ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে ‘একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম তাৎর্যপূর্ণ সম্পর্ক’ বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নানা কারণে আলোচিত। বিশেষ করে দু’টি দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে খোদ ভারতেই যথেষ্ট বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। এমনকি এই চুক্তির বিরোধিতা করে বামরা কংগ্রেসের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। সে ইতিহাস কিছুটা পুরনো। তার পর ভারতে লোকসভা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে এবং কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছে। হোয়াইট হাউজ প্রশাসন যে ভারতকে কত বেশি গুরুত্ব দেয়, তার বড় প্রমাণ ওবামার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম যে রাষ্ট্রীয় ভোজসভার আয়োজন করা হলো তা মনমোহন সিংয়ের সম্মানেই করা হলো। এবারের আলোচ্য বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দেশ ভারতের সমরশক্তি নিয়ে। প্রবন্ধে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন স্বার্থ নিয়েও কিছুটা আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনায় স্থান পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ইসরাইলের বিনিয়োগ, ভারত-মার্কিন সামরিক সম্পর্ক এবং আরো অনেক কিছু। প্রবন্ধের তথ্যগুলো বিভিন্ন পত্রিকা এবং ইন্টারনেট থেকে নেয়া হয়েছে।
পরাশক্তি হতে চাইছে প্রতিবেশী ভারত ও চীন উভয়ই
পরাশক্তির আকাঙ্ক্ষা রয়েছে প্রতিবেশী চীন ও ভারত উভয় দেশের। কমিউনিস্ট শাসনের ৬০ বছর পূর্তিতে জাঁকজমকপূর্ণ সামরিক কুচকাওয়াজের মাধ্যমে চীন প্রথমবারের মতো তার সামরিক শক্তিতে যুক্ত হওয়া সর্বশেষ অস্ত্র, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, জঙ্গি বিমানসহ সব ধরনের অস্ত্র ও যুদ্ধযানের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। পাশাপাশি নিজেকে অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার চেষ্টা করেছে। এ দিকে ভারত অত্যন্ত উৎসুক দৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ করেছে ওই কুচকাওয়াজ। আর নিজেদের সাথে চীনের শক্তির তুলনাও করেছে। চীনের সাথে ভারতের সামরিক বাহিনী ও সমরাস্ত্রের তুলনা করলে দেখা যাবে, সেনা, বিমান ও নৌবাহিনী প্রতিটির ক্ষেত্রেই চীন ভারতের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। চীনের সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা ২০ লাখেরও বেশি, যা ভারতের দ্বিগুণ। চীনের বিমান বহরে রয়েছে নয় হাজার এয়ারক্রাফট। যার মধ্যে জঙ্গি বিমানের সংখ্যা দুই হাজার। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক সুখোই-৩০ এমকেকে ও নিজস্ব প্রযুক্তির জে-১০ ফাইটার। অন্য দিকে ভারতের বিমান বহরে রয়েছে ৭৯০টি জঙ্গি বিমানসহ তিন হাজার এয়ারক্রাফট। এর মধ্যে আছে ফ্রান্সের তৈরি দাসোঁ-মিরাজ-২০০০ ও রাশিয়ার সুখোই-৩০ এমকেআই জঙ্গি বিমান। ভারতের নৌবাহিনী বিশ্বের অষ্টম বৃহৎ শক্তিতে পরিুণত হয়েছে। নৌবহরে রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রবাহী যুদ্ধজাহাজসহ ছোট-বড় ১৪৫টি রণতরী। এ ছাড়া রয়েছে কয়েকটি অত্যাধুনিক সাবমেরিন ও একটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার। অন্য দিকে চীনের নৌবহরে যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা বেশি (২৮৪টি) হলেও কোনো এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার নেই। যদিও দেশটি ২০১০ সালের মধ্যে একটি এয়ারক্রাফট তৈরির ঘোষণা দিয়েছে।
ভারতে সামরিক নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতে চায় ইসরাইল
ভারতে সামরিক নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতে চায় ইসরাইল। এ জন্য ইসরাইল কংগ্রেস ও বিজেপিসহ ভারতের প্রায় সব ক’টি রাজনৈতিক দলের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে। ব্যতিক্রম ছিল সিপিএম এবং অন্য বামপন্থী দলগুলো। সিপিএম মনে করে, ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করে তাদের ভূমির ওপর সাম্রাজ্যবাদী পশ্চিমা দেশগুলো ইসরাইলের প্রতিষ্ঠা করে অন্যায় করেছিল। ইসরাইল এখন এশিয়ায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ‘লেজুড়’ হিসেবে কাজ করছে। অন্য দিকে ইসরাইলি ধনকুবেররা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি, অর্থনীতি এবং মিডিয়ার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করছে। আস্থা ভোটের আগেও দেখা গেছে, সিপিএম এবং অন্য বাম দলগুলো ইসরাইলের সাথে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ভারত যাতে ইসরাইলের কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনা ব করে, ইসরাইলি গোয়েন্দা স্যাটেলাইটগুলো ভারত যাতে উৎক্ষেপণ না করে এবং ইসরাইলের সাথে ভারত যাতে প্রতিরক্ষা সম্পর্কের জালে আবদ্ধ না হয় তার জন্য বামপন্থীরা পার্লামেন্টে ও পার্লামেন্টের বাইরে সরব হয়েছে।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে ভারতে ইসরাইল, বিশেষ করে নয়াদিল্লির ইসরাইল দূতাবাসের সাথে যুক্ত লবি বামপন্থীদের নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আসার জন্য প্রবলভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। এই লক্ষ্যে তারা বেশ সফলও হয়েছে।
ইসরাইল পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মিজোরামে তাদের প্রভাব সম্প্রসারিত করছে
এ কথা এখন স্পষ্ট যে মুম্বাই, দিল্লি ও উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন স্থানে ইসরাইল তাদের তৎপরতা তুঙ্গে তোলার পর এখন পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মিজোরাম প্রভৃতি রাজ্যে তাদের প্রভাব সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে জোর চেষ্টা শুরু করেছে। ২০০৮ সালের জুলাই মাসের প্রথম দিকে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত মার্ক সোফার কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সাথে এক বৈঠক করেন। বৈঠকটির কথা নয়াদিল্লির ইসরাইল দূতাবাসই ফাঁস করে দিয়েছিল। তখন তারা বলেছিলেন, পশ্চিমবাংলায় ইসরাইলের বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করতে এবং ইসরাইল ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠক সম্পর্কে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত মার্ক সোফার বলেছেন, ‘ইসরাইলের সাথে পশ্চিমবাংলার সহযোগিতার ক্ষেত্রে আরো যুক্ত হবে কৃষি, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নত সেচের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা’। ইসরাইল যে ভারতের পূর্বাঞ্চলের দিকে বিশেষভাবে নজর দিয়েছে তার আরেকটি প্রমাণ হলো, তারা দিল্লি দূতাবাস থেকে সম্প্রতি হিন্দিতে একটি ওয়েবসাইট খুলেছে। শিগগিরই বাংলাতেও ওয়েবসাইট খোলা হবে বলে জানা গেছে। ইসরাইল থেকে বাংলায় রেডিও সম্প্রচারের কথাও বিবেচনায় রয়েছে। অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে বিনিয়োগের আড়ালে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ তার নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করলে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কের ওপরও তার প্রভাব পড়তে পারে। কারণ ইসরাইল বিশ্বজুড়ে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে স্থানীয় মিডিয়া, বুদ্ধিজীবী ও প্রশাসনকে ব্যবহার করতে সবসময়ই তৎপর।
ইসরাইলের সাথে ভারতের ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক রয়েছে
ইসরাইলের সাথে ভারতের কূটনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। দুই দেশের সাথে এই সম্পর্ক বেশি ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে ২০০০ সাল থেকে। বিজেপি’র যশোবন্ত সিং প্রথম ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী হিসেবে ইসরাইল যান। এই সময়ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও ভারতের সামরিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হয়। এক দিকে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ অন্য দিকে বিজেপি’র আগ্রহ ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে সহায়তা করে। ২০০৩ সালে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল শ্যারন ভারতে আসেন এবং ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে আরব দুনিয়ার বিরুদ্ধে যথেচ্ছ বিষোদগার করে যান। শ্যারনের ভারত সফরের বিরুদ্ধে দেশটির বামপন্থীসহ কিছু রাজনৈতিক দল সেদিন বিক্ষোভ করেছিল। শ্যারন সে সময় বলেছিলেন, ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যে ‘কার্যকরভাবে সন্ত্রাস রুখেছে’। তাই তাদের কাছ থেকে ভারতের শেখার আছে। ইউপিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অভিমুখ পরিবর্তনের বদলে আরো নিবিড়ভাবে ইসরাইল জড়িয়ে ধরছে ভারতকে। দু’দেশের সামরিক সম্পর্ক গভীর হয়েছে। ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর প্রধান আভি মিরজাহি ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাশিবিরে প্রশিক্ষণও দিয়ে গেছেন। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার ব্যাপারে অভিযোগ উঠছে যে, বিমান ও নৌবাহিনীর মধ্যেও ইসরাইলের হয়ে কাজ করছেন একাংশের কর্মকর্তা।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর পিএসএলভি রকেটের মাধ্যমে ২০০৮ সালের ৪ জানুয়ারি ইসরাইলের ‘নজরদারি উপগ্রহ’ টেকসার উৎক্ষেপণ হয়েছে ক্রিহরিকোটা থেকে। ওই উপগ্রহের মূল কাজ ইরান ও অন্য আরব দেশগুলোর ওপর মহাকাশ থেকে নজরদারি চালানো। ইসরাইলের উপগ্রহ যাতে ৪৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় উঠতে পারে, আরব দুনিয়ার ভেতরের ছবি আরো ভালোভাবে পেতে পারে, আরো নিখুঁত নিশানায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে তার জন্যই ভারতীয় রকেটে, ভারতের মাটি থেকে তা উৎক্ষেপণ করা হয়। ২০ এপ্রিল ভারতও তার প্রথম নজরদারি উপগ্রহ রিস্যাট-২ মহাকাশে পাঠিয়েছে। অস্বাভাবিক দ্রুততায় এই উপগ্রহ কেনা হয়েছে ইসরাইল এয়ারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের কাছ থেকে। বিজেপি’র মতো কংগ্রেসের সরকার এখন ইসরাইলের দারুণ প্রভাবে। কংগ্রেস সরকারও যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল-ভারত অক্ষ গড়ে তুলতে উৎসাহী। সন্ত্রাসবাদকে অজুহাত করে এ কাজে এগোনো হচ্ছে।
ভারত-মার্কিন সামরিক সহযোগিতা জোরদার
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন প্রতিরক্ষা, বিচার বিভাগ ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতের সাথে তিনটি সমঝোতা-স্মারকে স্বাক্ষর করেছেন। ভারতের পক্ষে এসব সমঝোতা-স্মারকে স্বাক্ষর করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ। এসব সমঝোতা অনুযায়ী, প্রথমত, ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেসব উন্নত সামরিক প্রযুক্তি লাভ করবে সেগুলো অন্য কোনো দেশের কাছে হস্তান্তর করবে না। দ্বিতীয়ত, ভারত বেসামরিক ও অবাণিজ্যিক উপগ্রহ উৎক্ষেপণসহ তার মহাশূন্য কর্মসূচি এবং বিজ্ঞান-গবেষণা ক্ষেত্রেও মার্কিন সহযোগিতা পাবে। তৃতীয়ত, উভয় দেশ এসব ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য একটি যৌথ তহবিল গঠন করবে।
বৈজ্ঞানিকদের উৎকর্ষতায় গড়ে ওঠা প্রযুক্তি স্বাধীনভাবে ব্যবহারের ক্ষমতা দ্রুত হারাচ্ছে ভারত
বুশের শাসনামলে ইরানের ওপর নজরদারির উদ্দেশ্যে ইসরাইলের উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছিল ভারত। দেশটির বামপন্থীরা সে সময় বলেছিলেন, ভারত-মার্কিন পরমাণু সমঝোতার মাশুল দিতে হচ্ছে ভারতকে। ব্যবসায়িকভাবে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের উপগ্রহ উৎক্ষেপণের নীতি নিয়েছে ভারত। কিন্তু মার্কিন চুক্তির পর এটা স্পষ্ট যে, দেশের বৈজ্ঞানিকদের উৎকর্ষতায় গড়ে ওঠা প্রযুক্তি স্বাধীনভাবে ব্যবহারের ক্ষমতা দ্রুত হারাচ্ছে ভারত। কোন দেশের কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা যাবে, ভারতকে তাও নির্দিষ্ট করে দেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভারতের ওপর এমনই শর্ত চাপিয়ে গেছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সম্প্রতি ভারত-মার্কিন একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ভারত আমেরিকার কাছ থেকে যে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনবে তা কিভাবে, কোথায় ব্যবহার হচ্ছে মার্কিনিরা তার ওপরও নজরদারি করবে। যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তি হলো ভারতকে দেয়া ‘স্পর্শকাতর’ উপাদান যেন অন্য কোথাও না যায়, তার জন্যই এই চুক্তি দরকার ছিল। এখন যুদ্ধবিমান থেকে সাবমেরিন যেখানেই মার্কিনি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা হবে সেখানেই হাজির হয়ে নজরদারি করতে পারবে মার্কিন বাহিনী। সার্বিক ও কোনো ক্ষেত্রের জন্য পৃথকভাবে চিহ্নিত না থাকায় যেকোনো সময় ভারতে সরবরাহ ব করা বা সরবরাহ করা সরঞ্জাম ব্যবহারে বাধা দেয়ার অধিকারও পেয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই চুক্তির পর ভারতে বোয়িং যুদ্ধবিমান বিক্রির রাস্তাও খোলা হয়ে গেছে।
বিরোধিতা ছিল, তার পরও ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি হয়েছে ৪০ বছরের
ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে বেশ একটা ঝড় বয়ে গিয়েছিল ২০০৮ সালে চুক্তি সম্পাদনের আগে। সে সময় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের শরিক ও বিরোধী শক্তিগুলোর অনাস্থার মুখে সরকার-পতন ঘটে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। অনাস্থা ভোট নিয়ে এমনকি ঘুষ লেনদেন, এমপি কেনাবেচা ও দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সরকারকে সমর্থন করার মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে পত্রিকায় খবর বেবিয়েছিল। বিজেপিসহ তাদের সহযোগী শক্তিগুলোর প্রতিবাদের মূল কথা ছিল, এ চুক্তি ভারতের জাতীয় স্বার্থবিরোধী। তাদের মতে, পরমাণু বাণিজ্যে লাভবান হবে মার্কিনিরা। ভারতের পরমাণু গবেষণা মার্কিন নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। এর ফলে ভারতের স্বাধীনতা-সর্বভৌমত্ব খর্ব হবে, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন হস্তক্ষেপ বাড়বে। অন্য দিকে বাম গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মতে, এই চুক্তির ফলে ভারতের সাধারণ জনগণের কণামাত্র লাভ হবে না, লাভ হবে বড় পুঁজিপতি গোষ্ঠীর। সাথে সাথে তারা আরো একটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সেটি হলো ভারত রাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা, যা ক্রমাগত বাড়ছে এবং এ চুক্তির মধ্য দিয়ে আরো স্পষ্টভাবে তা ফুটে উঠেছে।
ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তির আগ্রহটা মার্কিন শাসকদেরই বেশি ছিল। জর্জ বুশ এক দফা ভারত ভ্রমণ সেরে গেছেন ২০০৬ সালের মার্চে। আর ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই ওয়াশিংটনে চুক্তির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তির পুরো নাম ‘শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরমাণু শক্তির ব্যবহার সম্পর্কে ভারত ও মার্কিন সরকারের সমঝোতা’। এর মেয়াদকাল ৪০ বছর। এ চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকা ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে’ ভারতকে পরমাণু জ্বালানি সরবরাহ করবে। এ জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে ধরনের পরমাণু চুল্লি দরকার, প্রযুক্তি দরকার মার্কিন শিল্পপতিরা তাও ভারতে রফতানি করার অনুমতি পাবে। এর পর ওই চুক্তি যখন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ও পরমাণু জ্বালানি সরবরাহ করার ক্ষমতাসম্পন্ন ৪৫টি রাষ্ট্রের সংস্থা ‘নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপ’ (এনএসজি)-এর অনুমোদন পেয়ে যাবে তখন কেবল মার্কিন কোম্পানি নয়, জার্মানি, ফ্রান্সের শিল্পপতিরাও ভারতের কাছে পরমাণু চুল্লি বিক্রি করতে পারবে। এমনকি চাইলে পরমাণু জ্বালানিও সরবরাহ করতে পারবে।
এখানে একটু বলে রাখা দরকার যে মার্কিন নেতৃত্বে বিশ্বের পরমাণু শক্তিধর দেশগুলো বিশ্বে ইউরেনিয়াম বা এ জাতীয় পরমাণু জ্বালানি সরবরাহ বা ব্যবসার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। তাদের উদ্যোগেই গঠিত হয়েছে পরমাণু অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তি (নিউক্লিয়ার নন প্রলিফারেশন ট্রিটি বা এনপিটি)। এই চুক্তিতে কোনো রাষ্ট্র ্বাক্ষর করার অর্থ এ কথা ঘোষণা করা যে, সে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরমাণু শক্তি উৎপাদন করবে, যুদ্ধের বা আগ্রাসনের উদ্দেশ্যে নয়। আবার কোনো দেশ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে না অস্ত্র তৈরির উদ্দেশ্যে পরমাণু শক্তি উৎপাদন করছে সেটা নিশ্চিত করার কথা বলে গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা। এসব সংস্থার জোরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফরমান জারি করে যে, পরমাণু শক্তিধর অথচ এনপিটিতে স্বাক্ষর না করা কোনো দেশ অন্য কোনো দেশকে এমনকি অসামরিক উদ্দেশ্যেও পরমাণু জ্বালানি ও প্রযুক্তি সরবরাহ করতে পারবে না।
ভারত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পরমাণুসহ অস্ত্র সামগ্রীর লোভনীয় বাজার
ভারত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পরমাণু সামগ্রীসহ অস্ত্র সামগ্রীর অত্যন্ত লোভনীয় বাজার। এক সময় ভারতের সামরিক সাজ-সরঞ্জামের ৬০ শতাংশই আসত সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ইয়েলৎসিনের শাসনামলে মস্কো পাশ্চাত্যের সাথে সম্পর্ক জোরদারের উদ্যোগ নিলে তাতে ভারতও প্রভাবিত হয়েছিল। কিন্তু ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি সাবেক কৌশলগত মিত্র ভারতের সাথে স্বাক্ষর করেন কৌশলগত চুক্তি। ফলে রুশ-ভারত সম্পর্কে সূচিত হয় নতুন অধ্যায়ের। কিন্তু পরমাণু বিষয়ে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করায় নয়াদিল্লির বুত্বের পাল্লা মস্কোর চেয়ে ওয়াশিংটনের দিকেই বেশি ঝুঁকে পড়ে। আসলে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সামরিক বাজারে মস্কোর একচেটিয়া কতৃêত্ব ভাঙার পাশাপাশি ভারতকে নিজ প্রভাব-বলয়ে এনে দিল্লির সাথে মস্কো ও বেইজিংয়ের কৌশলগত সম্পর্ক বিস্তারকেও বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। চীন ও ভারত শিগগিরই বিশ্বের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ অবস্থায় পরমাণু শক্তিধর ভারত যদি চীন ও রাশিয়ার সাথে কৌশলগত জোট গড়ে তোলে তাহলে এ অঞ্চলে মার্কিন নীতি বিপদাপন্ন হবে বলে ওয়াশিংটনের নীতিনির্ধারকরা উদ্বিগ্ন। তাই ওয়াশিংটন ভারতকে কিছু সামরিক সুবিধা দিয়ে উদীয়মান এই শক্তিকে নিজের প্রভাব-বলয়ে আবদ্ধ রাখতে চাইছে। কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যকামী এই নীতি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য খুবই বিপজ্জনক হয়ে উঠবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তারা বলছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের সামরিক সম্পর্ক জোরদারের বিষয়টি ইসলামবাদ-নয়াদিল্লির সম্পর্কে অশুভ ছায়ার বিস্তার ঘটাবে এবং এর ফলে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা বিপদাপন্ন হবে ও বাড়বে অস্ত্র প্রতিযোগিতা, অবিশ্বাস বা সন্দেহ।
পারমাণবিক পরীক্ষার পর ভারত ও পাকিস্তানের ওপর অবরোধ ছিল লোক দেখানো
সামরিক ক্ষেত্রে মার্কিন-ভারত সম্পর্ক নতুন মোড় নেয় এই ৯০ দশকেই। যা আরো পরিণত রূপ পেয়েছে বর্তমান দশকে বিশেষত ২০০৫ সালে। এ বছর দু’দেশের মধ্যে ‘নিউ ফ্রেমওয়ার্ক ফর দ্য ইউএস-ইন্ডিয়া ডিফেন্স রিলেশনস’ নামে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বলা হয় এই চুক্তি করা হয়েছে ১৯৯৫ সালের বোঝাপড়ার সূত্র ধরে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই চুক্তি অনুযায়ী দু’দেশ সামরিক ক্ষেত্রে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা। বস্তুত সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর থেকেই ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নতুন সম্পর্ক বিকাশে উদ্যোগী হয়। পারমাণবিক শক্তি বিকাশেও পরস্পর যোগাযোগ ছিল। ১৯৯৮ সালে ভারত ও পাকিস্তান দু’দেশই পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর তথাকথিত অবরোধ আরোপ করে। ‘তথাকথিত’ বলছি এ কারণে যে, কোনো অবরোধ যুক্তরাষ্ট্র আসলেই আরোপ করে এবং কোনটি তার লোকদেখানো সেটা বোঝাটাও দরকার। খেয়াল করলে বুঝতে খুব বেশি অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। ভারত ও পাকিস্তানের এই পারমাণবিক প্রস্তুতি যুক্তরাষ্ট্রের অজ্ঞাতে হওয়ার জো ছিল না। বিশেষত এসব দেশের সামরিক খাতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের যে ঘনিষ্ঠ যোগ তা খুব গোপন ব্যাপার নয়। আসল অবরোধ বা বৈরিতা কাকে বলে তা ইরান, ইরাক, উত্তর কোরিয়া, কিউবার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের মার মার কাট কাট ভূমিকা দেখলে বোঝা যায়।
তবে ভারত ও পাকিস্তানের এই পারমাণবিক পরীক্ষাকে যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ব্ল্যাকমেইল করে এই দু’টি দেশের সাথে অধিকতর ধ্বংসাত্মক বন তৈরি করতে ব্যবহার করে। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে পুরোমাত্রায় ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র ও এর বিনিময়ে পাকিস্তানের ওপর থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। আর ভারতের সাথে চলে অধিকতর সামরিক নৈকট্য স্থাপনের কথাবার্তা এবং ‘যৌথ স্বার্থে’ নানা প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য তৎপরতা। এসবেরই ফল ২০০৫ সালের চুক্তি। এই চুক্তির মধ্যে প্রকাশ্যেই যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তার মধ্যে আছেঃ সামরিক ক্ষেত্রে পরস্পর অব্যাহত যোগাযোগ ও উন্নয়নে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান বৃদ্ধি। সমরাস্ত্র বাণিজ্য সম্প্রসারণ। প্রযুক্তি স্থানান্তর, সহযোগিতা, যৌথ উৎপাদন, গবেষণা ও উন্নয়ন। মিসাইল প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সম্প্রসারণ। সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে উপযোগী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণ। সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় যৌথ তৎপরতা ও সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি। যৌথ সামরিক মহড়া। বহুজাতিক কর্মসূচিতে সহযোগিতা বৃদ্ধি।
ইরানের বিরুদ্ধে ভারতকে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে ভারতকে দেখতে চায়। একইভাবে চীনের বিরুদ্ধেও দাঁড় করাতে চায় ভারতকে। ভারতকে তাই সামরিক আর অর্থনৈতিক সব দিক থেকে তার বলীয়ান করা দরকার। আবার প্রয়োজনে ভারতকে সামাল দেয়ার জন্য বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের ওপর নানাভাবে আসর করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। ভারত বিভাগের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের একটা অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পুরো অঞ্চলে সমাজতন্ত্রী আন্দোলনবিরোধী বূøহ রচনার জন্য পাকিস্তান, ইরান ও তুরস্ক ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অবলম্বন।
সৌদি আরবের সাথে ভারতের রয়েছে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক
২০০৫ সালের ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের যুক্তরাষ্ট্র্র সফরকালে বুশ-মনমোহন যুক্ত বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত যৌথ সামরিক অবস্থান পরিষ্কার হয়। তার পর ২০০৬ সালে ভারতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশের সফরের মধ্য দিয়ে তা পাকাপোক্ত হয়েছে। একই সময়ে ভারত মার্কিনমিত্র সৌদি আরবের সাথেও সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করে। ১৯৫৫ সালের পর প্রথম ২০০৬ সালেই সৌদি বাদশাহ ভারত সফর করেন। এ বছর ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি। দায়িত্ব নেয়ার পর বিদেশ সফরে প্রথম তিনি চীন ও পরে ভারত সফর করেন। সৌদি আরবের সাথে ভারতের অর্থনৈতিক যুক্ততা বহু পুরনো এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বাধিক। ভারত সৌদি আরবের তেল রফতানির চতুর্থ বৃহত্তম গন্তব্য। আর ভারতের আমদানির মধ্যে তেল আমদানিতে সৌদি আরব সর্ববৃহৎ উৎস।
এ দিকে সৌদি আরব চীনের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করার জন্যও নানারকম ব্যবস্থা নিচ্ছে। দ্রুত সম্প্রসারণশীল অর্থনীতির জন্য চীনে তেলের যে বর্ধিত চাহিদা তৈরি হচ্ছে তার জন্য চীন সৌদি আরব ও ইরানের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে উদ্যোগী। ইরানের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার ক্ষেত্রে ভারতের আগ্রহ বরাবরই দেখা গেছে।
শেষ কথা
মনমোহন সিংয়ের ওয়াশিংটন সফর নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরে ব্যবসায়িক স্বার্থ কিছুটা রয়েছে এটা ঠিক (১৯৯০ সালের পাঁচ মিলিয়ন ডলারের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৫০ মিলিয়নে উন্নীত হয়েছে ২০০৯ সালে), তবে মূল বিষয় হচ্ছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সামরিক ও রাজনৈতিক ঐক্য। এই ‘ঐক্য’ আগামীতে ‘নয়া বিশ্ব’ব্যবস্থায় একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই দু’দেশের মধ্যে বিকাশমান সম্পর্কের ব্যাপারে অনেকেরই আগ্রহ থাকবে আগামী দিনগুলোতে।
একনজরে
পারমাণবিক প্রোগ্রাম শুরু ১৯৬৭ সালে
পারমাণবিক বোমার প্রথম পরীক্ষা ১৯৭৪ সালের ১৮ মে
পারমাণবিক বোমার সর্বশেষ পরীক্ষা ১৩ মে ১৯৯৮
সবচেয়ে বড় পরীক্ষা ১৯৯৮ সালের ১১ মে
মোট পরীক্ষা ৬টি
মিসাইলের সর্বোচ্চ রেঞ্জ ২,৫০০ কিলোমিটার (অগ্নি-২)
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া
একনজরে ইন্ডিয়ান আর্মড ফোর্সেস
শাখাঃ ইন্ডিয়ান আর্মি, ইন্ডিয়ান নেভি, ইন্ডিয়ার এয়ার ফোর্স, ইন্ডিয়ান কোস্ট গার্ড, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ), ইন্দো-তিবেতান বোর্ডার ফোর্স
জনবল
মোট আর্মড ফোর্সেসঃ ২৪,১৪,৭০০ জন
অ্যাকটিভ ট্রুপসঃ ১৪,১৪,০০০ জন
মোট ট্রুপসঃ ৩৭,৭৩,৩০০ জন
প্যারামিলিটারিঃ ১০,৮৯,৭০০ জন
ফিট ফর মিলিটারি সার্ভিসঃ ২২০ মিলিয়ন
সমরশক্তি
স্থলবাহিনী
ব্যাটেল ট্যাঙ্কঃ ৩,৯৭৮
এলটি ট্যাঙ্কঃ ১,৮৯০
এপিসিঃ ৮১৭
সেলফ প্রপলড আর্টিলারিঃ ১৫০
টুয়ার্ড আর্টিলারিঃ ৫,৬২৫
এমবিআরএলএসঃ ১৮০
মর্টারঃ ৬,৭২০
লাইট এসএম লাঞ্চারঃ ২,৬২০
এ এ গানঃ ২,৩৩৯
বিমান বাহিনী
কমব্যাট এয়ারক্রাফটঃ ৮৫২
ফাইটার গ্রাউন্ড অ্যাটাকঃ ৩৮০
ফাইটারঃ ৩৮৬
পরিবহন বিমানঃ ২৮৮
ট্যাঙ্কার এয়ারক্রাফটঃ ৬
হেলিকপ্টারঃ ২৯৬
আর্মড হেলিকপ্টারঃ ৬০
নৌ বাহিনী
ক্যারিয়ারঃ ১
ডেস্ট্রয়ার মিসাইলঃ ৮
ফ্রিগেট মিসাইলঃ ৯
অন্যান্য ফ্রিগেটঃ ৮
করভেটসঃ ২৮
মিসাইলঃ ৮
টর্পেডোঃ ৬
ইনসোর রিভারইনঃ ১০
এসএসঃ ১৯
মাইন ভেসেলঃ ১৮
এমপিবিয়াস জাহাজঃ ৭
ল্যান্ডিং ক্রাফটঃ ১০
পাইপোর্ট শিপঃ ৩২
নৌ বিমানঃ ৭,০০০
নৌ ক্রাফটঃ ৩৪
এফজিএঃ ১৫
এমআর/এমপিএঃ ২০
আর্মড হেলিকপ্টারঃ ৩৪
এএসডব্লিউ হেলিকপ্টারঃ ১৭
এসএআর হেলিকপ্টারঃ ৬
অন্যান্য হেলিকপ্টারঃ ৫১
সূত্রঃ মিলিটারি ব্যালান্স ও উইকিপিডিয়া