই তারা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ,বুয়েটের বিশেষজ্ঞ সবার কাছ থেকে তারা মতামত নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সমাপ্তি ঘোষণা করলো উদ্ধারকাজের ।
ব্যস লোকজন যারাও ছিলো তারাও চলে গেলো । টিভি চ্যানেল গুলার ভিতর শুধু ৭১ তখন লাইভ দেখাচ্ছিলো বাকিরা আগেই অফ করে দিছে ।
এবার সেই উদ্ধারকারীদের একজন পাইপ সম্পর্কে দেখে গেলো আর খিলগাঁওয়ের ওভারব্রীজ থেকে লোহার রড ঢালাই করে লোকাল ক্যাচার বানিয়ে একটা সিম্পল টিভি ক্যামেরা ঢুকিয়ে তারা বের করে আনলো ।
যাদের সবাই ছাত্র । ডিপ্লোমা , একজন বেসরকারী বিশববিদ্যালয়ে ইইই পড়তেছে । ঘটনা যে এরা কেউ এদের কাউকে চিনেনা !!! এইখানে এসে তারা প্ল্যান করছে যাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই কিন্তু তারা পারছে যেখানে বুয়েটের ক্যাচার পারেনি তাদের ক্যাচার পারছে । যেইখানে বুয়েটের উচ্চক্ষমতার ক্যামেরা পারেনি , ওয়াসার মাইনিং সার্ভে ক্যামেরা যা বাংলাদেশের অন্য সরকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে নেই সেই ক্যামেরায় কিছু পেলোনা ,পেলোনা সেই বাইরের বিশেষজ্ঞদের আইপি ক্যামেরা সেইখানে পারলো তাদের একটি লোহার ক্যাচার আর টিভি ক্যামেরা । আর আমরা তা বিশ্বাস করে হাত তালি দিতেছি ।
মাঝখানে কিন্তু কোন মানুষই ছিলো না !! কিছু প্রশ্ন মাথায় আসতেছে
১) মাঝখানে যখন মানুষ ছিলো না তখন তো বাচ্চাটাকে আনা হয়নি কোন বস্তায় করে উদ্ধারের নামে ?
২) উদ্ধারের পুরো ভিডিও টা কেন দেখানো হলো না কিভাবে ক্যামেরা ঢুকানো হলো ক্যামেরা যাচ্ছে বাচ্চাটাকে পেলো !! আমি সব জায়গাটাতেই দেখলাম শুধুমাত্র বাচ্চাটিকে দেখা যাচ্ছে আর পাইপের একটু ভিতর থেকে বাচ্চাটিকে তুলে ফেললো শুধু এইপর্যন্ত কিন্তু অন্যগুলার মত পুরাপুরি কেন দেখানো হলো না ?
৩) একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর যতক্ষণ না উদ্ধার কাজ চলছিলো সেইখান থেকে কেনো মিডিয়া সরে আসলো !! কেনো এই মানুষগুলোকে সরিয়ে দেওয়া হলো পুলিশ দিয়ে ??
৪) ১৪৪ ধারা জারির পর গাজীপুরের হরতাল থেকে মিডিয়া ও জনতার চোখ সরানো হলো ? কি এমন হতো এই হরতালে !! আগেও তো এমন অনেক হরতাল অবরোধ গেছে
৫) লোকের আড়ালে কি বাচাটির লাশ ধামা চাপা দিবার জন্য ঐখানেই কি বাচ্চাটার লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছিলো যে সকালের আরেকটা নাটক দৃশ্যে চালানোর জন্য ।
৬) আচ্ছা এইটা কি ঐ বাচ্চাটাই ছিলো ? ছোট বাচ্চাদের কিন্তু চেহারা একটু একই রকম থাকে !! আমরা কিন্তু তা বুঝতে পারিনা সহজে ।
৭) বাচ্চাটি এমন কোন বড় ঘরের সন্তান ছিলো না কিন্তু তাও এত বড় পাইপ থেকে পড়ে গিয়ে বাচ্চাটি মরে গেছে এইটা ভেবেই আর এইটা নিয়ে এত ধামাকা হতো না আর এইটাই স্বাভাবিক কিন্তু ফায়ার ব্রিগেড,এত মিডিয়ার কেন আগমণ !! কেনই তাদের মিথ্যা বলার ধরণ !! জুস খেলো !! উত্তর দিলো আওয়াজের !!
কি কারণ তা এই ছোট্ট মাথায় মিলাতে পারছিনা !! কিন্তু যেইটা উদ্ধারের ব্যাপারটা বৈজ্ঞানিক উপায়ে বিশ্বাসযোগ্য নয় । কেন এই নাটকের জন্ম দেওয়া !! যুক্তির ক্ষেত্রে মিলাতে পারছিনা কিছুই আপনি আবেগের ক্ষেত্রে হয়তো মিলাতে পারেন বা বিশ্বাস করতে পারেন অলৌকিক কিছুকে । তাহলে শেষ যেইটা বলবো বুয়েট হেরে গেছে ,ওয়াসা হেরে গেছে । সেই ৩ তরুণ জিতে গেছে । এইবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের কথা তো সত্য নাও হতে পারে ? তাদের মেশিনও তো ভুল থাকতে পারে তাইনা ? তাদের কথা মত মৃত তো নাও হতে পারে !!! এক কাজ করা যাতে পারে সেই বাবাদের কাছে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে ? যাদের অলৌকিক ক্ষমতা আর আমাদের অন্ধবিশ্বাসে হয়তো কিছু ঘটেও যেতে পারে তাইনা ?? আর সত্যি যদি বলি ধরেণ এই মুহুর্তে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে কেউ যদি বাচ্চাটাকে নিয়ে গিয়ে কোন বাবার মাধ্যমে ঠিক করায় যে বাচ্চাটি বেচে আছে ( যদি বাচ্চার চেহারা চেঞ্জ করে অন্য বাচ্চা এনে )। আমি শিওর এইটাই মানুষ বিশ্বাস করবে ।
অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী না আমি বলবো উপকারী !!! তাতে মানুষকে ঘোল খাওয়ানো যায় ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৫:২৫