পীর শব্দটি শুনলে সবাই একটু নরেচরে বসেন। আবার একদল এই শব্দটিতে এলার্জির দোহাই দিয়ে নাক সিটকাবে। অনেকের চোখে ভেসে উঠবে, লাল কাপড় পরিহিত কোন ব্যক্তি যার আশে পাশে পুরুষ মহিলা একত্রে বসে গানবাদ্য করছে, নেশা করছে। মনে পরে সিলেবাসের হুযূর ক্বিবলা বা লালসালু গল্পের কথা। এইসব কুচিন্তার জন্য অবশ্য এই শব্দটি ফার্সি শব্দ অভিধান থেকে বাদ যাবে না। শব্দটির বাংলা অর্থ শিক্ষক, ইংরেজী টিচার।
মূলত যিনি দ্বীন ইসলামের প্রকৃত জ্ঞানের (ইলমে শরীয়ত ও ইলমে মারিফত) শিক্ষা দেন, উনাকে বলা হয় পীর সাহেব।
এই শব্দটিতে বর্তমানে এলার্জির কারণ দুইটি-
১) সম্রাজ্যবাদী, যারা সারাবিশ্বের মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, তারা চায় মুসলমানরা প্রকৃত জ্ঞান থেকে দূরে থাকুক
২) একদল ইসলামী নামধারী মাওলানা,যারা চায় না মুসলমানরা প্রকৃত শিক্ষা লাভ করুক, তাহলে ইসলাম নিয়ে তাদের ধর্ম ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।
এই দলগুলো বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে পীর সাহেব থেকে সাধারণ মানুষকে দূরে রাখার চেষ্টা করে। যেমন:
“পীর বলে কিছু নেই, কুরআন-হাদীস পড়লেই হয়”
আমি একটা বিষয়ে শতভাগ বিশ্বাসী,
আজ যদি বলা হয়, বড় পীর আব্দুল কাদির জিলানি রহমতুল্লাহি আবার এসেছেন, তবে অবশ্যই সাবা বিশ্বের সমস্ত মুসলমান তো অবশ্যই অনেক বিধর্মী উনার সাক্ষতে যাবেন। এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু উনার নাম মুবারকের পূর্বে কিন্তু পীর সাহেব শব্দটি রয়ে গেছে। তার মানে পীর সাহেব শব্দটি হটাৎ উড়ে জুড়ে বসে নাই। এই শব্দটি স্বাভাবিক।
মুসলমানরা প্রকৃত জ্ঞানের অভাবে এই কথাগুলো বলে।
যেমন: আজমেরি শরীফে শায়িত হযরত খাজা মঈনুদ্দিন চীশতী রহমতুল্লাহি একজন পীর সাহেব, ফুরফুরাহ শরীফ এর পীর সাহেব হযরত আবু বকর সিদ্দিক রহমতুল্লাহি একজন পীর সাহেব, ঢাকার কমলাপুরে আছেন, হযরত পীর জঙ্গি রহমতুল্লাহি।
এই রকম লক্ষ কোটি উদাহরণ রয়েছে।
বর্তমান সময়েও পীর সাহেব আসবেন, ওলী আল্লাহ আসবেন এটি হাদীস শরীফ এরই কথা।
ভাই! বাজারে মাল কিনতে গেলে ভাল মালের সাথে ভেজাল মালও থাকে, তাইতো আমরা দুই টাকার মাল কিনতে গিয়েও আমরা বহু যাচাই বাছাই করেই কিনি। তাহলে বর্তমানেও হক্ব পীর সাহেবের সাথে ভন্ড পীরও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রেও পীর সাহেব উনাকে কুরআন শরীফ হাদীস শরীফ দ্বারা যাচাই বাছাই করতে হবে।
............................
আজ পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াজদাহম, হযরত বড় পীর আব্দুল ক্বাদির জিলানি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিদায়ের দিন। (হিজরী সনে রাত আগে আসায় ১১ই মাহে রবিউছ ছানী শরীফ এবং ইংরেজী ৫ই মার্চ, ২০১২)।