মিথিলা,
কষ্টকে ছুঁয়ে দেখেছো কখনো?
দেখেছ কি কভু, উপরে সতেজ
ভেতরে রক্তাক্ত ক্ষত-বিক্ষত কোন পরাজিত সৈনিক?
নিজেকে আজকাল বড় বেশী কষ্ট দিতে ইচ্ছে করে কেন?
ভাল আছি, অথচ মিথিলা ঝড়ে
ভেতরের যত সব বড় বড় সুপ্ত অগ্নিগিরি
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিচ্ছে
তোমারই হাতে গড়া, তোমার অনন্তকে।
মিথিলা, আমি জানি তুমি বিরক্ত হচ্ছোনা।
বিরক্ত হবার মত অতটা সময় কোথায় তোমার!
ভালবাসা যে মানুষকে কতটা কষ্ট দিতে পারে
সে তুমি চলে না গেলে, হয়তো কোনদিনই বুঝতাম না।
যে অনন্ত সুখী হবে ভেবে
স্বপ্ন সুখের স্বর্গ রচনা করেছিল, জীর্ণ ভেলা ভাসিয়েছিল
তোমার আশ্বাস, তোমার ভালবাসার উত্তাল সাগরে,
সে অনন্ত কেন আজ ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে
কেউ জানে না, তুমিও না।
যেখানে তুমিহীন, একা একা, ভালো থাকা, বেঁচে থাকা,
এভাবে আর কতদিন বেঁচে থাকা যায় বলো?
আমার চারপাশের দেয়ালে থই থই করছে
তোমারই ভালোবাসায় উষ্ণ ছোঁয়া
আমি হাত বাড়িয়ে ছুঁতে যাই তাকে,
পাথুরে স্পর্শ আমাকে অসহায় করে তোলে;
বিশ্বাস করো, নিজেকে আর স্থির রাখতে পারিনা।
নিমিষেই হাত চলে যায় পেগের গ্লাসে
গলায় ঢেলে ঢক ঢক করে চালান করে দেই পেটের ভেতর।
এক পেগ... দুই পেগ... তিন পেগ....
ধীরে ধীরে আমাকে জড়িয়ে ধরে কোন এক অমোঘ ছায়া
আমি ধরতেও পারি না, ছাড়তেও পারি না।
এক সময় নিস্তেজ দেহটা পড়ে থাকে মেঝেতে
আমার প্রানপাখি তখন খেলা করে
মিথিলার সাথে, তারই সাজানো ভালোবাসার বাগানে।
মিথিলা, তুমি জানোনা
কতটা কষ্ট বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াই এখনও?
কোন অভিমানে ক্ষনে ক্ষনে গর্জে উঠে অগ্নিগিরি
কেউ জানে না, তুমিও না!
কেন তোমার অভিলাষী মন আমাকে বাঁধতে পারেনি
দু'চোখ ভরে নুনের জ্বালা, কেন জ্বালায় এখনো?
আমার একরোখা জিদ, তুমিহীন ভালো থাকার অলীক স্বপ্ন
উল্টে পড়া নেশার পেয়ালা,
গভীর রাতে একলা ঘরে এই অনন্ত
একা এক শুয়ে থাকা, কেউ জানে না, তুমিও না।
কোন চিতার অনলে পুড়ে কেন আমি নষ্ট হলাম
কার বিহনে, চুপি চুপি, ধীরে ধীরে
কেউ জানে না, শুধু আমিই জানি।
মিথিলা, তোমাকে ডাকার মতো কোন শক্তিই আজ আমার অবশিষ্ট নেই।
তবু... তবুও তুমিই একদিন বলেছিলে,
"যদি কখনো আমাকে ফিরে যেতে হয়, তুমি যদি পিছন থেকে ডাকো
ঝাঁপিয়ে পড়বো তোমার বুকে, শুষে নেব সবটুকু ভালোবাসা
এঁকে দেব বেঁচে থাকার নতুন ছবি।"
নাড়ির টানে ফিরে গেছ তুমি, আমার শত জীর্ণ সুতোর টান,
কতটুকু তোমায় বেঁধে রাখতে পারে বলো?
উড়ে যেতে চাইলে সুদুর আকাশে-
যে আকাশে হাজারো নক্ষত্রের উজ্জ্বল্য, জোৎস্না বিধূর ভালোবাসা
তোমার অমন অবাধ বিচরনে আমি বাধা দেবার কে?
কোন মায়ায় তোমাকে বাঁধবো বলো?
যদি সুতোর টানে ফিরে আসো কখনও, দেখবে-
একলা ঘরে সেভাবেই পড়ে আছে অনন্ত
ঠিক যেভাবে রেখে গেছ তুমি,
উপরে বদলায়নি এতটুকু
শুধু ভেতরে বদলে গেছে হৃৎপিন্ডের লাল রং!
ভালো থেকো, অনেক বেশী ভালো থেকো।
ইতি, তোমারই চেনা
অনন্ত
(এই কবিতাটির থিম এবং কিছু শব্দচয়ন মিথিলা'র মুল কবিতা থেকে নেয়া হয়েছে)