somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামি ব্যাংক যে কায়দায় ইসলামি হয়েছে যৌনপল্লীকেও সে কায়দায় ইসলামি করা যায়।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলামি ব্যাংকের প্রতি আমার কোন বিদ্বেষ নেই। তারা ব্যবসা করতে চায় করবে। কিন্তু সমস্যাটা তখনি বাঁধে যখন তারা জনগনকে বুঝায় যে সাধারণ ব্যাংকে টাকা রাখা গুনাহর কাজ। এমনকি সাধারণ ব্যাংকে চাকরি করাও কবিরা গুনাহ। এ কারণে অনেক ব্যাংকারই নিদারূন মনোকষ্টে ভোগেন এবং উপায় না পেয়ে চাকরিও ছাড়তে পারেননা।

আমরা জানি যে ইসলামে সুদকে হারাম করা হয়েছে। কিন্তু কোরান হাদিস পড়লে বুঝা যায় সেটা ছিল আসলে গরিবের উপর আপতিত অতি উচ্চ দরের মহাজনি সুদ। আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুদের সাথে ইসলামের বিরোধ থাকার কোন যৌক্তিকতা নেই। তবুও সুদ হারাম এই যুক্তিতে কিছু ইসলামি বুদ্ধিজীবি ইসলামি ব্যাংকের আইডিয়া ফেঁদে বসেছে। মূলত ইসলামি ব্যাংক আর সাধারণ ব্যাংক এর মধ্যে কোন পার্থক্যই নেই, শুধু কাগজে কলমে একটু কারসাজি করে সুদকে মুনাফা আর ঋণকে ব্যবসা বলে এটাকে ইসলামি ব্যাংক বলে চালানো হয়। যেমন আপনি সাধারণ ব্যংকে ১০০ টাকা জমা রাখলে ১২.৫% সুদে বছর শেষে পাবেন ১১২.৫ টাকা। আর ইসলামি ব্যংকে ১০০ টাকা জমা রাখলে তারা ১০.৫% লাভের গ্যারান্টি দেবে, আর বলে দেবে ব্যাংকের লাভ হলে আপনি আরও বেশি পাবেন। বছর শেষে দেখা যায় ইসলামি ব্যংকের লাভ সাধারণ ব্যাংকের সুদের মত সেই ১২.৫% এর মতই থাকে। আবার ধরুন সাধারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে আপনাকে ১৫% সুদ দেয়া লাগে। ইসলামি ব্যাংক থেকে টাকা পেলেও আপনাকে সেই ১৫% ই লাভ দেয়া লাগবে তবে তারা এর মাঝে শুধু একটু কায়দা করবে। সেটা হল আপনি যদি ১ লক্ষ টাকা দিয়ে ১ টি বাইক কিনতে চান তাহলে আপনাকে ইসলামি ব্যাংকের মালিকানায় ইসলামি ব্যাংকের টাকায় বাইকটি কিনতে হবে। পরে ১৫% লাভ হিসেবে কিস্তিতে ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে বাইকটির মালিকানা আপনি নিজের নামে করে নিতে পারবেন। তাই বুঝতেই পারছেন যে প্র্যাক্টিক্যালি সাধারণ ব্যাংক আর ইসলামি ব্যাংকের মাঝে কোন পার্থক্য নেই।

ইসলামি ব্যাংকের কায়দা কাজে লাগিয়ে একটি যৌনপল্লীকেও ইসলামি যৌনপল্লী হিসেবে ঘোষনা দেয়া যায়। ইসলামে দাসীর সাথে সঙ্গম করা বৈধ। বাংলাদেশের যৌনপল্লীগুলোতে যৌনকর্মীরা দাসীর মতই অন্যের মালিকানায় থাকে। তাই কোন মুসলিম চাইলে সেখানে গিয়ে দাসী কিনে আমোদ করার কিছুক্ষণ পর কিছুটা কমদামে দাসীর আগের মালিকের কাছে বিক্রি করে দিতে পারে। কতক্ষণের জন্য দাসী কিনবে, কত দামে কিনবে আর কত দামে বিক্রি করবে সেই চুক্তিটা ইসলামী ব্যাংকের টেকনিক্যাল চুক্তির মত আগে থেকেই ঠিক করে নিতে হবে আরকি।

এক্ষেত্রে আপনার মনে অনেকগুলো প্রশ্ন চলে আসাটা স্বাভাবিক, তাই সম্ভাব্য প্রশ্নগুলো পয়েন্ট করে দিয়ে সেগুলোর জবাবও এখনই দিয়ে দেয়া যায়।

১) ইসলামে তো দাসীকে বেশ্যালয়ে পাঠিয়ে উপার্জন করতে নিষেধ করা আছে।
উত্তরঃ কাগজে কলমেতো দাসীকে বেশ্যালয়ে পাঠানো হচ্ছেনা, বরং দাসী কেনাবেচা করে ব্যবসা করা হচ্ছে যা ইসলামিক ভাবে বৈধ। আর দাসীর মালিক দাসীর সাথে চাইলেই সঙ্গম করতে পারে।

২) এখনতো দাস প্রথা নাই তাই যৌনপল্লীর মেয়েরা কোনভাবেই দাসী নয় বরং কর্মী। দাসী না হলে এটা ইসলামিকও নয়।
উত্তরঃ প্রাচীনকাল থেকেই দাসের পরিচয়, সুযোগ সুবিধা, অধিকার, দাস সম্পর্কিত নিয়ম নীতি ইত্যাদি একেক সমাজে একেক রকম ছিল। সরকারী ভাবে বর্তমানে সারাবিশ্বে দাসপ্রথা নিষিদ্ধ হলেও বেআইনি ভাবে মডার্ণ স্লেভারি নামে দাসপ্রথা আজও চালু আছে। বিশ্বব্যাপি প্রায় ৩ কোটি লোক এখন আধুনিক দাসত্বের স্বীকার। গ্লোবাল স্লেভারি ইনডেক্সে এসম্পর্কে প্র্যাক্টিক্যাল তথ্য উপাত্ত পাওয়া যাবে। ভিজিট করুন Click This Link

৩) সরকারী ভাবে দাসপ্রথা অবৈধ তাই বর্তমানে মডার্ণ স্লেভারির অস্তিত্ব থাকলেও একটি অবৈধ ব্যাপার ইসলামে বৈধ হতে পারেনা।
উত্তরঃ সরকারী ভাবে অনেক দেশে একাধিক বিয়ে করা অবৈধ তাই বলে কি ইসলামে চার বিয়ে করা অবৈধ হয়ে যাবে? আবার অনেক দেশে মদ কেনা বেচা বৈধ বলে কি ইসলামেও তা বৈধ হয়ে যাবে? ইসলামে দাসপ্রথা বৈধ এটাই সবচেয়ে বড় কথা নয় কি?

৪) সমস্ত আলেমগণ ইজমা বা ঐক্যমতের ভিত্তিতে দাসপ্রথা অবৈধ ঘোষণা করতে পারে।
উত্তরঃ তাহলে সমস্ত আলেমগণের জন্য ইজমার মাধ্যমে সুদি ব্যাংকিং সিস্টেমকে বৈধ ঘোষনা করতে অসুবিধা রইল কোথায়?

আমার পোস্টের মূল উদ্দেশ্য যৌনপল্লীকে হালাল প্রমাণ করা নয়, আমাদের কমন সেন্সই বলে এটা কোনভাবেই হালাল হতে পারেনা। এনালজি করে আমি শুধু এটাই বুঝাতে চাইলাম যে আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে কেউ যেন হারাম না ভাবে আর আলেমগণ যাতে সত্বর এব্যাপারে একটি ঐক্যমত্যে পৌঁছায়। ইসলামি ব্যংকের আইডিয়াটিই আলেমদের ঐক্যমতে পৌঁছানোর সবচেয়ে বড় বাঁধা।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:৩০
৪৭টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×