অনেকের হয়ত চোখে পরে নি আজকে ডেইলি স্টার ক্যাম্পাসের একটি আর্টিকেলে বাংলা ব্লগকে উদীয়মান মিডিয়া বলে আখ্যা দিয়েছে । 'বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ' এই রিপোর্টে ভাল ভাবেই উপস্থাপিত হয়েছে এবং ব্লগ যে ঐতিহ্যবাহী মিডিয়ার বিকল্প নয় বরং সহায়ক তা উল্লেখ করা হয়েছে। এই ব্লগে প্রতি ছয় মিনিটে একটি নতুন পোস্ট এবং প্রতি ২০ সেকেন্ডে একটি কমেন্ট দেয়া হয় কাজেই এর জনপ্রিয়তা ও শক্তি নিয়ে কারও প্রশ্ন থাকার কথা নয়।
এখন এই শক্তির কিভাবে সুব্যবহার করা যায়? আমরা ইতোমধ্যে ব্লগে বেশ কিছু মানবিক সাহায্যের প্রয়াস দেখেছি যা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে বেশীরভাগ মানুষই সমাজে ভাল কিছু অবদান রাখতে দ্বিধা করে না। দরকার শুধু তাদের কাছে বিষয়টুকু তুলে ধরা ও সেই প্রক্রিয়াটাকে চালু করে দেয়া ও তার সুব্যবস্থাপনা। আমরা দেখেছি শুধু সাহায্য সংগ্রহ করাই নয় পাহাড় ধসের পর ব্লগাররা চট্টগ্রামে গিয়ে নিজের শ্রমও দিয়ে এসেছেন।
এগুলো তো অব্যাহত থাকবেই আমি সেটাই আশা করি। এছাড়াও বিশ্বব্যাপী ব্লগ কেমনভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তা জানলে হয়ত আরও কিছু ভাবনার খোরাক পাবেন 'বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ' কমিউনিটি।
১) উশাহিদি: ২০০৬ সালের শেষের দিকে কেনিয়াতে প্রচার মাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার পর মোবাইল ফোনে পাঠানো সংবাদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ২০০৭ সালের শুরুতে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা কভার করার জন্যে মোবাইল ফোনের এস এম এসের মাধ্যমে প্রাপ্ত সংবাদ ইন্টারএক্টিভ ওয়েবসাইট বা ব্লগ ব্যবহার করে উশাহিদি বিশ্বকে সংঘাতের সঠিক চিত্র জানাতে সক্ষম হয়। বিস্তারিত এখানে। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে এরকম মোবাইল ফোন ও ব্লগের সমন্বয়ে উদ্যোগ নিতে পারে ব্লগাররা।
২) সানলাইট ফাউন্ডেশন : আমেরিকান কংগ্রেসের দুর্নীতি উন্মোচন করতে একটি উদ্যোগ হচ্ছে সানলাইট ফাউন্ডেশন । এটি কাজ করেছে শতাধিক ব্লগারের সহায়তায় যারা নিজেরা মাঠ পর্যায়ে তদন্ত কংগ্রেসম্যানদের দুর্নীতি উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দুর্নীতি বা অন্য কোন অপরাধের বিরুদ্ধে সমষ্টিগতভাবে যে যার মত সহায়তা করে ব্লগাররা কার্যকরী অনেক কিছুই করতে পারে।
৩) উন্নত বিশ্বের এনজিওদের জন্যে তো ব্লগ এবং সোশ্যাল মিডিয়া একটি গুরুত্বপূর্ন টুল । অবকাঠামোর অভাব এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা কম বলে বাংলাদেশে এ সংস্কৃতি এখনও গেড়ে বসেনি। অথচ ফান্ড রেইজিং এর মত অনেক কাজ কিন্তু এর সাহয্যে সহজেই করা সম্ভব।
চিন্তা করে দেখেন যখন বাংলাদেশের এনজিওদের জন্যে ব্লগিং এবং সোশাল মিডিয়া টুলগুলোর প্রয়োগ অবশ্য পালনীয় হয়ে যাবে তখন তাদের প্রচুর পরিমানে ব্লগিংএ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোক দরকার হবে এবং এই উদীয়মান ব্লগাররাই সেই চাহিদা পূরণ করবে।
৪) ফেসবুকের জনপ্রিয়তা: প্রায় লাখেরও বেশী বাংলাদেশী ফেসবুকের সদস্য। আপনার ব্লগের লেখা বা অন্য কোন ভাল লেখা সম্পর্কে অন্যকে জানাতে চান? ফেসবুক ব্যবহার করেন।
৫) আরএসএস ফিড ব্যবহার করুন: আপনি এত পোস্টের ভীড়ে ভাল লেখা খুঁজে পাচ্ছেন না? সামহোয়ারইন আরএসএস ফিড সাপোর্ট করে। আপনার পছন্দের ব্লগগুলো যখনই নতুন পোস্ট করবে তখন তা আরএসএস ফিড রিডারে চলে আসবে। আপনার বার বার তাদের পেজে গিয়ে দেখতে হবে না যে তারা নতুন কিছু লিখেছে কি না।