somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাফায়েতুল ইসলাম
জ্ঞান হবার পর থেকে নিজের পরিচয় খুঁজে বেড়াচ্ছি । প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রশ্ন করি- আমি কে? আমি কি? আমি কোত্থেকে আসছি ? আমি কিছুই জানি না । মাঝে মাঝে নিজেকে শূন্য মনে হয় । মনের অজান্তেই নিজেকে ভাবায়, এই জগৎ সংসার কেমন করে সব শূন্য থেকে শূন্যে মিলে যায়।

ডারউইনের বিবর্তনবাদ নিয়ে ইসলাম ধর্মের সাংঘর্ষিকতা

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইভল্ব শব্দটি আমার খুব পছন্দের। স্বাভাবিকভাবে কোনকিছু বিকশিত হওয়াকে বুঝায়, অথবা এভলিউশন, যার সহজ বাংলা বিবর্তন। এটি এমন একটি জীব-বৈজ্ঞানিক ধারণা যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে জীবের গাঠনিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ক্রমপরিবর্তনকে বুঝায়। কোনো জীবের বংশধরদের মাঝে যে জিনরাশি ছড়িয়ে পড়ে তারাই বংশ-প্রবাহে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করে। বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যকার দৃশ্যমান অঙ্গসাংস্থানিক ও জিনগত সাদৃশ্যগুলো একটা ধারণা দেয় যে আমাদের পরিচিত সকল প্রজাতির প্রাণীই এক ধারাক্রমিক পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি "সাধারণ পূর্বপুরুষ" থেকে ধীরে ধীরে উৎপত্তি লাভ করেছে।

এতোটুকু পড়ার পর যাদের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে তাদের জন্য আরও ভেঙ্গে গল্পের ছলে বুঝিয়ে বলছি। মহান আল্লাহর সৃষ্ট সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হল মানুষ। তিনি তাঁর এ সৃষ্টিকে আশরাফুল মখলুকাত অর্থাৎ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি বলে উল্লেখ করেছেন। এই ব্যাপারে আমাদের কারো কোন দ্বিমত থাকা উচিৎ না। যাই হোক- ইসলামে হজরত আদম (আ.) ভূমিকা মানবজাতির জনক হিসেবে। যেখানে আদম ও হাওয়া আমাদের আদি পিতা ও মাতা। কুরআনের মতে আদম ও হাওয়া উভয়েই বেহেশতের বাগানের নিষিদ্ধ ফল খেয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে তাঁদেরকে বেহেশত হতে বিতাড়িত করে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে পৃথিবীতে নামানো হয়। প্রত্যেককে আলাদা পর্বতশৃঙ্গে প্রেরণ করা হয়েছিল। ইসলামী সূত্র মতে আদম ৪০ দিন পর্যন্ত কেঁদেছিলেন যতক্ষণ না তিনি ক্ষমা প্রাপ্ত হন, অতঃপর আদম ও হাওয়া মক্কার নিকটে আরাফাতের সমভূমিতে পুনরায় মিলিত হয়েছিলেন। তাঁদের দুটি পুত্র সন্তান জন্মলাভ করে, কাবিল ও হাবিল।


আরও একটি আধ্যাত্মিক আলোচনা উপস্থপন করছি। এই যেমন- জীবিত ও মৃত ব্যক্তির আত্মা যে একত্র হয় এর প্রমাণ হলো, জীবিত ব্যক্তি স্বপ্নে মৃত ব্যক্তিকে দেখে, অতঃপর জেগে সে তা বর্ণনা করেন, মৃত ব্যক্তি জীবিত ব্যক্তিকে এমন সংবাদ দেয়, যা জীবিত ব্যক্তি আগে জানত না। অতঃপর মৃত ব্যক্তির প্রদত্ত সংবাদ অতীতে বা ভবিষ্যতে প্রতিফলিত হয় যেভাবে সে সংবাদ দেয়। এ ধরনের অসংখ্য ঘটনা মুতাওয়াতির সূত্রে বর্ণিত আছে। রুহ, এর বিধান ও এর অবস্থা সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ ব্যক্তি ছাড়া কেউ এ ব্যাপারটি অস্বীকার করে না। আমাদের রুহ সর্বপ্রথমে বেহেশতে ছিলো, পাপের ফলে এই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। ভালো কর্মের ফলে মানুষের জীবন পূর্ণতা পাবে, আর খারাপ কাজের ফলে দোজখে যাবে। মৃত্যুর পরবর্তী অবস্থান জান্নাত-জাহান্নাম। নেক আমল দিয়ে আমরা আবার বেহেশতে যেতে পারবো।

আচ্ছা, এতগুলো ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ শব্দের মধ্যে বিবর্তন খুঁজে পাচ্ছেন না! তাই তো? আমি সজ্ঞানে এই গল্পটি উপস্থাপন করেছি যা আপনরা ইতিমধ্যে জানেন। বিবর্তনের সাথে আমাদের আধ্যাত্মিক চিন্তার যোগসূত্র অনেক গভীর, এই আলোচনাটির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। যদিও বিবর্তন বলতে অধিকাংশ মানুষ যা বুঝে তা হলো বানর থেকে মানুষ হয়ে যাওয়া, আর পিছনের লেজ খুঁজা পর্যন্তই তাদের জ্ঞান সীমাবদ্ধ। বৈজ্ঞানিকভাবে পৃথিবী ঘূর্ণায়মানের সাথে প্রাণিকুলের প্রতিটি বিষয়বস্তু পরিবর্তিত হচ্ছে। প্রতি মুহূর্তে প্রতিটি ক্ষণে আমরা সবাই বদলে যাচ্ছি, চিন্তা ভাবনায়, আমাদের সকল পদক্ষেপে। আমাদের চেহারা, রূপ লাবণ্য, চারপাশের পরিবেশের সমস্তকিছু রীতিমত বদলাচ্ছে।

প্রকৃতির সবকিছুই পরিবর্তনশীল, বিবর্তন এমন নয় যে আপনি আগের জন্মে ছাগল ছিলেন আর কিছুদিন পর ঘুম ভেঙ্গে দেখলেন মানুষের রূপ নিলেন। বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের তত্ত্ব এমন কোনকিছুর ঈঙ্গিত করে না। তার এই তত্ত্বে দেখানো হয়েছে প্রাণীরা সময়ের সাথে সাথে প্রাকৃতিক নিয়মে ধীরে ধীরে কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। বিবর্তনবাদের এই তত্ত্বটি আমাদের পৃথিবীর পশুপাখি ও উদ্ভিদ জগৎ সম্পর্কে বুঝতে বড়ো ধরনের ভূমিকা রেখেছে। লক্ষ-কোটি বছরের ক্রমবর্ধমানের ফলে এই আজকের আমরা, পুরো পৃথিবীর প্রতিনিধিত্ব করছি, এতো উন্নত জীবনযাপন করছি। প্রযুক্তি দিয়ে দারুণ আর চমৎকার সবকিছু ঘটিয়ে চলছি।

আদিম যুগের মানুষ গুহায় থাকত। কাঁচা সবজি, ফল, মাংস খেত। জানা কথা। দাঁতের অবস্থা কি হতো। মানুষের মরে যাওয়ার আগেই সব দাঁত নষ্ট হয়ে পড়ে যাওয়ার কথা! তা হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কারণ কি? এটি আন্দাজ করার বিষয়, তীব্র অনুভূতিসম্পন্ন মানুষ হলে বুঝতে পারবেন, শরীর আর মন একই সাথে কাজ করে, এই শরীর হলো পাপের বোঝা আর মন হলো রুহ। এই দুটি জিনিস পরিষ্কার রাখতে পারবে খুব দ্রুত বিকশিত হবেন। যারা বিচক্ষণ তাদেরকে দেখলেই বুঝা যায়। জানেন তো? মানুষের চেহারায় নৈমিত্তিক কাজের ছাপ পড়ে, ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে থাকে, পড়তে জানলে অনেককিছু বলে দেওয়া যায়; যেমন তার পেশা কি? সে কীভাবে বেঁচে আছে? তার কর্মের দ্বারা কতোটা বিবর্তিত হলো ইত্যাদি। আমাদের বুঝতে হবে- কঠোর পরিশ্রম আর মানুষের প্রতি ভালোবাসা বিবর্তন ঘটাতে সহজ করে। প্রতিটি সময়ের সৎব্যবহার, বিনম্রতা আর বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তার বিকাশ আমাদের আত্মার মুক্তির জন্য উৎকৃষ্ট পদ্ধতি, যার ফলে আপনি আরও একধাপ এগিয়ে যাবেন। আসুন বিবর্তনের সঠিক ব্যবহার করতে শিখি। নিজেকে ভালবাসি, অন্যদের প্রতি মন থেকে ভালোবাসা প্রদর্শন করি।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:২৩
১৯টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদ্ভুতত্ব.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩

অদ্ভুতত্ব.....

আমরা অনিয়ম করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, অনিয়মকেই নিয়ম আর নিয়মকে অনিয়ম মনে হয়। নিয়মকে কারো কাছে ভালো লাগে না, অনিয়মকেই ভালো লাগে। তাই কেউ নিয়ম মাফিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের কালো রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অধ্যাপক ইউসুফ আলী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৮




অধ্যাপক ইউসুফ আলী মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।

উনি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য হন। ৬৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার দশটা ইচ্ছে

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



প্রত্যেক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয়-
যদি সকালটাকে দেখতে না পাই। কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর জিনিস কি? তাহলে বলব মানুষের বেচে থাকা। মরে গেলেই তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×