একবার এক নারীবাদী লেখিকার লেখা পড়ছিলাম। ঐ লেখিকা তার লেখনিতে বাসে মহিলাদের সংরক্ষিত সিটের ব্যাপারে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। ঐ নারীবাদী নারী পুরুষের সম অধিকারের যুক্তি দাঁড় করিয়ে বলে, “পুরুষের জন্য নির্ধারিত সিট না থাকলে নারীদের জন্য আলাদা সিট থাকবে কেন, নারী কি আলাদা কোন প্রাণী?” (বাসে ভুক্তভোগী নারীদের দাবি কি?)
আমার কথাও কিন্তু এক। তা হল নারী জাতি কি মানুষ না। তাহলে পুরুষ দিবস না থাকলে নারী দিবস থাকবে কেন?
নারীবাদীদের দাবি, নারী দিবস পালন করে নারীরা নিজেদের অধিকার নিশ্চিত করে বা তা নিশ্চিত করতে দাবি তুলে থাকে।
একটা সত্য কথা বলি, তাতে কেউ যদি কিছু মনে করেন তাহলে আমার কিছু করার নেই। টয়লেট ব্যবহার করা কিন্তু মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় একটি অনুষঙ্গ। এর ব্যবহার ছাড়া কেউ চলতে পারে। যার যখন এর প্রয়োজন হয়. তখন সে এ ভিন্ন অন্যকিছুই চিন্তা করতে পারে না। প্রয়োজনে এর জন্য কোটি টাকা খরচ করতেও রাজি। কিন্তু নারীকে যদি এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয় তাহলে তো খুব খারাপ কথা। সম্প্রতি ভারত ও চীনের নারীরা টয়লেটের অভাবে পুরুষ টয়লেট ‘অকুপাই’ করার আন্দোলন শুরু করে। এই কষ্ট বড় কষ্ট।
আমার মতে এইবার নারী আন্দোলনের শ্লোগান হওয়া উচিত ছিল “যে সব দেশে পুরুষের পাশাপাশি নারী টয়লেট নেই সেখানে তার ব্যবস্থা করা।”
যেহেতু বাংলাদেশের প্রায় সব যায়গাতেই (শপিংমল, পাবলিক টয়লেট, রেস্টুরেন্ট, অফিস, হাসপাতাল) পৃথক নারী টয়লেট রয়েছে সেহেতু বাংলাদেশের নারীবাদীদের ফখর করে বলতে পারত সারা বিশ্বে যেন বাংলাদেশকে নারী অধিকারের রোল মডেল হিসেবে ঘোষণা করে তাকে অনুসরন করে। কিন্তু টয়লেটের মত এতবড় একটা মানবিক বিষয়কে এড়িয়ে গিয়ে বাংলাদেশের নারীবাদীরা নারীদিবসে উল্টো পথ বেছে নেয়। এমনসব প্রকা- সফল নারীকে (!) পথিকৃৎ হিসেবে বেছে নেয় যারা ঐ টয়লেটের বাইরে নারীদের পোষাক খুলে দেয়।
যেমন ধরেন: বিবি রাসেল। এই বিবি রাসেল সর্বনি¤œ পোষাকে নারীর শরীরকে প্রদর্শনে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। আর তাই এই নারী দিবসের সে এক সফল নারী এবং নারীবাদীদের পথিকৃৎ।
আবার ধরেন: কানিজ আলমাস। সে একজন নারী পথিকৃত এবং সফল উদ্যোক্তা। তাকে নিয়ে নারীবাদীদের গর্বে গর্ভবতী হওয়ার যেন শেষ নেই। তার চরম সফলতা(!) সে নারীদের স্পা করার গোপন ভিডিও ধারন করে তা বাজারজাত করে।
আবার ধরেন: আমাদের রুমানা ম্যাডামের কথা। তিনি একজন সফল নারী। কারণ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রাচ্যের অক্সফোর্ডের(!) একজন সম্মানিতা শিক্ষিকা এবং খুবুই জ্ঞানের অধিকারী ডক্টরেট। তিনি নারীবাদীদের দৃষ্টিতে কখন শহীদ, কখন বা গাজী। কারণ তিনি নারীবাদ (এক পুরুষে থাকব না, ঘরের বাধন মানব না) -কে জয়ী করতে নিজের চক্ষু পর্যন্ত বিসর্জন দিয়েছেন। এমনকি শেষ পর্যন্ত তাকে আহত করা স্বামীকে জেলের মধ্যে উপযুক্ত শাস্তি দিতে পেরেছেন (কেউ কেউ বলে)।
আমাকে যদি নারীবাদীরা নারী বিদ্বেষী ভাবেন তাহলে তা হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ভুল। যুক্তরাষ্ট্রে সেনাবাহিনীতে নারী সেনাদের রাখার অন্যতম কারণ পুরুষসেনাদের মনোরঞ্জন করা। তাহলে যারা ঐ পশ্চিমাদের থেকে তালিম নিয়ে পশ্চিমা আদলে মুসলিম নারীদের সাজাতে চায়, তারাও চায় ঐ নারী সেনাদের মত আমাদের মা-বোনরা পুরুষের মনোরঞ্জনের খোরাক হোক।
আর তাই আমরা নারীবাদী চাই না, চাই না একদিনের নারীদিবস। আমরা চাই সঠিক মুসলমান। যেখানে নারী-পুরুষ সম্মিলিত ভাবে প্রত্যেকদিনই নারীদের সঠিক অধিকার দেবে, নারীদের পর্দা করতে বলবে ও ভোগ্য পন্য হতে বাধা দেবে। নারীজাতি নিয়ে আসবে সর্বশ্রেষ্ট মহিমায় সমুজ্জ্বল।
সূত্র