কেন আমি থেকেছি নীরব, এতো-এতো দিন সবার চোখের সামনে
যুদ্ধের খেলায় তারা যা করেছে, সবই দেখেশুনে
কেন আমি থেকেছি নীরব; অবশেষে আমাদের মধ্যে যারা
বেঁচে যাবো বড়জোর তারা সবে পাদটীকা হবো?
এ হলো কথিত সেই প্রথমে-আঘাত-হানার অধিকার
সে আঘাত মিসমার করে দেবে ইরানি জাতিকে,
তাদের দমিয়ে রাখছে এক বড়গলাবাজ;
আর তারা নিয়মিত সাজানো র্যালিতে গিয়ে জমায়েত হয়,
ক্ষমতা-বলয়ে তার হয়তোবা পয়দা হচ্ছে একখানা পরমাণু বোমা,
সেই অপরাধে তারা মারা পড়বে অঘোরে-বেঘারে।
তবুও এখনও সেই দেশটির নাম মুখে নিতে
কেন আমি এতো দ্বিধা করি, যে দেশ
অনেক বছর ধরে--যদিও গোপনে--পরমাণু শক্তিধর হলো দিনে দিনে,
তার জন্য নয় কোনো তদারকি, ভেরিফিকেশন,
পরিদর্শন-টর্শন সবই তার জন্য হয়ে যাবে মাফ?
এসবের প্রতি এই--এহেন নিখিল নিরবতা,
এসবের মুখোমুখি হেঁট-মাথা আমার নিজেরই নিরবতা,
এ-নিরবতাকে আমার এক পীড়াদায়ী ডাহা মিথ্যা বলে মনে হয়,
এর বিরোধিতা যেই না করেছি আর সে আমাকে
বাধ্য করে সম্ভাব্য সাজা মেনে নিতে:
কী অবলীলায় ‘‘ইহুদি-বিদ্বেষ’’-- এই রায় নেমে আসে।
কিন্তু এখন আমার নিজের দেশ, তার
নিজেরই কৃত অপরাধ বিষয়ে তাকে
কাঠগড়ায় তোলা হলো কতো কতো বার,
লেখাজোখা নাই কতো প্রশ্নবাণে জর্জরিত সে-- সেসবের জুড়ি মেলা ভার,
সে হলো নাটের গুরু; তাকে দিয়ে সবকিছু শুরু,
(এই নিয়ে বেশুমার জমেছে বেসাতি ,
যদিওবা অনায়াসে তারা এর নাম দিল নিজ দেশে প্রতি-আবাসন)
আরো একটা ডুবোতরী রণসাজে সাজানো হয়েছে--আর সেটি
পরমাণু বোমা-পেটে ইসরায়েলে যাবে,
সেখানে যে পরমাণু বোমাটোমা বলে কিছু আছে
আজও তার মেলেনি প্রমাণ, এই নিয়ে আতঙ্কটা শুধু এর
একক প্রমাণ, যে কথা বলতে হবে আমি তা বলবোই।
কিন্তু আমি কেন আজও চুপটি মেরে আছি?
যেহেতু আমার আদি পরিচয় নিয়ে আমি ভাবিত ছিলাম,
কখনো-যাবে-না-মোছা কলঙ্কের কালি এক লেগে আছে তার সারা গায়,
এর মানে, যে-দেশের সঙ্গে আছি, আর চিরকাল থাকবো জড়িয়ে ওতপ্রোত,
ইসরায়েল নামের দেশটা এই সত্য ঘোষণাটুকু তবে মেনে নিক--
আমি এটা চাইতেও পারবো না তবে?
কেবল এখন কেন তবে, এ বুড়ো বয়সে এসে, আর
যতটুকু কালি আজো অবশিষ্ট রয়েছে এ কলমে আমার--তা দিয়েই বলে যাবো আমি:
ইসরায়েলের আণব মর্দ্দামি
পৃথিবীর ইতিমধ্যে ভঙ্গুর-নাজুক শান্তিকে করেছে অসহায়।
যেকথা বলতে হবে আলবৎ--অতি-অবশ্যই,
কাল যদি বলি তবে বড় বেশি দেরি হয়ে যাবে;
আর সে কারণে---জার্মান হিসেবে আমরা টেনে গেছি ঢের ভারী বোঝা--
কোনো একটা অপরাধ--হয়তো আমরা এর মশলাপাতি দিচ্ছি যোগান
এ-মুহূর্তে এটা পরিষ্কার; গৎবাঁধা খোঁড়া যুক্তি আমাদের
শত অপরাধ ঢাকতে পারবে না।
আর এটা অনিবার্য: নীরবতা---আমি একে ভেঙ্গেছি, করেছি খানখান,
পশ্চিমের ভণ্ডামিতে ঘেন্না ধরে গিয়েছে আমার!
আর আমি আশা করি, নিজেদের নিরবতা থেকে
মুক্ত হবে আরো অনেকেই; এই দাবিতে উনারাও হবেন সোচ্চার
তাদেরই বিরুদ্ধে যারা আমাদের জন্য আনলো হাঁ-খোলা বিপদ ;
তাদের ছাড়তে হবে এইসব গুণ্ডামি-মস্তানি--- এটুকুই আমাদের দাবি;
আমরা আপসহীন,হয়তোবা তুলবো আওয়াজ।
ইসরায়েল-ইরানের এ-দুই সরকার,
উভয়ের পরমাণু সক্ষমতা, সম্ভাব্য ক্ষমতা বিষয়ে
আন্তর্জাতিক তদন্ত যেন তারা হতে দ্যায়; সেই সে তদন্ত হবে উন্মুক্ত অবাধ।
এর চেয়ে ন্যায্য আর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন উভয়ের জন্য সমান
সহায়ক পদক্ষেপ কীইবা আর হতে পারে তবে?
অলীক বিভ্রমে ঢাকা এতদঅঞ্চলে
পরস্পর দুষমন হয়ে যারা পাশাপাশি বসবাস করে
এই রফা তাদের সবার জন্যে, আর
শেষমেষ আমাদের সকলের জন্যে সেটি অনুকূলই হবে।
মূল জার্মান থেকে Breon Mitchell-এর করা ইংরেজি অনুবাদ ‘‘What Must Be Said’’-এর বাংলা ভাষান্তর]----অনুবাদ.. জুয়েল মাজহার
মানুষকে সত্য কথা একদিন না একদিন বলতেই হবে! আমরা বাঙ্গালীরাও চাই এই ভুখন্ডের সবাই সত্য কথা বলুক। মিথ্যার বেশাতি থেকে বেড়িয়ে আসুক সবাই! বাংলার রাজনীতি, কোর্ট-কাচারী যেখানেই তাকাই, সব জায়গায়ই মিথ্যা কথা বলার একটা প্রবনতা চালু হয়ে গেছে। আমরা নতুন প্রজন্ম এই মিথ্যার বেশাতি থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে চাই। চাই এরকম সাহসী এক গুন্টার গ্রাসের................
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:২৮