somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইফতারের দোয়া ও তাৎপর্য

২০ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসসালামু আলাইকুম,

রোজাদারের জন্য ইফতার এক অন্যরকম আনন্দের মুহূর্ত। সারাদিনের অনাহারি আর কর্মব্যস্ত শরীর এ সময় ফুরফুরে হয়ে ওঠে। প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে দেহ-মন। সামনে নানা রকম খাবারের আইটেম। মুড়ি, বুট, পেঁয়াজু, বেগুনি আর নানা স্বাদের ফলের শরবত যেন বেহেশতি আবহ তৈরি করে। গৃহিণীরা বাসায় তৈরি করে ইফতারের হরেকরকম পদ। গৃহকর্তা বাইরে থেকে আসার সময় এটা-সেটা আনতেও ভুল করেন না। সবকিছু সামনে নিয়ে চলতে থাকে মুয়াজ্জিনের আজানের প্রতীক্ষা। কখন মিনারে ধ্বনিত হবে আল্লাহু আকবর। ফাঁকে ফাঁকে ঘড়ি দেখা আর মুখে মুখে দোয়া-দুরুদ পড়া।

হাদিসে পাকে ইফতারের এই আনন্দ আর প্রতীক্ষার কথাই গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে। নবীজী (সা.) বলেছেন, ‘ইফতারের সময় কোনো দোয়া বাতিল করা হয় না। ইফতারের সময় দোয়া খুব তাড়াতাড়ি কবুল হয়।’ -বায়হাকি

এ হাদিসটি এ কথাই প্রমাণ করে, ইফতারের সময় বাজে কাজকর্মে লিপ্ত না হয়ে ইফতার সাজিয়ে বসে থাকা এবং দোয়া-দুরুদ পড়তে থাকা রোজাদারের জন্য অবশ্য কর্তব্য। তিরমিজি শরিফের একটি হাদিসে বলা হয়েছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের প্রত্যেক রাতে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বহু জাহান্নামিকে মুক্তি দেন।’

অন্যকে ইফতার করানো ব্যাপারেও হাদিসে পাকে এসেছে সওয়াবের কথা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে কেউ কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে সে তার পূর্ণ সওয়াব পাবে। যদিও ইফতারটি হয় একটি খেজুর কিংবা একগ্লাস পানির দ্বারা।’

হাদিসের এই বাণী সব মুসলমানের কাছেই অত্যধিক গুরুত্ববহ। তাই সবাই চেষ্টা করে সাধ্যমত অন্যকে ইফতার করানোর। আত্মীয়কে দাওয়াত করে ‘একবার হলেও যেন আমার বাসায় ইফতার করা হয়।’ এছাড়াও কাজের খাতিরে কর্মজীবীকে অনেক সময় বাইরে ইফতার করতে হয়। এ সময় রাস্তা কিংবা দোকানের আশপাশে প্রতিটি ইফতার আসনেই দেখা যায় ভ্রাতৃত্বের এক বিশাল বন্ধন। কেউ দৌড়ে এসে খালি হাতেই শরিক হচ্ছেন এসবে। কেউবা সামান্য মুড়ি বা পেঁয়াজু নিয়ে। আশ্চর্য হলেও সত্য! এসময় কেউ কাউকে নিজের সঙ্গে বসতে নিষেধ করেন না। সাদরে টেনে নেন কাছে। বসিয়ে দেন ভালো আসনে।
ইফতারের দোয়া
হাদিসে ইফতারের সময় পাঠ করার বেশ কয়েকটি দোয়া বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দোয়া হলো-

ক. হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন-

اللَّهُمَّ لَكَ صُمْنَا وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْنَا فَتَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা সুমনা ওয়া আলা রিজকিকা আফতারনা। ফাতাকাব্বাল মিন্না। ইন্নাকা আনতাস্ সামিউল আলিম। -দারা কুতনি : ২৩০৩

অর্থ : হে আল্লাহ! তোমাকে সন্তুষ্ট করার জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমার দেয়া রিজিক দিয়ে ইফতার করেছি। অতএব, এ রোজা ও ইফতার তুমি কবুল করো। নিশ্চয়ই তুমি সব কিছু শোন ও জান।

খ. ইবনে উমর (রা.) বলেন, নবী (সা.) যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন-

ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ وَثَبَتَ الأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ

উচ্চারণ : যাহাবায যমা-উ ওয়াবতাল্লাতিল উরূকু ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশাআল্লাহ। -আবু দাউদ : ২৩৫৯

অর্থ : পিপাসা মিটেছে, শিরাগুলো সতেজ হয়েছে। আল্লাহ চাহে তো সওয়াবও লেখা হয়েছে।

ইফতারের সবচেয়ে বেশি প্রচলিত দোয়া হলো-

اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلى رِزْقِكَ أفْطَرْتُ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু।

অর্থ : হে আল্লাহ! একমাত্র তোমার জন্যই রোজা রেখেছে এবং তোমার দেওয়া রিজিক দিয়েই ইফতার করছি।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ২:১৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×