পূর্ব পুরুষের সাথে উত্তরপুরুষের চিন্তার সংঘর্ষ চিরকালের । আর এই সংঘর্ষ থেকেই উঠে আসে নতুন চেতনা, আবেগ, মূল্যবোধ এসবের মাধ্যমে আমরা শিখেছি শিখছি শিখব ।
উদাহরণ স্বরূপ, আগে ছিল সতীদাহ প্রথা । একটা মেয়েকে চিতায় তুলে দিচ্ছে , বেশিরভাগ লোকই ওখানে জড়ো হতো পুন্য লাভের লোভে। সেই সময়ের সমাজে ওই বিষয়টা স্বাভাবিক ছিল । এখন ভাবি ইসস কি নিষ্ঠুর লোক গুলো কেউ প্রতিবাদ করতোনা ! আমরা এখন উপলব্ধি করি ওই প্রথা ভুল ছিল।
মা সন্তানের আদরের সম্পর্ক এখনো পর্যন্ত আমরা মানি এটা চিরকালীন । আমরা মাকে কত ভালবাসি. মাকে নিয়ে কত আবেগ অসংখ্য গান, কবিতা অনেক আত্মত্যাগ। কারণ আমরা মায়ের গর্ভে জন্মেছি। এখন থেকে পাঁচশো বছর পর যখন আর মানুষ গর্ভে সন্তান নেবেনা । মা কে এখন যেভাবে কাছে পাই বাচ্চারা সেভাবে পাবেন। তখন তারা কি করে বুঝবে মা কি বস্তু। তখন অকেজো মনে হবে মা কে নিয়ে তৈরি হওয়া এই আবেগ , গান, কবিতা, আত্মত্যাগ।তারাও হয়তো আমাদের কথা ভেবে বলবে । আগে কার লোক কত বোকা ছিল!
আমরা যে যেই আদর্শে বিশ্বাস করি সে চায় সেই আদর্শে বাকিরা ও চলুক। আদর্শ উগ্রতা দিয়ে নয় ধীরে ধীরে লোক কে বোঝাতে হয়। আর তার জন্য সময় লাগে , হয়তো কয়েক প্রজন্ম লেগে যাবে। যদি সেই আদর্শে জোর থাকে। হাজার মেরে কোনো আদর্শ একটা সময় পর্যন্ত টিকে যাবে, তবে সে আদর্শে তেমনি হাজার হাজার ত্রুটি বিচ্যুতি থাকবে। আর যারা কম সময়ে এসব করতে চায় তারা সমাজের বিরোধী অংশ কে বোঝাতে না পেরে অনেক সময়ই উগ্র হয়ে উঠে। পূর্বপুরুষের জ্ঞান কে আঁকড়ে ধরে যারা নিজেদের জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে মানসিক উন্নতি করবে না, অন্যদের ও নিজের পথে জোর করে চালাতে চাইবে তারাই জন্ম দেবে উগ্রপন্থার। কারণ এক সময়ের ন্যায়, নীতি, ধর্ম, আবেগ, উপলব্ধি, চিন্তা, চেতনা, মূল্যবোধ অন্য সময়ের খাপে খাপ নাও হতে পারে।
***যে সময়ের সাথে বদলাবে না সময় তাকে বদলে দেবে আর সেটা হবে বিপজ্জনক***
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:২০