জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সুযোগ দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ সংস্থাটির সদর দফতরের এক বিবৃতি দিয়েছে ও মানবাধিকার সংস্থাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি দিয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নাফ নদী পেরিয়ে আসাদের ঢুকতে না দেওয়ায় অজস্র নারী-শিশু ও আহত ব্যক্তিদের নিয়ে তাদের নৌকাগুলো এখন সমুদ্রে ভাসছে।
জেনেভায় ইউএনএইচসিআরের সদর দফতর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে রাখাইন প্রদেশে বৌদ্ধ ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে বেশ কিছু মানুষ। জাতিসংঘের যে দল ওই এলাকায় পরিদর্শন করেছে তারা এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালানোর প্রমাণ পেয়েছেন, দেখেছেন গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু শরণার্থী সীমান্তের নাফ নদী পেরিয়ে উল্টোদিকে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেখানে যেহেতু তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাই অজস্র নারী-শিশু ও আহত ব্যক্তিদের নিয়ে তাদের নৌকাগুলো এখন সমুদ্রে ভাসছে। তাদের কাছে খাবারদাবার, পানীয় জল বা ওষুধপত্র কিছুই নেই। বলা হয়েছে, জাতিসংঘ জানে একই ধরনের সংঘর্ষের জেরে পালিয়ে আসা বহু শরণার্থীকে এর আগে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছিল এবং এখনো প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। কিন্তু তার পরেও যারা এখন পালিয়ে আসছেন তারা মরিয়া হয়ে প্রাণ বাঁচাতেই আসছেন। ফলে সহমর্মিতা ও সহানুভূতির দীর্ঘ ইতিহাস থাকা বাংলাদেশ তাদের এই মানবিক সংকটে সাড়া দিবে বলে আহ্বান সংস্থাটির। অপরদিকে, নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠিতে বলেছে, আরাকান রাজ্যে জাতিগত সংঘাতে যখন জীবন সংকটাপন্ন, সে মুহূর্তে সীমান্ত বন্ধ রাখার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষায় তার অঙ্গীকার লঙ্ঘন করছে। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে আসা লোকজনকে সুরক্ষার স্বার্থে সীমান্ত অবারিত রাখার ব্যাপারে বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমরা বুঝতে পারছি, এ পরিস্থিতি আপনার দেশের জন্য এক অপ্রত্যাশিত বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। তবে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত উন্মুক্ত রাখুন। এ মুহূর্তে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই, বরং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। সীমান্ত খুলে দিন, মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে আন্তর্জাতিক সহমর্মিতা প্রকাশের স্বার্থে বৈঠক আহ্বান জরুরি।
সূত্র