উদভ্রান্ত একটা লোক
হন্যে হয়ে কিছু একটা খুঁজছে
উন্মাদ তার চোখের দৃষ্টি
লাল বটফলের মতো। একটু ফোলা ফোলা
শহুরে ভদ্দরলোক
বেশভূষা ধোপ-দুরস্ত কিন্তু ধূলোমলিন
গালে না কামানো দাড়ি-গোঁফ
খুব বেশী করে যা টানছে তা ঐ
মিষ্টি হাসি!
অদ্ভুত ব্যাপারটি হলো তা’ চোখ ছোঁয় না।
আজকে এ নিয়ে দু’টো হাটবার গেলো
গেলো রোববার দেখেছিলাম শেখের চরে
তার আগের দিন তেঁতুল তলায়
তাও আবার ভরা কাটালের অমানিশায়
রাতদুপুরে দেখেছিলাম হনহন করে
হেঁটে যাচ্ছে বেথুন ঝোপ মাড়িয়ে।
লোকটা কে? জিজ্ঞাসাটা এখন সাত গ্রামের
খাওয়া দাওয়ার ঠিক নেই
নাইছে না কয় মাস ভগবান জানেন।
গুটি বসন্তের উপদ্রব বেড়েছে শুনেছি
বালাই ষাট্। ষাট্ ষাট্ ষাট্-
হে ভগবান রক্ষে করো।
উল্টোডাঙ্গার মজিদ মাস্টার
একদিন শলা করে-
ধরলো তাঁকে পথের মাঝে
মশাই কাকে খুঁজছেন?
মুন্সি তার টুপি খুলে ফেললো
শম্ভু কাপে চা না ঢেলে, ঢাললো চুলায়
আধখানা গোঁফে নরসুন্দর হরি বাইরে এলো
সত্যবাবু চাল আড়তের ঝাপ ফেললো
এমনি এসে সবাই মিলে গোল হলো
শুনশান নীরবতায় পাতা ঝরার শব্দও নেই।
লোকটির পলার আওয়াজ বেশ ভরাট
পুরুষ পুরুষ
শুনুন মশাই-
আমি একজন লোক কে খুঁজছি
যে বলেছিলো আর শুনছিলাম শৈশব থেকে
“হাত ঘোরালে নাড়ু পাবে
না সাধলেও মোহন বাজাবে বাঁশি
দুধে-আলতায় জন্মাবে উত্তরসূরি
ময়ূরপঙ্খী নিয়ে যাবে কল্পলোকে”
“মহাজ্ঞানী মহাজন যে পথে ক’রে গমন
হয়েছেন প্রাতঃস্মরণীয়,
সেই পথ লক্ষ্য ক’রে স্বীয় কীর্তি-ধ্বজা ধ’রে
আমরাও হব বরণীয়।
সময়-সাগরতীরে পদাঙ্ক অঙ্কিত ক’রে
আমরাও হব যে অমর;
সেই চিহ্ন লক্ষ্য করে অন্য কোন জন পরে
যশোদ্ধারে আসিবে সত্বর।”
এই কথা দেওয়া লোকটিকে খুঁজছি
খুঁজেছি তাকে গরিহাটায়
বড় বাজারের অলিগলি
বাতাসপুরের খালে বিলে
খালাসিটোলার শ্মশানে
পেলেই তাকে ধরবো, গলা টিপে
ছেলেভোলানো মিথ্যে বলার ভানে।
উষ্ণ ধরা তেতেই গেলে
কুয়াশার সাধ্যি কি? তুষার ঝরায়
ধন্ধাবাজীর নবাব কেমন
এইবার ঠিক জেনেই নিবো-
ঐ লোকটিকেই খুঁজছি
প্রশ্ন করে-করে, এবার সব জানবো।
।
।
।
সব্বাইকে ঈদ মোবারক।
কৃতজ্ঞতা: শুদ্ধসত্ত্ব বসু ও হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও কবি