বিভিন্ন দেশের সমরশক্তি নিয়ে আমার পুরনো লেখা পবেন নিচের লিঙ্কগুলেতে
View this link View this link Click This Link Click This Link
ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান, হাইতিসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মার্কিন সরকার পরিচালিত ও প্রযোজিত একটি নাটক প্রচারিত হচ্ছে যার নাম ‘গণতন্ত্র’। শুধু একেক দেশে পাত্রপাত্রীর পোশাক ও মঞ্চ সজ্জার স্বাতন্ত্র্যে নাটকের পুনরাবৃত্তি সহজে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু চিত্রনাট্যটি খেয়াল করলে একটি সহজ-সরল সমীকরণ পাওয়া যাবে। প্রথমে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক তথাকথিত জনদরদী সংস্থাগুলো একটি দেশকে জানাবে যে উন্নয়ন দর্শনে তার দেশ চলছে সেটি তার জন্য অনুকূল নয়। সুতরাং তার কাছে যে স্বপ্নে পাওয়া অব্যর্থ ওষুধ আছে সেটি প্রয়োগের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। ওষুধটি কেনাও খুব সহজ। ডাক্তারের কাছ থেকে আপাতত টাকা ধার নিয়ে সুস্থ হয়ে খেটে খুটে টাকাটা শোধ করে দিলেই হয়। তবে শর্ত শুধু একটি- পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য ডাক্তার দায়ী নয় এবং সুস্থ হতে চাইলে আরো ডোজ চালিয়ে যেতে হবে। অন্যথায় প্রতিবাদকারীর কপালে একটি পদবি জুটবে। যেমন ধরা যাক- স্বৈরশাসক, মৌলবাদী কিংবা দানব। কোনোভাবেই যদি তাকে এসব খেতাব না দেয়া যায়, তখন তার দেশে তার প্রশ্রয়ে কিংবা অমনোযোগে বিশ্বধ্বংসী তৎপরতা চলবে। এ সময় ডাক্তারের সমর্থনে সেদেশের ভেতর থেকেই এগিয়ে আসবে ‘সুশীল সমাজ’ বা ‘বুদ্ধিজীবী’ নামের মোড়কে কিছু চরিত্র। তাদের সঙ্গে থাকবে সরকারবিরোধী কিছু দল। শেষে সবাই মিলেমিশে দানবের ঘাড় মটকে তাকে হত্যা করার মাধ্যমে নাটকের যবনিকাপাত টানবে। হাইতিতে এই নাটকের পুনঃপ্রচার বলতে গেলে চলছে ঊনবিংশ শতক ধরে।
মার্কিন সরকার কখনোই চায়নি হাইতি স্বাধীন হোক
মার্কিন সরকার ফরাসি উপনিবেশের পতনের পর ১৮০৪ সাল থেকে কখনোই চায়নি হাইতি স্বাধীন হোক। গত শতক জুড়ে হাইতিকে সে অবমাননাকর মর্যাদা দিয়ে চলেছে। ১৯১৫ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত মার্কিন বাহিনী সরাসরি হাইতি দখল করে রাখে। এর মধ্য দিয়ে চার্লসেনের কাকোশ বিদ্রোহ (১৯১৯) দমন করে। ১৯৫৭ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সেবাদাস একনায়ক দুভালিয়ারকে শর্তহীন সমর্থন যুগিয়ে যায়। এই সময়ে হাইতি তার রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্বকীয়তা হারিয়ে দারিদ্যপীড়িত ও দুর্দশাগ্রস্ত দেশে পরিণত হয়।
হাইতি একসময়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল। ছিল বিপুল বনজ সম্পদ। দুভালিয়ারের ৩০ বছরের শাসনামলে হাইতির কৃষিখাত ধ্বংস করা হয়। এ সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে খাদ্যসশ্য আমদানি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। বিলুপ্ত হয় হাইতির কৃষক ও ব্যবসায়ীদের স্বাধীন সত্তা। ভূমিহীন ও পেশাচ্যুত হয়ে তারা পাড়ি জমায় শহরে। ঘনবসতিপূর্ণ বস্তিতে উদ্বাস্তু ও বেকার জীবন বেছে নিতে হয়। রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের লোকসংখ্যা হয় দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। দুর্বল ভিত ও কাঠামোর ওপর নির্মিত বাসগৃহে বসবাসকারী এসব দরিদ্রই গত ১২ জানুয়ারির ভূমিকম্পের শিকার হয়েছে বেশি।
পাহাড় কেটে পুরো হাইতির ভূ-পরিবেশের পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে
হাইতির ২৩৯ বছরের ইতিহাসে ভূমিকম্পের কোনো ঘটনা নেই। তারা জানে না ভূমিকম্প হলে কীভাবে ঘরের বাইরে আশ্রয় নিতে হয়। এ জন্যেই ভূমিকম্পের সময় দৌঁড়ে ঘরের ভেতরে আশ্রয় নিতে গিয়ে মারা পড়েছে বেশির ভাগ মানুষ। একদিকে বন কেটে পাহাড় ন্যাড়া করা এবং অন্যদিকে খনিজ সম্পদ আহরণে পাহাড় কেটে পুরো হাইতির ভূ-পরিবেশেরই পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে। কৃষি ভূমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া শহরের বস্তিবাসী পেশাচ্যুত কৃষকদের নিয়ে ধর্মযাজক এরিস্টিড ‘লাভালাস’ আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন এসব বস্তি থেকেই। লাভালাস আসলে অনেকটা নয়া কৃষি আন্দোলনের মতোই। উদ্দেশ্য ছিল কৃষকদের মুক্ত স্বাধীন করে হাইতিকে পুনর্বার সবুজ করা। এরিস্টিড এই আন্দোলনের ফসল হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং এরই কাফফারা হিসেবে দু’বার মতাচ্যুত হন মার্কিন মদদে। একবার তিনি মতাচ্যুত হন ১৯৯১ সালে এবং দ্বিতীয়বার ২০০৪ সালে। প্রথমবার সিনিয়র বুশ এবং দ্বিতীয়বার জুনিয়র বুশের আমলে। ১৯৯৪ সালে এরিস্টিডকে পুনরায় মতায় বসাতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বিল কিনটন। বাধ্য হয়েছিলেন কংগ্রেসের অশ্বেতাঙ্গ ককাসের চাপে। তবে সঙ্গে দিয়েছিলেন মার্কিন সেনাবাহিনী। সেই সঙ্গে এরিস্টিকে তার প্রিয় লাভালাস আন্দোলন বাদ দিয়ে নয়া উদারবাদ এজেন্ডা চালুর শর্ত দিতে হয়। হাইতিবাসী এর নাম দেন ‘মৃত্যুর পরিকল্পনা’। কিন্তু তারপরও জুনিয়র বুশের আমলে ‘রেজিম চেঞ্জের’ তত্ত্বে তারাই তাকে মতাচ্যুত ও অপহরণ করে। এরিস্টিড এখন দণি আফ্রিকায় ফেরারি জীবনযাপন করছেন।
হাইতির ভূ-কৌশলগত অবস্থান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ
কৃষি ছাড়াও হাইতি খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এক দেশ। এর রয়েছে তেল, গ্যাস, সোনা, ইরিডিয়াম, ইউরেনিয়াম, তামা, লোহার বিশাল মজুদ। এর বা
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ১১:৫০