প্রথম আলো মূলত: একটি ব্যবসায়িক পত্রিকা, এবং সময় সুযোগ মত নোংরা পর্ণোগ্রাফী দিয়ে তরুণদের মন জয় করা এ পত্রিকার একটি কৌশল বলে যে প্রচলিত ধারনা ছিল তা আবারো প্রমাণিত হল। এই সময়ে সবচাইতে আলোচিত শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে যখন নানা প্রচার-অপপ্রচার-ধারণা বাতাসে বয়ে বেড়াচ্ছে। যখন আলেম সমাজ এ মঞ্চ কে বিতর্কিত আক্ষা দিয়ে বন্ধ করার দাবী তুলছে। যখন প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীসভার মিটিং এ বলছেন শাহবাগ মঞ্চ এত দু:সাহস কোথায় পায়, কে লিখে এর মুখপাত্রের ভাষন? যখন প্রধান বিরোধী দলের নেতা সমাবেশে শাহবাগের ছেলে-মেয়েদের নষ্ট বলে আখ্যা দেন তখন একই দিনে প্রথম আলো পত্রিকায় শাহবাগ নিয়ে দুটি চটি-পর্ণো জাতীয় গল্প ছাপা হয় এবং উভয়টি লিখেন দু'জন বিখ্যাত লেখক হাসানাত আব্দুল হাই এবং অদিতি ফাল্গুনী। বিষয়টি কি খুবই স্বাভাবিক ? মজার ব্যপার হলো হাসনাত আব্দুল হাই লিখিত "ক্যামেরার সামনে মেয়েটি "-র জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে তা প্রত্যাহার করা হলেও অদিতি ফাল্গুণী লিখিত "উম্মাদিনী কাল" কিন্তু ঠিকই রেখে দিয়েছে প্রথম আলো্ অথচ অদিতির লেখায় পরোক্ষভাবে শাহবাগ মঞ্চে জড়ো হওয়াদের বিকৃত চরিত্র, দিন-রাত একসাথে থাকা, জাহানারা ইমাম কে হেয়ালী করে আরো নোংরা পর্ণো বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। ব্লগের বন্ধুদের জন্য নীচে উম্মাদিনী কাল থেকে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো নীচে:
উম্মাদিনী কাল (অদিতি ফাল্গুনী) কিয়দংশ:
........না, হাঁটুর নিচে সালোয়ার বা সায়া টাইপের কিছু নেই। একটি গোটা জামাই শুধু পরনে। স্তন না অতি ভারী, না অতি শীর্ণ। চুলগুলো একটা আরেকটার ওপর জটা পাকিয়ে। স্নান করেনি কত বছর ? ‘দিবি না সিগারেট ? আমি কইলাম সব স্লোগান কইতে পারি! ক-তে কাদের মোল্লা, তুই রাজাকার/ তুই রাজাকার! ন-তে নিজামী, তুই রাজাকার/ তুই রাজাকার! জ্বালো-জ্বালো-আগুন জ্বালো! তোমার আমার ঠিকানা/ পদ্মা-মেঘনা-যমুনা...কি রে ভাইয়ারা, পারতাছি না? এইবার দে...এই পাগলিডারে একটা সিগারেট দে।’……………….. শুরুতে তা ছিল বারডেম হাসপাতালের উল্টা দিকে।
মাথায় ঘোমটা দেওয়া এক চাচির ছবি বড় করে টাঙানো। লম্বা একটা পতাকা ঝুলত বাতাসে আসমান বরাবর। আর লোক আর লোক। গাড়িতে করে মানুষ আসছে। আসছে টিভির লোকজন।……………………..তা গত দুই মাস সে শাহবাগেই ঠাঁই নাড়া। কত ফুল, গান-বাজনা, মাইক হাতে আপাদের স্লোগান, মোমবাতিতে ম্যাচের ঘষায় ম্যাজিকের আলোতে সারা শহরে তারাবাতি জ্বলল। এই ভাই-আপাদের অনেকে একটা মাস রাস্তাতেই থাকল আর রাস্তাতেই ঘুমাল...ভ্যানগাড়ির মতো কী একটা নাকি ভাতরুমে (বাথরুমে) যায়। তারপর ধীরে ধীরে মানুষ কমতে থাকে। আবার মাঝেমধ্যে বাড়ে। তখন মনটা কেমন করে। গত একটা মাস খুব ভালো গেছে। মাইকে গানের সঙ্গে সে-ও গান গেয়েছে। মাঝরাতে গান। ভোররাতে গান। তারপর মাঝখানে কদিন লোক একদম কমে গেল। আজ আবার মানুষ আসছে।………….
সাদির হাত থেকে সিগারেট নিয়ে আনন্দে দুটো সুখ টান দেয় পাগলি। মাথার ওপর চাঁদ ঝকঝক করছে।
‘অই আপারা! আইজ ইমরান ভাই কই? ইমরান ভাই আসব না? লাকি আপা কুনখানে? আমি লাকি আপার মতো স্লোগান দিতে পারি। তোরা শোন্। শুইনা আমারে ১০টা টাকা দে।’…………‘আচ্ছা-একটা ব্যাপার...’ ইতস্তত নরম গলায় শ্রাবস্তী বলে, ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার না হয় আমাদের করতেই হবে। নাহলে বাংলাদেশ পাপমুক্ত হবে না। আমার পিসি ফোন করেছিলেন। ওনাদের উপজেলায় আজও দুইটা মন্দির ভেঙেছে। তা-ও না হয় মানলাম। লাশ পড়ছে। মানলাম। কিন্তু বিচারের পরে...ধরো, এই পাগলি...ও কি খেতে পাবে?’………………তবু আজ রাতে বউকে বাসায় রেখে ক্যাম্পাসের পুরোনো বান্ধবীকে বাসায় পৌঁছে দেবে না কি সে? মনের দুঃখে মোস্তাফিজ একাই অর্থাৎ বউকে ছাড়াই সর্বত্র ঘুরে বেড়ায় বাউল বাউল মুখে। সাদি জর্জ হ্যারিসন হওয়ার স্বপ্নে কোনো দিন চাকরি করবে না। তাই কোনো দিন কোনো মেয়েকেই সে বিয়ে করবে না। বিয়ে না করলেও প্রেম করেছে বেশ কিছু গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে। সব কয়টাই ব্রেকআপ।…………. আহ মোস্তাফিজ...ঝগড়া করিস না! শ্রাবস্তী, অর্থনৈতিক মুক্তি বা সমাজতন্ত্রের প্রশ্ন পরে। এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারই বড় প্রশ্ন। আমরা অঙ্ক পরীক্ষার দিনে অঙ্ক আর বাংলা পরীক্ষার দিনে বাংলা পরীক্ষা দিই।’ অনুপম রেফারির রায় দেয়।………………আমি কি আমিই? নাকি অনেক রাত অবধি ফেসবুকে বন্ধুদের শেয়ার করা একাত্তরের সেই যে বীরাঙ্গনা...পাগলির মতো দেখতে...দুই হাত ওর শিকলে বেঁধে রেখেছিল পাকিস্তানি বাহিনী আর রাজাকাররা.. ছেঁড়া, ময়লা জামার নিচ থেকে বের হয়ে আসছিল তার অনিন্দ্য কোমল নারীমাংসই বটে...আমি কি সেই বীরাঙ্গনা? দূর...তখন তো জন্মই হয়নি আমার...তবে আমি কী করে সে হব? আমাদের ধমনিতে শহীদের রক্ত...কানের কাছে কেউ ফিসফিস করে বলছিল এখন নতুন স্লোগান দিতে হবে...আমাদের ধমনিতে বীরাঙ্গনার রক্ত...না, আমি বীরাঙ্গনা না...আমি ধর্ষিতা হইনি...এই রক্ত কোনো দিন বৃথা যেতে পারে না! আমি আজও অক্ষত আছি...ভালো মেয়ে আছি...এই রক্ত কোনোদিন পরাভব মানে না...দ্যাখো, তোমরা...বিশ্বাস না হলে পরীক্ষা করো আমার শরীর!............................ যে আমি অনার্য বাংলার ধানসিঁড়ি শ্যামলিমা...বেতফলের অরণ্যে লক্ষ্মী প্যাঁচার ডানা ঝাপটানি, জলাঙ্গির কুয়াশাকীর্ণ নীলাভ সকাল...সেই আমার যোনি ও জরায়ুর ভেতর দিয়ে ছিঁড়ে-ফেড়ে মার্চপাস্ট করে যায়নি আর্যাবর্তের ৯০ হাজার পাঞ্জাবি-পাঠান-বালুচ সেনা...অথবা গেছে?...নাকি আমি সিটি করপোরেশনের সোডিয়াম লাইটের নিচে ঘুমিয়ে থাকা সেই পাগলিটা, যাকে যখন-তখন তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে পুলিশ, র্যাব কিংবা মাস্তান? সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সবুজ ঘাসের ওপর নিরুপায় শুয়ে আর সারা দেহে পুলিশের তীক্ষ্ন দাঁত-নখ বিঁধতে বিঁধতে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর থেকে ভেসে আসা গান শুনি বুঝি আমি: ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল?’ নাকি এটা বাঁশখালী? হুম্...আমি ঢাকার সুবিধাপ্রাপ্ত হিন্দু নারী। চাইলেই আমাকে ধর্ষণ করা যাবে না। তবে আমি যুদ্ধাপরাধের বিচার চাই...হত্যা ও ধর্ষণের বিচার চাই...অর্ডার-অর্ডার-নোট দ্য পয়েন্ট...একুশ শতকের মানবাধিকার ফাঁসির বিরোধী... আহ্...কী রক্ত! রক্তের ঘ্রাণ চারপাশে! আমার ঘুম ভেঙে গেল...জেগে দেখলাম সালোয়ার মাখামাখি রক্তে। বিছানার চাদরে রক্ত।