মানুষের জানার আগ্রহ নিরন্তর, কৌতূহলী মনের খোরাক মেটাতে তাই মানুষ বার বার ছুটে যেতে চায় তার জ্ঞান মনন এবং বিজ্ঞানের কাছে। বিজ্ঞানের আলোকে যেটা সে সত্য বলে প্রমাণ করতে পারে সেটা সে গ্রহণ করে আর যেটা প্রমানাতীত সেটা সে ছুড়ে ফেলে দিতে চায়। দ্বন্দ্ব এবং সন্দেহের সৃষ্টি হয় প্রমাণ অপ্রমাণের মাপকাঠিতে, বিশ্বাসের সেখানে ফুটো-কড়ির মূল্য নাই। আবার পৃথিবীতে সমস্ত ধর্মবিশ্বাস একমাত্র বিশ্বাসের ভিত্তিতেই প্রতিপালিত হয়ে থাকে, সেখানে প্রমাণ বা অপ্রমাণের প্রশ্ন গৌণ। বিজ্ঞান চায় প্রমাণ, ধর্ম চায় বিশ্বাস কিন্তু প্রমাণ বিহীন বিশ্বাস এবং বিশ্বাসবিহীন প্রমাণ দুটোই পারস্পরিক সাঙ্ঘরশিক । ধর্ম এবং বিজ্ঞানের এই সংঘর্ষ নৈমিত্তিক তবুও মানুষ এই দুটো বিষয়কে আলাদা রেখে বিজ্ঞান এবং ধর্মের চর্চা করে আসছে।
একটু উদাহরণ দিয়ে বলি। বিজ্ঞানের একজন ডাকসাইটে অধ্যাপক তার সন্তানের অজানা অমূলক অমঙ্গলের আশঙ্কায় এখনও সাধুবাবার দ্বারস্থ হন বা কবিরাজ বাড়ী’র পড়া পানি খাওয়ান। আবার একই রকমভাবে কোন একজন ধর্মীয় আলেম দোয়া কালামের তোয়াক্কা না করে ছুটে যান এফ সি পি এস ডাক্তারের কাছে। এখানে কোনটা কাজ করছে, পুরোটাই বিশ্বাস নাকি পুরোটাই প্রমাণ? তাই মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনে একাধারে বিজ্ঞান এবং ধর্মের চর্চা করে আসছে কোন বাধাবিঘ্ন ছাড়াই। বর্তমানে এই পাশাপাশি চলার পথে বিশ্বাস এবং যুক্তির পরোয়া না করে কাঁটা হয়ে বিঁধেছে উগ্র ধর্মান্ধতা এবং কট্টর ধর্মীয়বিদ্বেষ। নাস্তিকতা তার চরিত্র হারিয়ে পা বাড়িয়েছে কট্টর ধর্মবিদ্বেশের পথে আর পথ বেকে ধার্মিকতা গিয়ে শেষ হয়েছে উগ্র ধর্মান্ধতার ঠিকানায়।
**বিজ্ঞানের ভুলকে মেনে যেমন আমরা বিজ্ঞানের চর্চা করি, সেরকম ভাবে ধর্মের ব্যাখ্যাতীত বিষয় মেনে নিয়ে কি ধর্ম চর্চা চলতে পারে ?