মহান আল্লাহ তায়ালার একান্ত অনুগ্রহ লাভের আশায় এবং প্রিয়নবী স. কে সালাম জানানোর জন্য আমার আব্বা, আম্মা পবিত্র হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে আজ সৌদিআরব পৌছেছেন। মাত্র ২মাস আগে তাদের মেঝ সন্তান, আমার ভাই নাসিরকে (৩১) হারিয়ে শোকাহত পিতামাতা দুজনেই খুব অসুস্থ্য হয়ে গেছেন। কান্নাকাটি আর নাওয়া খাওয়া বন্ধ করে আম্মা হয়ে গেছে শারীরিক অসুস্থ্য, আব্বা মানসিক ভাবে দূর্বল হয়ে গেছেন। হজ্জের কঠোর পরিশ্রমের কাজগুলো সুন্দরভাবে সুস্থ্য থেকে যেন সব আহকাম সমুহ ধারাবাহিকভাবে পালন করতে পারেন সবার নিকট সেই দোয়া প্রত্যাশা করছি। ।
হজ্বে গমন নিয়ে প্রথম থেকেই অনেক বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে। টাকা পয়সা জমা দেওয়ার পর ছোটভাই নাসির অসুস্থ্য হয়ে যায়। যখন ডাক্তার বললো তার চিকিৎসার জন্য ২৫-৩০লক্ষ টাকা লাগবে, তখন আম্মা বললো আমি হজ্জে যাবনা, ঐ টাকা দিয়ে আমার ছেলের চিকিৎসা করাও, নাসির বললো, না, আমার চিকিৎসার জন্য হজ্বের টাকা উঠানো দরকার নেই (যদিও জমা টাকা উঠানোর সুযোগও নেই)। যাই হোক ছোটভাইয়ের মৃত্যুর ফলে চরম বিপর্যয়ের অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় যাওয়া নিয়ে দোলাচল সৃষ্টি হয়। যাওয়ার জন্য যখন প্রস্তুতি নেওয়া হলো তখন আর ভিসা হয়না, অপেক্ষার পর ভিসা হয়েছে, কিন্তু টিকেট হয়না, চিন্তায় চিন্তায় যাওয়ার আশাও অনেকটা ছেড়ে দেওয়ার মত, হজ্ব ফ্লাইট প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে যখন টিকেট পাওয়া গেল, ঢাকায় আনা হলো এবার এজেন্সির আবদার অতিরিক্ত ৪০হাজার করে না দিলে তারা ফ্লাইট দিবেনা, তারা নাকি অতিরিক্ত টাকা সরকারী দলকে চাঁদা দিয়ে ভিসা নিতে হয়েছে। আহা সেকি টেনশন, অনেকে অজানা আশংকায় কেঁদেই দিয়েছেন। তার উপর বাসে আসার পথে রিজার্ভ গাড়ী হজ্বযাত্রী লেখা থাকার পরেও জনতার বন্ধু পুলিশ কমলাপুরে গাড়ী আটকে দিলো, ঢাকায় ঢুকতে দিবেনা। অতপর দেন দরবার করার পর কিছু বিষ্ঠা খেয়ে গাড়ী ছাড়লো। সব কিছু সমাধা হওয়ার পর সবাই এহরাম বেঁধে এয়ারপোর্টে বসে আছে, একজন মতিঝিল অফিস থেকে রওয়ানা হয়েছে টিকেট আর পাসপোর্ট নিয়ে, সে আসার কথা ৮টা সাড়ে আটটার মধ্যে, ১০টায় ইমিগ্রেশনে ঢুকবে সবাই, কিন্তু কষ্ট আর টেনশন যেন পিছু ছাড়ছেইনা। ৯টা, ১০টা, ১১টা,১২টা তবুও খবর নেই টিকেট আর পাসপোর্টের। সে জামে পড়ছে। এইদিকে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ঘোষনা দিচ্ছে অল্প সময়ের মধ্যে না আসতে পারলে যাওয়া যাবেনা। সে কি অপেক্ষা টেনশন হতাশা কষ্ট, না দেখলে বুঝা মুশকিল। একজনের হোন্ডা থাকায় তাকে অনুরোধ করায় সে রং সাইডে ড্রাইভ করে টিকেট ওয়ালাকে নিয়ে আসার পর তড়িগড়ি করে সামান্য সময় আগে সবাই ডুকে পড়েছে। আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু কষ্ট যেন তকদিরেই লেখা তাই জেদ্দা বিমান বন্দরেও আজ সারাদিন বসে ছিল, কোম্পানীর লোকেরা নাকি আসতেছে আসতেছে আসতেছে। আল্লাহ তায়ালার মেহমানদেরকে যারা ব্যবসার উপলক্ষ্য বানিয়ে এত কষ্ট দিচ্ছে তাদেরকে আল্লাহ হেদায়াত দান করুক।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৬