somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনুগল্প - আদি’র ডায়েরী’র পাতা থেকে -

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আদি’র ডায়েরী’র পাতা থেকে -

সকাল থেকেই এক অজানা অস্থিরতায় সময় কাটছে। কি করব বুঝে উঠতে পারছিনা। ঠিক মনে পড়ে না অনিকে’র সাথে কতটা দিন কথা হয় না। আচ্ছা তার’ও কি এমন ভাবনা হচ্ছে? নাহ্ মনে হয় না। যদি এমন সে ভাবত তাহলে অবশ্যই একবার না হোক টেলিফোন করে খবর নিত। কত চেষ্টা করি আমিও অনিকে’র মত হতে, কিন্তু পারছি কই। কত অপমান করি, কত অবহেলা করি - তার কিছুই দেখা যায় না তার মুখে।

সব সময় একজন মানুষ কি করে পারে হাসি মাঁখানো চেহারা নিয়ে থাকতে! এই ব্যাপারটা প্রায় আমাকে ভাবিয়ে তুলে। সময়টা ঠিক মনে পড়ছে না, হয়ত হেমন্তে’র শুরু’র দিকে হবে। খুব ভোরে হালকা হালকা কুয়াশা’র দেখা মিলত বা পথে’র ধারে ঘাস ভিজে থাকতো এমন। সময় জ্ঞান বলে কিছু তার ছিল না যা এখনও নাই। অবশ্য একটা ব্যাপার ছিল লক্ষ্যণীয় যে, যত রাত করে’ই সে ঘুমাক সাত-সকালে হাটা’র জন্যে বের হবে’ই। তাই ভাবলাম আমিও হঠাৎ একদিন বের হবো তার পথ আগলে ধরব কিছু পথ সাথে থাকার জন্যে। তো যেই ভাবা সেই কাজ। সকালে’র আবহাওয়াটা’ই কেমন জানি খুব হালকা হালকা মনে হয় নিজেকে।

রবিঠাকুরের লেখা’টা মনে পড়ছে -

”দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা, দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু-
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে দু’পা ফেলিয়া,
একটি ধানে’র শীষে’র উপর একটি শিশির বিন্দু।”

অনিক’কে আসতে দেখে একটু ভাব ধরার চেষ্টা করলাম এমন যে আমি মহা বিরক্ত যে কোন কারণে। তা এজন্যে আমার যে কোন সম্স্যা’র সমাধান সে যে করে’ই হোক করে দেয়। অনিক এসে পাশে’ই দাড়ালো -
কি রে এই সাত-সকালে মুখ ভোঁতা করে রাস্তায় দাড়িয়ে আছিস কেন?
তোমার সমস্যা কি আমি মুখ ভোঁতা করি না ধারালো করি? যে কাজে যাচ্ছিলে যাও। কানে’র কাছে ঘ্যাঁন ঘ্যাঁন করবানা।
হুম। চল একসাথে যাই।
নাহ্ তোমার সাথে মরা’র ইচ্ছে আমার নাই, যাও তো।
না হয় নাই’ই মরলি বাঁচতে তো দোষে’র কিছু নাই। চল্
ওরে বাবাহ্ ব্যাপার কি বলো তো সকাল সকাল এত্ত রোমান্স মনে’র মধ্যে?
ব্যাপার কিছু না, সহজ সমীকরণ সব।
সত্যি করে বলো তো দেখি -
আচ্ছা বলছি, চল্ হাটতে হাটতে বলি। (আমি ইচ্ছে করে’ই অনিকে’র হাত জড়িয়ে ধরে পথ চললাম। আঁড়চোখে সে একবার দেখল কিন্তু কিছু বলল না।) আমার কেন জানি মনে হয় এমন সকাল তুই কখনও দেখিসনি। মানে তোর ঘুমে’র মধ্যে’ই সকাল’টা আর সকাল থাকে না।
দুনিয়াতে মনে হয় তুমি একজন’ই সকাল সকাল উঠ্ সকাল দেখার জন্যে? এত্ত ভাব মারো কেন?
সত্যি কি মাঝে মাঝে খুব ভাবতে ইচ্ছে করে, তবে পুরোপুরি কিছুই হয় না। যেমন ধর ’সুন্দর সুর্যোদয় মানে এই নয় সারাদিন আকাশে মেঘের মিলন ঘটবে না।’
দিন দিন তোমার মাথা যাচ্ছে। না জানি কোন দিন শুনবো কোন পুরান পাগলা গারদে তোমার স্থায়ী নিবাস।
জীবন চক্রটাই হলো ম্যাজিক। কখন কি হয় বা হবে কারোর’ই বলার বা বুঝার সাধ্য নাই।
চুপ, একদম চুপ। চান্স পেলে’ই বকবকানি শুরু। হুম, কি যেন বলতে বলেছি তা’র উত্তর দেও।
ও হ্যাঁ। ক’দিন আগে সিফাত একটা কবিতা লিখেছিল। জানি না কার জন্যে, তবে আমায় দিল দেখার জন্যে। এতবার পড়েছি তুই চাইলে তোকে শুনাতে পারি।
এখন আমার কি মনে হচ্ছে জানো? জীবনে যদি মস্ত কোন ভূল আমি করে থাকি তা হলো আজ তোমার সাথে এসে। শুনাও শুনি তোমার সিফাত কি বলতে চায় -

আমি তোমায় অনেক ঘৃণা করি, কেন জানো?
কারণ তোমায় ভুলতে পারিনা বলে।
খুব ঘৃণা করি তোমায় -
অনেক ভালবাসি বলে।
দগ্ধ যন্ত্রণার সামিল করা শব্দে বলি তোমায়
তোমায় নিজ থেকে দূরে রাখতে।
কখনও কখনও বাঁধ ভেঙ্গে যায় -
সেই প্লাবণে ঢেলে দেই অজস্র ঘৃণা,
যাতে সহজ করে তুমি বুঝতে পারো ভুল।
এড়িয়ে চলি পথ, দু’পায়ে মাড়িয়ে তোমার সকল স্মৃতি -
ত্রিশুলে’র তিক্ষণতায় মনে হয় পাঁজড় ভেদ করে কষ্ট।
কখনও নিজে একা হাসি -
কত ভাঙ্গছি আর গড়ছি জোড়াতালি’র সময়।
দীর্ঘ হাহাকার মনের অনিচ্ছায় ধাবিত হই্
ভেবে নিই তোমায় একটা জীবন ঘৃণা দিব,
বিকলাঙ্গ ঘৃণা আমার নিবৃত হয়ে পড়ে ভাল লাগায়।
তারপরও তোমায় অনেক ঘৃণা করি কারণ -
তোমায় অনেক ভালবাসি বলে।

আচ্ছা সত্যি একটা কথা বলবা?
জিজ্ঞেস কর।
তুমি কি তাঁকে অনেক ভালবাসো? - (চুপচাপ পথ চলতে থাকলাম। অনিক হাসছে, কিছুই বলেনি।)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:০৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×